ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননায় ইবিতে বিক্ষোভ, সাংবাদিক হেনস্তার প্রতিবাদ

ইবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ১৪ জুলাই ২০২৫

জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননায় ইবিতে বিক্ষোভ, সাংবাদিক হেনস্তার প্রতিবাদ

ছবি: জনকণ্ঠ

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার (১৪ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদ, ইউনিভার্সিটি টিসার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) ও শাখা ছাত্রদল সম্মিলিতভাবে এ কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসের অনুষদ ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসন ভবন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি সাংবাদিকদের উপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে ইবি জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ইউট্যাব ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, ইবি জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান খান ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বক্তব্য রাখেন।

শহীদ জিয়াউর রহমানকে অবমাননা ও তারেক রহমান নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগানে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার উত্তরসূরী তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননা করে তারা সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে অপমানিত করেছে। একটা পাকিস্তানি গোষ্ঠী ও বটচক্র দেশনায়ক তারেক রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন রিউমার ছড়াচ্ছে এবং তাকে অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। তারা এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ধারণ করে না। সেই রাজাকার আর চব্বিশের স্বৈরাচার মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাদের ঠিকানা বাংলাদেশ নয়, তাদের ঠিকানা দিল্লি আর পাকিস্তান।

জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো আপনারা সচেতন থাকবেন যাতে কেউ ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে। বিশেষ করে দুইদিন আগে সাংবাদিকদের উপর হামলা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এই হামলার যেনো সুষ্ঠু বিচার হয় এজন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

এসময় তিনি আরো বলেন, ৫ই আগস্টের পর বিএনপিকে নিয়ে যে অপপ্রচারমূলক মন্তব্য ও গালিগালাজ করা হয়েছে, এগুলোর প্রতিবাদ তেমন একটা করেননি বিএনপির নেতৃবৃন্দ। মাঝেমাঝে অসহ্য হয়ে গেলে কিছুটা করেছেন। কেনো আমরা এটা এড়িয়ে যাচ্ছি? কারণ হচ্ছে সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মী রয়েছে এবং সবাই অধীর আগ্রহী হয়ে বসে আছেন একটা ভোটের জন্য। কারণ তারা ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করবে। এই ভোটটা যাতে পিছিয়ে না যায়, এই ভোটের অধিকার যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেজন্য দলের নেতাকর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন, সীমাহীন ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। আমরা জানি যে আপনারা ভাবছেন যে আমরা আপনাদের উস্কানিতে পা দিয়ে আপনাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা করব, আর সেই সুযোগে আপনারা নির্বাচন বানচাল করবেন। না সেটা হবে না। আমরা অবশ্যই সকল কাজ বুদ্ধিমত্তার সাথে করবো।

সাদা দলের আহ্বায়ক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে অনেকে গাদ্দারি করেছে, অনেকে চব্বিশের ৫ আগস্টে গাদ্দারি করেছে। গাদ্দারি বন্ধ করেন, আমাদেরকে ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যেতে বাধ্য করবেন না। এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকবেন না, যাতে বাংলাদেশ থেকে সমূলে ফ্যাসিস্টের মতো বিদায় করে দিতে হয়।

জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান যদি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু না করতেন তাহলে আজকে যারা রাজনীতির নামে এসব করছেন তারা কি রাজনীতির সুযোগ পেতেন? যিনি আপনাদের এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে তাকেই আপনারা অপমান করছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আপনাদের সতর্ক করছি, সতর্ক করার পরেও যদি এসব কুরুচিপূর্ণ কথা ও অবমাননা চালিয়ে যান আমরা এর দাঁত ভাঙা জবাব দিবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি কারা রগ কাটার সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। আপনারা একপেশে প্রচারণা চালিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছেন এটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট। নির্বাচন বিলম্বিত করা এবং স্বৈরশাসকের রাজনীতি যাতে বাংলাদেশে করতে পারে আপনারা সেই পথেই হাঁটছেন। আমরা সতর্ক করছি আমরা কিন্তু দুর্বল নই, আমরা মাঠে নামলে কিন্তু আপনাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে চাইলে স্বনামে আসেন, সাধারণ ছাত্রের নামে দিয়ে কেন আসছেন? স্বনামে আসেন আমরা আপনাদের প্রতিহত করবো।

আবির

×