
সংগৃহীত
বর্তমানে অতিরিক্ত চিনি, ফাস্টফুড এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে ফ্যাটি লিভার রোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। লিভারে চর্বি জমে এই রোগ তৈরি হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গ না থাকলেও ভবিষ্যতে এটি লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্যাটি লিভার দুই ধাপে (গ্রেড) ধরা পড়ে এবং প্রতিটিরই আলাদা উপসর্গ ও প্রতিকার রয়েছে।
ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ কি?
- গ্রেড ১ হলো ফ্যাটি লিভারের প্রাথমিক পর্যায়। এই সময় লিভারের কোষে চর্বি জমতে শুরু করে, তবে লিভার তখনও স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। সাধারণত কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। তবে সময়মতো নজর না দিলে এটি সহজেই গ্রেড ২-এ রূপ নিতে পারে।
ফ্যাটি লিভার গ্রেড ২ কি?
- গ্রেড ২ হলো রোগটির দ্বিতীয় পর্যায়, যেখানে চর্বি জমার পরিমাণ বেশি হয় এবং লিভারে প্রদাহ (inflammation) শুরু হয়। এতে লিভারের কোষ ধ্বংস হতে পারে। ক্লান্তি, হালকা ব্যথা, খাবারে অরুচি বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই পর্যায়ে না থামালে রোগটি সিরোসিস বা লিভার ফেইলিওরের দিকে এগোতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরে বসেই চারটি নিয়ম মানলেই ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করা সম্ভব
১. ডায়েট পরিবর্তন করুন:চিনি, প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত তেল ও ফাস্টফুড বাদ দিন। ফল, সবজি, বাদাম, ওটস, ব্রাউন রাইস খান।
২.ব্যায়াম করুন প্রতিদিন:অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা শরীরচর্চা করুন। নিয়মিত ব্যায়াম লিভার থেকে চর্বি কমাতে সহায়ক।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন:অতিরিক্ত ওজন ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ। ওজন কমানোই এই রোগ প্রতিরোধে প্রধান ধাপ।
৪. অ্যালকোহল পরিহার করুন: অ্যালকোহল ফ্যাটি লিভারকে আরও দ্রুত খারাপ করে তোলে। চিকিৎসকরা একে পুরোপুরি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
ফ্যাটি লিভার একটি নীরব ঘাতক। প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ না থাকলেও তা ভবিষ্যতে ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তবে আশার কথা হলো—গ্রেড ১ এমনকি গ্রেড ২ পর্যায়েও সঠিক খাবার, ব্যায়াম ও নিয়ন্ত্রণে থাকলে এই রোগ পুরোপুরি প্রতিরোধ বা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
নিজের ও পরিবারের খাদ্যাভ্যাসে নজর দিন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন এবং কোনো উপসর্গ দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ, সচেতনতা ও নিয়মিত যত্নই পারে লিভারকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে।
হ্যাপী