
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে তরুণদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যানসার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে—তবে এক নতুন গবেষণা আশার আলো দেখিয়েছে। সময়ের আগেই হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি (H. pylori) নামক একটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ শনাক্ত ও চিকিৎসার মাধ্যমে ৭৬ শতাংশ পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা (IARC)।
‘নেচার মেডিসিন’ নামের স্বনামধন্য জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, একমাত্র এই সংক্রমণের প্রতিকারই ভবিষ্যতে প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ মানুষকে পাকস্থলীর ক্যানসার থেকে রক্ষা করতে পারে।
কীভাবে কাজ করে এই প্রতিরোধ?
এইচ. পাইলোরি একটি ব্যাকটেরিয়া, যা পাকস্থলীতে দীর্ঘদিন থাকলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তবে সময়মতো অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধের সমন্বিত চিকিৎসা এই সংক্রমণ দূর করতে সক্ষম। গবেষণায় বলা হয়েছে, এই চিকিৎসা পদ্ধতি শুধু কার্যকরই নয়, বরং খরচসাশ্রয়ী এবং স্বল্প-সম্পদসম্পন্ন দেশগুলোতেও প্রয়োগযোগ্য।
কোন অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে?
গবেষকরা ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারীদের ওপর বিশ্লেষণ চালান। এতে দেখা যায়, এশিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকা ভবিষ্যতের অধিকাংশ ক্যানসার রোগীর ভার বহন করবে, যদি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই সংক্রমণ প্রতিরোধযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও এখনও বিশ্বজুড়ে তা যথাযথভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হচ্ছে না।
এখনই সময় পদক্ষেপ নেওয়ার
বিশেষজ্ঞদের মতে, “লক্ষ্যভিত্তিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ করা গেলে ভবিষ্যতে লক্ষ লক্ষ প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।” এইচ. পাইলোরি শনাক্ত ও নির্মূলের জন্য বয়ঃসন্ধিকাল বা প্রাপ্তবয়স্কতার শুরুতেই স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা চালু করা দরকার, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে।
উপসংহার
এখন সময় হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে পাকস্থলীর ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধের। সরকার ও স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর উচিত এই ব্যাকটেরিয়াকে গুরুত্ব দিয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা—কারণ অল্প খরচে কোটি কোটি জীবন বাঁচানোর এমন সুযোগ বারবার আসে না।
ইমরান