
ছবিঃ সংগৃহীত
৩১ বছর বয়সী জর্জিনা বেইলি ছিলেন ১১৪ কেজি ওজনের এবং ২০ সাইজের পোশাক পরতেন। একসময় এক কিলোমিটারও দৌড়াতে পারতেন না। তবে মাত্র ১৮ মাসেই তিনি নিজেকে বদলে ফেলেছেন। এখন তিনি ৬৯ কেজি ওজনের একজন ম্যারাথন রানার এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের এক অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ। তার এই রূপান্তরের পেছনে কোনো জাদুকরী ডায়েট বা শর্টকাট ছিল না—ছিল ধৈর্য, সচেতনতা আর কিছু কার্যকর অভ্যাস।
জর্জিনার মতে, ওজন কমানো মানে নিজেকে না খাওয়ানো নয়, বরং বুদ্ধিমানের মতো খাবারের পছন্দ করা। নিচে তার চারটি প্রমাণিত ও প্রাকৃতিক টিপস তুলে ধরা হলো—
১. ক্ষুধা নয়, প্রোটিন হোক সঙ্গী
ওজন কমাতে অনেকেই মনে করেন কম খেতে হবে। কিন্তু জর্জিনা দেখিয়েছেন, কী খাচ্ছেন সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উচ্চ চর্বিযুক্ত প্রোটিন বাদ দিয়ে বেছে নিয়েছেন লিন প্রোটিন যেমন—চিকেন ব্রেস্ট, সাদা মাছ ও চিংড়ি।
এ ধরনের প্রোটিন খাবার একদিকে যেমন পেট ভরিয়ে রাখে, তেমনি ক্যালোরিও থাকে কম। ফলে যারা বেশি খেতে চান (‘ভলিউম ইটিং’), তাদের জন্য এটা আদর্শ।
২. সাধারণ, সহজ ও উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার বেছে নিন
জর্জিনার মতে, স্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য দামী সুপারফুড বা প্রোটিন পাউডার দরকার নেই। তিনি নিয়মিত শেয়ার করেন তার প্রিয় “ইজি প্রন ফ্রাইড রাইস” রেসিপি, যা মাত্র ৫১২ ক্যালোরিতে দেয় ২৮ গ্রাম প্রোটিন।
এই খাবারে থাকে সহজলভ্য উপাদান—চাল, মটর, চিংড়ি, সয়া সস ও মিসো পেস্ট। রান্না হয় মাত্র ১০ মিনিটে। প্রোটিনযুক্ত খাবার শুধু স্বাস্থ্যকর নয়, সুস্বাদুও হতে পারে।
৩. নিয়মিততা থাকুক, তীব্রতা নয়
ওজন কমানোর শুরুতে জর্জিনা এক কিলোমিটারও দৌড়াতে পারতেন না। কিন্তু ধীরে ধীরে ও নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি এখন পূর্ণ ম্যারাথন দৌড়ান।
তার ভাষায়, "প্রগতি আসে ধৈর্য ও ধারাবাহিকতা থেকে, না যে কত কঠিন ব্যায়াম করছি।" তাই প্রতিদিন অল্প করে হলেও শরীরচর্চা করুন, সেটাই দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল আনবে।
৪. শুধু ফলাফল নয়, উপভোগ করুন পুরো প্রক্রিয়াটি
সবচেয়ে বড় কথা, জর্জিনা ওজন কমিয়ে শুধু নিজেকে বদলাননি, বদলে ফেলেছেন তার মানসিকতাও। তিনি এখন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনকে ভালোবাসেন।
তিনি বলেন, “আমি কোনো লক্ষ্যকে ধরার পেছনে ছোটেনি, বরং প্রতিদিনের পথচলাতেই আনন্দ খুঁজে পেয়েছি।”
ওজন কমানো মানে নিজেকে শাস্তি দেওয়া নয়, বরং এমন অভ্যাস গড়ে তোলা যা আপনি দীর্ঘদিন উপভোগ করতে পারেন।
উপসংহার
জর্জিনার গল্প আমাদের শেখায়, ওজন কমানোর জন্য দরকার সচেতনতা, ধৈর্য ও নিজের প্রতি বিশ্বাস। কৌশলগুলো সহজ, প্রাকৃতিক এবং বাস্তব জীবনে অনুসরণযোগ্য। যারা দ্রুত ও টেকসইভাবে ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এই অভ্যাসগুলো হতে পারে এক অনন্য পথনির্দেশ।
ইমরান