
ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ভালুকায় ঘটেছে এক মর্মান্তিক পারিবারিক হত্যাকাণ্ড। রাতভর নাইট ডিউটি শেষে সকালে বাসায় ফিরে এসে স্ত্রী ও দুই সন্তানের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান গার্মেন্টসকর্মী রফিকুল ইসলাম। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া ও তীব্র আতঙ্ক।
ঘটনাটি ঘটে ভালুকা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টিএনটি রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। নিহতরা হলেন রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ময়না আক্তার (৩০), মেয়ে রাইসা আক্তার (৪) এবং ছেলে নীরব মিয়া (২)।
রফিকুল নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চেলেরঘাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি ভালুকার স্থানীয় রাসেল স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন এবং পরিবারসহ ভালুকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রফিকুল ইসলাম জানান, কাজ শেষে সকালে বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের দরজায় তালা। তালা ভেঙে ঘরে ঢুকেই বিছানায় স্ত্রী ও দুই সন্তানের নিথর দেহ দেখতে পান তিনি। চিৎকার করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি, “আমার বাচ্চাগুলারে কেমন করে মারছে! গলার ক্ষত দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, ওদের একেকটা গলা কাটা হয়েছে।”
স্থানীয়রা জানান, রফিকুলের স্ত্রী ও তার দেবর নজরুল ইসলাম একই বাসায় পাশাপাশি কক্ষে ভাড়া থাকতেন। ঘটনার পর থেকে নজরুল ইসলামের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ জানিয়েছে, তার ঘর তল্লাশি করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় এক প্রতিবেশী জানান, “ঘটনার সময় আমি ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। খবর পাই, আমার বোন আর ভাগনিদের জবাই করে ফেলা হয়েছে। জামাইয়ের সঙ্গে কখনো কোনো ঝগড়া হয়নি। সবাই বলতো, তারা খুব ভালো থাকতো।”
নিহত ময়না আক্তারের ভাই বলেন, “আমার বোন সবসময় খুব সুখে সংসার করতো। কোনো ঝামেলা ছিল না। আমার বোন আর ভাগনিদের যারা মেরেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই।”
ভালুকা থানার পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নজরুল ইসলাম নিখোঁজ। তাকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে খুঁজছে পুলিশ। হত্যার কারণ সম্পর্কে তারা ধারণা করছেন, এটি পারিবারিক বিরোধ থেকে ঘটতে পারে। পুলিশের ভাষ্য, “ধরেই নিচ্ছি, যেহেতু তারা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, হয়তো পারিবারিক কোনো বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য বের করে দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে বলছেন, একই ভবনে থাকা আত্মীয়ের হাতে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা ভাবতেও পারছেন না তারা।
সূত্র:https://youtu.be/ue66DdhY_Fg?si=dqR0RwSdZ1ITuC97
ছামিয়া