
ছবি: সংগৃহীত
আপনার কি কাঁধে ব্যথা হয়? হাত উপরে তুলতে কষ্ট হয়? বিশেষ করে ডায়াবেটিস থাকলে এই সমস্যা আরও তীব্র হতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, এটি হতে পারে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ বা চিকিৎসা ভাষায় অ্যাডহিসিভ ক্যাপসুলাইটিস (Adhesive Capsulitis)—যা ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে বেশ প্রচলিত এক জটিলতা।
কী এই ফ্রোজেন শোল্ডার?
এটি এক ধরনের অবস্থা যেখানে কাঁধের জয়েন্টের আশপাশের টিস্যুগুলো শক্ত হয়ে যায়, ফোলা ও ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ নাড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে রক্তে গ্লুকোজের উচ্চমাত্রা শরীরের নানা টিস্যুতে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যার প্রভাবে কাঁধের জয়েন্টও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লক্ষণগুলো কী?
- ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা কাঁধে ব্যথা
- হাত উপরে তোলা বা পেছনে নেওয়ায় অসুবিধা
- ঘুমের সময় ব্যথা বেড়ে যাওয়া
- ধাপে ধাপে কাঁধ সম্পূর্ণভাবে শক্ত হয়ে যাওয়া
ডায়াবেটিসে কেন ঝুঁকি বেশি?
ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায় ২০-৩০ শতাংশ ফ্রোজেন শোল্ডারে ভুগতে পারেন। তাদের শরীরের সংযোগস্থলগুলো সহজেই শক্ত হয়ে যেতে পারে, যেটা সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কী?
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা
- ফিজিওথেরাপি ও হালকা ব্যায়াম নিয়মিত করা
- গরম সেঁক ও ব্যথানাশক প্রয়োগ (ডাক্তারের পরামর্শে)
- প্রয়োজনে ইনজেকশন বা অপারেশনের সাহায্য
একটি ভুল ধারণা:
অনেকে মনে করেন ফ্রোজেন শোল্ডার হলে কাঁধ একেবারে নাড়ানো যাবে না। বরং এটি সম্পূর্ণ ভুল। যতটুকু সম্ভব নাড়াচাড়া ও ব্যায়াম করাই হলো চিকিৎসার মূলমন্ত্র।
ডায়াবেটিস শুধু রক্তে শর্করার অসুখ নয়—এটি সারা শরীরের জটিলতায় পরিণত হতে পারে। ফ্রোজেন শোল্ডার তার একটি বাস্তব উদাহরণ। তাই কাঁধে ব্যথা বা অস্বস্তি শুরু হলে অবহেলা নয়, বরং দ্রুত চিকিৎসা নিন—আর নিয়ন্ত্রণে রাখুন রক্তের গ্লুকোজ।
আঁখি