
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকায় নেই কোনো গণশৌচাগার। ফলে এলাকাবাসীর নিত্যদিনের প্রাকৃতিক চাহিদা মেটাতে হাসপাতাল চত্বরে এখন ভরসা। এতে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে।
শিক্ষা, চিকিৎসা, রেলপথ, ব্যবসাসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি ঐতিহাসিক এলাকা রুহিয়া থানা শহর। ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানা শহরে প্রতিদিন যাতায়াত করে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ।থানা শহরটিতে প্রবেশের প্রধান পথ জেলা শহর ঠাকুরগাঁও -রুহিয়া - আটোয়ারী এই তিন এলাকার কেন্দ্র বিন্দু হল রুহিয়া চৌরাস্তা।
থানা শহরের বাইরের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ গন্তব্যস্থলের যানবাহনে ওঠানামা করে। অথচ সেই রুহিয়া চৌরাস্তায় জনসাধারণের জন্য নেই কোন গণশৌচাগার। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সব চাইতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় মহিলা যাত্রীদের যারা দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াত করে। পুরুষরা কোনোভাবে হাসপাতালের ভেতরে মল ত্যাগ করতে পারলেও নারী ও শিশুরা ব্যবহার করতে পারছেন না। এতে তারা বাইরে বের হয়ে অস্বস্তিতে পড়েন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুহিয়া বাজার ও থানা এলাকায় প্রতিদিন লক্ষাধীক মানুষ যাতায়াত করেন। বাজারে কেনাকাটা, সরকারি-বেসরকারি দফতরে কাজ কিংবা প্রতিদিন এই এলাকা দিয়ে চলাচল করেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও রোগীসহ হাজারো মানুষ। এছাড়াও রুহিয়া থানার সেবা গ্রহণ, রেল সেবা, এলএস ডি, এসব সেবা ও সুবিধাভুগী সকলকেই পোহাতে হচ্ছে একটি গণশৌচাগারের জন্য। সব মিলিয়ে এখানে মানুষের চাপ থাকে সর্বক্ষণ। কিন্তু নেই কোনো গণশৌচাগার বা পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা।
বাধ্য হয়ে অনেকে হাসপাতাল চত্বরের দেওয়ালের পাশে প্রস্রাব করার জন্য ব্যবহার করছেন, এতে হাসপাতাল এর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অন্য দিকে সেই হাসপাতাল এর দিনের বেলায় ব্যাবহার হচ্ছে পাগলু , ভ্যান এর স্টান্ড হিসেবে। এতে রোগীদের ভোগান্তির পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের ঝুঁকিও বেড়েছে।
রুহিয়া হাসপাতালের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “প্রতিদিন বহিরাগত মানুষ হাসপাতালের চত্বর ও মাঠে মলমূত্র ত্যাগ করা ছাড়াও এই মাঠ দিনের বেলায় পাগলু ভ্যানের,ও সিএনজি স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে চরম ভোগান্তি হচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এলাকায় এত মানুষ আসে, কিন্তু কোনো পাবলিক টয়লেট নেই। বাধ্য হয়ে অনেকেই রাস্তার পাশে বা হাসপাতালের পেছনে প্রাকৃতিক কাজ সারেন। এটা খুবই লজ্জার ও স্বাস্থ্যহানিকর।
এদিকে থানার ৬ টি ইউনিয়নের মানুষ থানা শহরে এসে বেশ সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। প্রতিদিন শত শত যাত্রী রুহিয়া চৌরাস্তা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। অথচ এখানে নেই কোন গণশৌচাগার।নগরবাসীর পক্ষ থেকে বারবার গণশৌচাগার স্থাপনের দাবি উঠলেও কার্যকর সমাধান হচ্ছে না।
অন্যদিকে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে রোকসানা বানু বলেন, আমি হাসপাতালে আসছি চিকিৎসা নিতে, কিন্তু এসে যদি আরো অসুস্থ হয়ে যাই তাহলে তো এই হাসপাতালে আসার চেয়ে না আসাই উত্তম হাসপাতালে একদিকে ময়লা, মল ত্যাগ, দূর গন্ধ আরেক দিকে হাসপাতালের ছোট মঠে সিএনজি স্টন্ড যা একেবারেই অসুস্তিকর পরিবেশ হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন বলেন,এই বিষয়ে আমার ইউনিয়ন পরিষদে জানিয়েছি রুহিয়া থানাতেও জানিয়েছি যে বাহিরের গাড়ি গুলো সরিয়ে ফেলতে,যেন না আসে ,যারা এইখানে ব্যবহার করছে তারা সবাই রুহিয়ার মানুষ এদের মধ্যে যদি সচেতনতা তৈরি না হয় স্থানীয় সহযোগিতা ছাড়া তো আমরা এটা রোদ করতে পারবো না।এটা নিয়ে চেষ্টা করছি আমরা অনেক আগে থেকেই,এটা যেহেতু বাজারের অনেক উপরে ইউনিয়ন পরিষদের অনেক বরাদ্দ থাকে তারা যদি এটা সমাধান করে দেয় তাহলে হয়তো এটা রোদ করা সম্ভব।এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে জানাবো তারা কি চিন্তাভাবনা করে দেখে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন,জনসাধারণ প্রয়োজন মনে করলে আগামী অর্থ বছরের বাজেটে আমরা রুহিয়ায় একটি পাবলিক টয়লেটের জন্য বরাদ্দ রাখতে পারবো।
নোভা