
ছবিঃ সংগৃহীত
শেরপুর জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক স্থান হলো অর্কিড পর্যটন কেন্দ্র ও রিসোর্ট, যা স্থানীয়ভাবে কান্দাপাড়া কোলাবাগান নামেও পরিচিত। এটি প্রাইভেটভাবে পরিচালিত একটি পার্ক, যেখানে মূল আকর্ষণ অর্কিড গাছের বাগান, জলাধার, গাছপালা ও মিনি-চিড়িয়াখানা সহ প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
১৯৮৫ সালে এমডি আজহার আলী এই ৫ একর জমিতে একটি কোলার বাগান গড়ে তোলেন, যেখানে প্রধানত ফলদ ও অর্কিড জাতের গাছ ছিল। ২০০৮ সালে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পুনর্গঠিত হয় ও এর নাম হয় অর্কিড পর্যটন কেন্দ্র। যদিও নির্দিষ্ট অর্কিড প্রজাতির তালিকা পাওয়া যায়নি।
শেরপুরের এই কেন্দ্রটি দর্শকদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি করেছে। পরিষ্কার লেনে হাঁটাপথ, ছোট পুকুর, গাছপালা, অর্কিড ছাড়া ফলদ গাছ ও মিনি-চিড়িয়াখানা অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রতিদিন সকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে ও টিকিট ফি মাত্র ১০০ টাকা, আর ব্যক্তিগত ইভেন্টের জন্য বুকিং করতে ২৫,০০০ টাকা লাগে। অতিথিরা পাখির কলরব, সবুজ পরিবেশ ও শান্তি উপভোগ করতে পারেন।
অর্কিডগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ায় ও ঐতিহ্যবাহী উদ্ভিদ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। শেরপুরের মতো অঞ্চলে অর্কিড চাষ, সংরক্ষণ ও বাগানভিত্তিক পর্যটন উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে। সমাজে অর্কিডের ঔষধি ও নান্দনিক গুরুত্ব প্রচার করা গেলে এলাকাভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্ভব।
বাংলাদেশে অনেক স্থানীয় অর্কিড প্রজাতি বিলুপ্তির পথে রয়েছে, কারণ বন উজাড়, মাটি ক্ষয়, বেআইনি সংগ্রহ ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্ত নয়। ফলে শেরপুরের মতো অর্কিড বাগানের সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে প্রাকৃতিক প্রজাতি টিকে থাকে এবং ভবিষ্যতে গবেষণা ও শিক্ষামূলক গুরুত্ব বহন করে।
শেরপুরের অর্কিড কেন্দ্র একটি অনন্য স্থান, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অর্কিডের সম্ভাব্য বৈচিত্র্য ও সমাজের পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যেখানে ভ্রমণ ও পর্যটনে আগ্রহীদের জন্য অর্কিডসহ বিভিন্ন গাছপালার সৌন্দর্য উপভোগযোগ্য। ভবিষ্যতে এখানে স্থানীয় প্রজাতি সম্পর্কে গবেষণা, পরিচর্যা ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে এই কেন্দ্র আরও অর্থবহ ও টেকসই হতে পারে।
ইমরান