ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করার ছায়া বাংলাদেশ ব্যাংক

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করার ছায়া বাংলাদেশ ব্যাংক

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করতে ছায়া হয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের আমলে দেশে ১০টি ব্যাংক দুর্বল হিসেবে প্রকাশ পায়। তখন থেকেই ব্যাংক খাতের আমানতকারীদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়। এই ব্যাংকগুলোকে টেনে তুলতে নেওয়া হয় নানা উদ্যোগ। রউফ তালুকদারের দেখানো পথে বেশি দূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।  এরপর বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর যেন আগুনে ‘ঘি’ ঢেলে দেওয়ার মতো কাজ করেন। তিনি বলেন, ১০টি ব্যাংক শুধু দুর্বলই নয়, বরং কার্যত দেউলিয়া দশায় পৌঁছে গেছে। তার এ বক্তব্য ব্যাংকিং খাতের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছে এবং গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেক দুর্বল ব্যাংক আস্থা হারিয়ে ফেলে। অনেকে মনে করছেন গভর্নরের এমন বক্তব্য কোনো অনুমানের ভিত্তিতে নয়, বরং তার কাছে হয়তো নির্দিষ্ট কিছু তথ্য রয়েছে, যা সংকটের গভীরতা নির্দেশ করে এবং ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়।  এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী কোনো ব্যাংক অবসায়ন বা বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীরা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ফেরত পাবেন। অর্থাৎ কেউ যদি কোনো বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাংকে ১০ লাখ বা ৫০ লাখ টাকা রাখেন তিনি কেবল ২ লাখ টাকা ফেরত পাবেন। ৯৫ শতাংশ গ্রাহকের স্বার্থ নিশ্চিতকরণে গভর্নর আমানতকারীদের এভাবে নামমাত্র সাহস জোগান।  খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে চলমান সংকট নিরসনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও সুস্পষ্ট ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে কোন ব্যাংকগুলোর অবস্থা সংকটাপন্ন, কোনটি টিকে থাকবে তা নির্দিষ্টভাবে বলা না হলে পুরো খাতে অনিশ্চয়তা আরও বাড়বে। সম্প্রতি ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করতে সরকারের পক্ষ থেকে একীভূতকরণ এবং অধিগ্রহণ, পুনঃমূলধনীকরণে আইনগত প্রয়োগের জন্য ব্যাংক রেজুল্যুশন আইন জারি করা হয়। মূলত ব্যাংকগুলোকে ভালো করার স্বার্থে এই আদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশ অনুযায়ী অকার্যকর বা অতি দুর্বল ব্যাংককে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি মনে করে কোনো ব্যাংক আর কার্যকর নয় বা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই, দেউলিয়া হয়ে গেছে বা দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছে, আমানতকারীদের পাওনা দিতে পারছে না বা না দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তখন এ ধরনের ব্যাংককে ভালো করার স্বার্থে নতুন অধ্যাদেশ অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এ বিষয়ে বিশেষ নীতিমালা তৈরি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশের পরিস্থিতি সামলাতে রাজনৈতিক অর্থনীতি নিয়ে ভাবতে চান গভর্নর

দেশের পরিস্থিতি সামলাতে রাজনৈতিক অর্থনীতি নিয়ে ভাবতে চান গভর্নর

দেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রবাসীরা উদ্বিগ্ন। এই অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হলে আমাদের রাজনৈতিক অর্থনীতি নিয়ে ভাবতে হবে। ‘আমাদের দেশের অনেকের শত শত কোটি ডলার বিদেশে আছে। তারা ভাবে বাংলাদেশে অর্থ নিরাপদ কি না? রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের প্রয়োগ ও প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন। এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা। বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছিল আমাদের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার জন্য। কিন্তু কখন এটা করব? এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল। অনেকেই বলেছেন আইএমএফের শর্তগুলো আমরা পরিপালন করতে পারব না। আগের সরকার একটাও পূরণ করতে পারেনি এটা সত্য, কিন্তু আমরা সব কটি পূরণ করেছি।’ গভর্নর আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কম থাকায় আমাদের অনেক সুবিধা হচ্ছে। বিলাসী পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়ার পক্ষে আমি না। আমি কর বাড়িয়ে দেব। যার সামর্থ্য আছে সে কিনবে। যার নাই, সে কিনবে না।’ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘আমাদের এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি ৩ থেকে ৪ শতাংশে নিয়ে আসা। আমার যেটা মনে হচ্ছে আগস্টের মধ্যে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে চলে আসবে। বছর শেষে এটা ৫ শতাংশের মধ্যে চলে আসবে বলে আমি মনে করি।’ প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দাম বাড়ার আশায় ডলার ধরে রাখবেন না। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও ডলারের দর স্থিতিশীল থাকবে। অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হার নিয়ে অনেক শঙ্কা ছিল। অর্থনৈতিক যৌক্তিকতার দিক থেকে বিবেচনা করলে আমাদের একটা না একটা সময় বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের দিকে যেতেই হবে। আমি মনে করি বর্তমান পরিস্থিতি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার নির্ধারণের জন্য যথাযথ সময়।’ অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিদেশ থেকে অনেক বিলাসী পণ্য আমদানি করি। এটা কমানো উচিত। সেটি করা গেলে ডলারের চাহিদা অনেক কমে যাবে।’ জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আর্থিক খাতে বড় ধরনের একটা সংস্কার দরকার ছিল। বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে সেটি হয়েছে। পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘২০১৮–১৯ সাল থেকে আমাদের বিনিময় হারকে জোর করে চেপে ধরে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে পরে একটা ফিক্সড জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে বিনিময় হার চাপিয়ে রাখা যায় না।’

একদিন পরই পতনের ধারায় শেয়ারবাজার ॥ লেনদেনের নিম্নগতি

একদিন পরই পতনের ধারায় শেয়ারবাজার ॥ লেনদেনের নিম্নগতি

দেশের শেয়ারবাজারে ফের অধিকাংশ ভালো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডানের দরপতন হয়েছে। অথচ একদিন আগেই এসব খাতে আশার আলো দেখেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। একদিনও টিকল না তাদের আস্থা। মূলত আস্থাহীনতার কারণে ক্রমশ অন্তঃসার শূন্য হয়ে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পাশাপাশি বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ ভালো কোম্পানির পাশাপাশি প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমেছে। ফলে বড় হয়েছে দরপতনের তালিকা। এতে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে লেনদেন তলানিতে নেমেছে। ডিএসইতে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সব থেকে কম লেনদেন হয়েছে। শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। তবে এরপরেই একের পর এক মিউচুয়াল ফান্ড ও ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম কমতে থাকে। যার প্রভাব পড়ে অন্যান্য খাতের ওপরও। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১১৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০০টির। আর ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২৮টির দাম কমেছে এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভিটামিনের অভাব ওষুধ খেয়ে মেটাচ্ছেন? সতর্ক না হলে লাভের চেয়ে ক্ষতির ভাগই বাড়বে!

ভিটামিনের অভাব ওষুধ খেয়ে মেটাচ্ছেন? সতর্ক না হলে লাভের চেয়ে ক্ষতির ভাগই বাড়বে!

দেহকে সুস্থ-সবল রাখতে প্রয়োজন যথাযথ পুষ্টির। বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ উপাদানের অনুপস্থিতিতে শরীরে কোনও রোগ বাসা বাঁধতে পারে। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ মূলত খাবারের মাধ্যমেই আমাদের দেহে প্রবেশ করে। কিন্তু ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অনেক সময়েই শুধুমাত্র খাবারের মাধ্যমে দৈনিক নির্ধারিত পুষ্টি পাওয়া যায় না। পাশাপাশি ক্রমাগত রাস্তার খাবার এবং শাকসব্জি বা মাছ-মাংসে ভেজালের পরিমাণ বৃদ্ধিও এর অন্যতম কারণ। তাই শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজের জন্য অনেকেই নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেন। সতর্ক না হলে, এই ধরনের প্রবণতা বিপদ ডেকে আনতে পারে।