
ছবি: সংগৃহীত
ফুসফুসের ক্ষতির কথা বললেই সাধারণত ধূমপানের কথা মাথায় আসে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, ঘরের ভেতরে প্রতিদিনের রান্নার ধোঁয়া, গ্যাসের নির্গমন ও ধূলিকণাও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে চলেছে। অনেক সময় ঘরের শিশুরাও এতে আক্রান্ত হচ্ছে অল্প বয়সেই।
আমাদের দেশে রান্নাঘর বেশিরভাগ সময়েই অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের মধ্যে থাকে। ফলে যারা কাঠ, কয়লা বা এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করেন, তারা প্রতিদিন বিপজ্জনক মাত্রায় কার্বন মনোক্সাইড ও পার্টিকুলেট ম্যাটারে (PM 2.5) শ্বাস নিচ্ছেন।
এই ধোঁয়া দিনের পর দিন জমে গিয়ে সৃষ্টি করছে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD), শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও এমনকি ফুসফুস ক্যানসার পর্যন্ত।
শুধু ধূমপান নয়, "ঘরের ধোঁয়া" আরও ভয়ংকর:
কাঠ ও কয়লা ব্যবহারে নির্গত হয় ক্ষতিকর কার্বন ও কণিকা
রান্নাঘরে বায়ু চলাচল না থাকলে ধোঁয়া বাইরে বের হয় না
শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন
নিয়মিত গ্যাস জ্বলিয়ে রাখাও বাড়ায় বিপদ
বিশেষ ঝুঁকিতে নারীরা ও শিশুরা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু রান্নার কাজ মূলত নারীদের উপরই পড়ে, তাই তারা প্রতিদিন এই ধোঁয়ার সবচেয়ে বেশি সংস্পর্শে থাকেন। পাশাপাশি শিশু ও প্রবীণরা ঘরের ভেতরে বেশি সময় কাটান বলেই তাদের ওপরও প্রভাব পড়ে।
ফুসফুস বাঁচাতে যা করণীয়:
রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন
এক্সজস্ট ফ্যান বা চিমনি ব্যবহার করুন
কাঠ-কয়লার পরিবর্তে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি (ইলেকট্রিক হটপ্লেট/ইনডাকশন) বেছে নিন
রান্নার সময় শিশুদের রান্নাঘর থেকে দূরে রাখুন
ঘরের জানালা খোলা রাখার অভ্যাস করুন
ধূমপান ও ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশ এড়িয়ে চলুন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ঘরের বায়ুদূষণের কারণে প্রাণ হারান। বাংলাদেশেও ক্রমেই বেড়ে চলেছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের হার। ফুসফুস একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সহজে সারানো যায় না। তাই ধূমপানের মতো রান্নার ধোঁয়া ও ঘরের দূষণও ফুসফুসের বড় শত্রু—এ কথা বুঝে সচেতন হওয়া জরুরি। সুস্থ নিশ্বাসে সচেতন জীবন হোক আমাদের সবার অঙ্গীকার।
ফারুক