
ছবি: সংগৃহীত
দেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রবাসীরা উদ্বিগ্ন। এই অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হলে আমাদের রাজনৈতিক অর্থনীতি নিয়ে ভাবতে হবে। ‘আমাদের দেশের অনেকের শত শত কোটি ডলার বিদেশে আছে। তারা ভাবে বাংলাদেশে অর্থ নিরাপদ কি না?
রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের প্রয়োগ ও প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা। বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছিল আমাদের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার জন্য। কিন্তু কখন এটা করব? এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল। অনেকেই বলেছেন আইএমএফের শর্তগুলো আমরা পরিপালন করতে পারব না। আগের সরকার একটাও পূরণ করতে পারেনি এটা সত্য, কিন্তু আমরা সব কটি পূরণ করেছি।’
গভর্নর আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কম থাকায় আমাদের অনেক সুবিধা হচ্ছে। বিলাসী পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়ার পক্ষে আমি না। আমি কর বাড়িয়ে দেব। যার সামর্থ্য আছে সে কিনবে। যার নাই, সে কিনবে না।’
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘আমাদের এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি ৩ থেকে ৪ শতাংশে নিয়ে আসা। আমার যেটা মনে হচ্ছে আগস্টের মধ্যে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে চলে আসবে। বছর শেষে এটা ৫ শতাংশের মধ্যে চলে আসবে বলে আমি মনে করি।’
প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দাম বাড়ার আশায় ডলার ধরে রাখবেন না। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও ডলারের দর স্থিতিশীল থাকবে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হার নিয়ে অনেক শঙ্কা ছিল। অর্থনৈতিক যৌক্তিকতার দিক থেকে বিবেচনা করলে আমাদের একটা না একটা সময় বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের দিকে যেতেই হবে। আমি মনে করি বর্তমান পরিস্থিতি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার নির্ধারণের জন্য যথাযথ সময়।’
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিদেশ থেকে অনেক বিলাসী পণ্য আমদানি করি। এটা কমানো উচিত। সেটি করা গেলে ডলারের চাহিদা অনেক কমে যাবে।’
জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আর্থিক খাতে বড় ধরনের একটা সংস্কার দরকার ছিল। বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে সেটি হয়েছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘২০১৮–১৯ সাল থেকে আমাদের বিনিময় হারকে জোর করে চেপে ধরে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে পরে একটা ফিক্সড জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে বিনিময় হার চাপিয়ে রাখা যায় না।’
এম.কে.