ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

এবার কলেজে ভর্তি নীতিমালায় আসছে বড় পরিবর্তন

প্রকাশিত: ১২:৪২, ১৪ জুলাই ২০২৫

এবার কলেজে ভর্তি নীতিমালায় আসছে বড় পরিবর্তন

ছবি: সংগৃহীত।

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে। তবে এবারের ভর্তির মৌসুমে থাকছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত পরিবর্তন। আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, কোটাব্যবস্থা পুনর্গঠন, ভর্তির সময়সীমা নির্ধারণ, মাইগ্রেশন নীতিতে সংশোধন এবং অভিজাত কলেজে ভর্তির শর্তাবলীতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির জানান, বোর্ডের কলেজ পরিদর্শকদের সমন্বয়ে নতুন ভর্তি নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তিনি বলেন, "২০২৫ সালের কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে কোটার কাঠামো, মেধাক্রমভিত্তিক অগ্রাধিকার ও কলেজ নির্বাচনের নীতিতে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব রয়েছে।"

গত বছরের ভর্তি পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় সাড়ে ৮ হাজার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী প্রথম ধাপে কোনো কলেজে সুযোগ পাননি। ঢাকার অভিজাত কলেজগুলো—যেমন নটর ডেম, হলি ক্রস, সেন্ট যোসেফ, ভিকারুননিসা, রেসিডেনসিয়াল, রাজউক, আইডিয়ালসহ অন্যান্য নামকরা কলেজে সীমিত আসনের কারণে চাহিদা অনুযায়ী ভর্তির সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে।

ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক রেজাউল হক জানান, এসব কলেজে নিজস্ব স্কুল শাখার শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার থাকায় বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকেই আবার সঠিকভাবে কলেজ পছন্দ নির্ধারণ না করায় প্রথম ধাপেই বাদ পড়ে যান।

ব্যানবেইস ও শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে মোট ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২২ লাখ। এর সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৯ লাখ এবং পলিটেকনিকে আরও ২ লাখ ৪১ হাজার আসনসহ মোট ভর্তিযোগ্য আসন দাঁড়ায় ৩৩.২৫ লাখ। অথচ এবছর এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ১৩ লাখ শিক্ষার্থী। এতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় সাড়ে ২০ লাখ আসন শূন্য থাকছে—যা বেসরকারি কলেজগুলোর জন্য বড় ধরনের সংকেত।

ঢাকা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর অন্তত ২২০টি কলেজে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। এটি শিক্ষা ব্যবস্থার ভারসাম্যহীনতা এবং অবকাঠামোগত পরিকল্পনার অভাবের প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে ৭ শতাংশ কোটা রয়েছে—যার মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের জন্য সংরক্ষিত। তবে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য একটি নতুন বিশেষ কোটা চালুর প্রস্তাব রয়েছে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোটার যৌক্তিকতা নিয়েও পুনর্বিবেচনা চলছে।

নুসরাত

×