ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

শিক্ষা

শিক্ষা বিভাগের সব খবর

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পাঁচ শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পাঁচ শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও

দেশের পাঁচটি শিক্ষা বোর্ডে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা পাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। ফল পরিবর্তন চেয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেন তারা। এ সময় বোর্ডের ফটকের সামনে তালা ঝুলিয়ে নানা স্লেøাগান দেন পরীক্ষার্থীরা। কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে। আন্দোলনে একাধিক বোর্ডের চেয়ারম্যান পরীক্ষার্থীদের কাছে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বিক্ষোভের সময় ধাক্কাধাক্কিতে অন্তত ছয় শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। রবিবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল বাতিল করে পুনরায় ফল তৈরি ও প্রকাশের দাবি জানিয়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ফেল করা একদল শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে তারাই আবার ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। বেলা ১১টা থেকে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। তাদের সঙ্গে অনেক নারী অভিভাবককেও দেখা যায়। দুপুর পৌনে দুটার দিকে বোর্ডের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এদিকে, দুপুর দুটার দিকে শিক্ষা বোর্ডের প্রবেশ পথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিন ছাত্রীসহ ছয়জন আহত হন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রকাশিত ফল বৈষম্যমূলক। তারা সবগুলো বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল চান। এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই সেই সাবজেক্ট ম্যাপিং করার দাবি তাদের। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে থাকা চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রথমে বোর্ডের ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। ভেতরে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছিল না। সে সময় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নিয়ে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভেতরে ঢুকতে চাইলেও তাদের যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে পুলিশ। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে বাতিল পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল তৈরি করা হয়েছে। এখানে কেউ বঞ্চিত বা বৈষম্যের শিকার হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তার পরও শিক্ষার্থীরা কী বলতে চায়, তাদের কথা আমরা শুনব। সেগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাব। সর্বশেষ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের কক্ষে ঢুকে পড়েন। বোর্ড চেয়ারম্যানকে ঘিরে সেখানে বিক্ষোভ করেন তারা। ফল বাতিলের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা সেখান থেকে যাবেন না বলে ঘোষণা দেন। এদিকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফটকে তালা ঝুলিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বোর্ড চেয়ারম্যান ড. নিজামুল করিমকে। রবিবার বেলা ১১টা থেকে কুমিল্লা বোর্ডের অন্তর্গত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নেন। এ সময় তারা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটক ও বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ভবনের ফটক আটকে দেন। এ সময় শিক্ষা বোর্ড শাখার সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। নিজস্ব সংবাদদাতা কুমিল্লা থেকে জানান, বোর্ডের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগ্বিত-া হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপদে সরিয়ে নেন। বিকেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে সম্প্রতি প্রকাশিত এইচএসসির ফলাফলে পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ বছর ১ লাখ ১২ হাজার ৩১২ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৭৯ হাজার ৯০৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে ফেল করে ৩২ হাজার ৪০৭ জন।