ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রন্টেক্সের প্রতিবেদন

সমুদ্রপথে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুর শীর্ষে বাংলাদেশিরা

কূটনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১৭, ১৫ জুলাই ২০২৫

সমুদ্রপথে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুর শীর্ষে বাংলাদেশিরা

.

সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার সময় গত ছয় মাসে ৭৬০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তার মধ্যে  বাংলাদেশির সংখ্যাই বেশি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রন্টেক্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য  উঠে এসেছে। এ ছাড়াও সংস্থাটির দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, জীবন ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যাই বেশি।
সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের জন্য সবচেয়ে ব্যস্ত ও বিপজ্জনক পথ হিসেবে আবারও সামনে এসেছে সেন্ট্রাল মেডিটারিনিয়ান রুটের নাম। বর্তমান সময়েও এই রুটে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী লিবিয়া হয়ে ইতালি ঢুকছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের  প্রথম ছয় মাসে এই রুটে অভিবাসী  প্রবেশের হার ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ হাজার ৩০০-এ দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি পৌঁছেছেন  প্রায় ২০ হাজার ৮০০ জন, যা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।
সংস্থাটি জানায়, লিবিয়া থেকে ইউরোপে অবৈধভাবে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের বড় অংশই বাংলাদেশি নাগরিক। এরপর রয়েছে মিসরীয় ও আফগানরা। এই বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন, আবার অনেকে পাচারকারী চক্রের ফাঁদে পড়ছেন।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের  প্রথম ছয় মাসে ইউরোপে মোট অনিয়মিত অভিবাসনের সংখ্যা ২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৯০০ জনে।
ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় ও পশ্চিম আফ্রিকান রুটে উল্লেখযোগ্য হারে অভিবাসন কমেছে। পশ্চিম বলকান রুটে ৫৩ শতাংশ, পূর্ব সীমান্তে ৫০ শতাংশ এবং পশ্চিম আফ্রিকান  রুটে ৪১ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে ইউরোপে অনিয়মিত ও অবৈধ প্রবেশকারীদের ৩৯ শতাংশই এই রুট ব্যবহার করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুটে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। লিবিয়া থেকে গ্রিসের ক্রিট দ্বীপমুখী একটি নতুন করিডর গড়ে উঠেছে, যা এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। পাচারকারী নেটওয়ার্কগুলো নজরদারি কম থাকায় আগের রুট বাদ দিয়ে নতুন এই পথ বেছে নিচ্ছে। পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটেও অবৈধ অভিবাসনের  প্রবণতা বেড়েছে।
এই রুটে অভিবাসন ১৯ শতাংশ বেড়েছে এবং শুধু জুন মাসেই অবৈধ প্রবেশ দ্বিগুণ হয়েছে। আলজিরিয়া থেকে এই পথে যাত্রার হার ৮০ শতাংশ বেড়েছে। সোমালিয়া ও আফ্রিকার অভিবাসীরা এ রুটটি ব্যবহার করে। ফ্রন্টেক্স একে পাচারকারীদের নতুন কৌশল বলেছে।
যুক্তরাজ্যে প্রবেশের জন্য ইংলিশ চ্যানেল রুট ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসনের চেষ্টাও বেড়েছে ২৩ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে গত মাস পর্যন্ত এ পথে ৩৩ হাজার ২০০ জন ইংল্যান্ডে  প্রবেশের চেষ্টা করেছে। তারা মূলত ফ্রান্স হয়ে এ রুটে যাত্রা করে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক ট্র্যাজেডি কমেনি।

প্যানেল

×