
ছবিঃ সংগৃহীত
আগে যেখানে কোলন ক্যানসার ছিল মূলত বয়স্কদের রোগ, সেখানে এখন এটি বাড়ছে তরুণদের মধ্যেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৯০ সালে জন্ম নেওয়া মিলেনিয়ালদের কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১৯৫০ সালে জন্ম নেওয়াদের তুলনায় দ্বিগুণ। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ড. জোসেফ সালহাব সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কিছু সাধারণ মনে হলেও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে।
তরুণদের মধ্যেই কেন বাড়ছে ক্যানসার?
এক গবেষণা (BJS Journal) অনুযায়ী, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি বাড়লেও, বর্তমানে তরুণদের মধ্যেই কোলন ক্যানসারের হার ক্রমবর্ধমান। বিশেষ করে জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা ও জেনেটিক কারণ এর জন্য দায়ী হতে পারে। গবেষণার প্রধান লেখক সারা চার বলেন, “৫০ বছরের নিচের বয়সীদের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যানসারের হার বৈশ্বিকভাবে বাড়ছে। এর জন্য কার্যকর স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা কৌশল আবিষ্কারে গবেষণা চলছে।”
ড. সালহাবের মতে ৫টি প্রধান সতর্কবার্তা:
১. রেকটাল ব্লিডিং (মলদ্বার থেকে রক্তপাত)
টয়লেট পেপারে বা মলের সঙ্গে যদি রক্ত দেখা যায়, তবে এটি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এটি উজ্জ্বল লাল বা গাঢ় রঙের হতে পারে। যদিও এটি পাইলসের মতো সাধারণ কারণে হতে পারে, তবে বারবার বা স্থায়ী হলে জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
২. অজানা পেটব্যথা
যে পেটব্যথার কোনো স্পষ্ট কারণ নেই এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব ব্যথা দেয়—এটি হতে পারে ক্যানসারের গোপন ইঙ্গিত। পেটের ক্র্যাম্পিং বা ফুলে যাওয়ার মতো অসস্তির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
৩. দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ক্লান্তি
যদি পর্যাপ্ত ঘুমের পরও আপনি সবসময় দুর্বল বা ক্লান্ত অনুভব করেন, তবে এটি ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। অনেক তরুণই এটি স্ট্রেস বা ঘুমের ঘাটতির কারণে ভেবে উপেক্ষা করেন, যা দেরিতে রোগ ধরা পড়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
৪. পায়খানার অভ্যাসে পরিবর্তন
পায়খানার ধরণ ও নিয়মে পরিবর্তনও হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। কয়েক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানার ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৫. অন্যান্য লক্ষণ
ড. সালহাব আরও বলেন, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খিদে না পাওয়া, রাতে ঘাম হওয়া বা বারবার হালকা জ্বর হওয়া কোলন ক্যানসারের আরও কিছু প্রাথমিক উপসর্গ। এগুলো অন্য রোগের কারণেও হতে পারে, তবে একাধিক লক্ষণ একসাথে থাকলে অবহেলা করা উচিত নয়।
সতর্ক থাকুন!
যত দ্রুত রোগ ধরা পড়ে, তত দ্রুত ও কার্যকরভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তাই উপসর্গগুলো থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
স্বাস্থ্য সচেতন থাকুন, জীবন বাঁচান।
ইমরান