
২০১৪ সালে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে আলোচনায় জায়গা করে নেন মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী। পরবর্তীতে অভিনয় ছেড়ে শোবিজ ইন্ডাস্ট্রির আড়ালে চলে যান। মুফতি মোহাম্মদ তালহা ইসলাম নামক এক মাদরাসা শিক্ষককে বিয়ে করেন হ্যাপি।
এবার হ্যাপি ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন, আমি যে যৌতুক মামলাটা করেছি। সেটা নিয়ে অনেকের একটা ভুল ধারণা আছে। অর্থ দাবি করা হচ্ছে আইনের ভাষায় যৌতুক বলা হয়।
তিনি তার রেস্টুরেন্টের নতুন ব্রাঞ্চ খোলার জন্য আমাকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপাচাপি করে। এবং একই সাথে সে বলে দিতে না পারলে তালাক দিয়ে দিব। এখন মূল বিষয়টা এখানে, তালাক দিয়ে দিব,আর ধরুন আমিও তালাক নিয়ে নিলাম। কিন্তু সে যেটা করত আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে পালিয়ে যেত। সুতরাং সেই ভয়ে আমি আমার বাচ্চার নিরাপত্তার জন্য সেসব হুমকি সহ্য করি।
বাচ্চাটাকে ব্যবহার করে সব তার আয়োজন।আমি তো জানি লোকটার চরিত্র কেমন! সুতরাং আমি কোনোভাবেই তার হাতে বাচ্চা তুলে দেওয়ার মতো চিন্তা করারও প্রশ্ন আসে না।
দুই নম্বরে হ্যাপি লিখেছেন, গত পাঁচ মাসে পাঠাও কুরিয়ারের অ্যাপ থেকে আমার ফোন থেকে সে দেখে, এই পাঁচ ছয় মাসে আমার ৪০ লক্ষ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি।কিন্তু এত টাকা বিক্রি হওয়ার পরেও এটা তো বিক্রি হওয়ার দাম। ৪০ লক্ষ টাকা বিক্রি হওয়া মানে ৪০ লক্ষ টাকায় আমার লাভ এমন না। ৪০ লক্ষ টাকা সেল হওয়া মানে সেখানে লাভ ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা।
তিন নম্বর দিয়ে সাবেক মডেল লিখেছেন, আর যেহেতু আমার টাকায় সংসার টা চলত চলত। তো সে চাইলেই আমি তো যখন তখন সে যা চাইবে আমি দিতে পারবো না। বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে করে আমার কাছ থেকে সে অনেক টাকা নিয়েছে। তার রেস্টুরেন্ট এর হিসাব খাতা খুলে দেখলে দেখবেন শুধু লস আর লস। এর আগেও সে একটা রেস্টুরেন্ট দিয়েছিল, সেটাও অনেক লস খেয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল। আর এখন এরাবিয়ানের মত একটা রেস্টুরেন্টের বিজনেসে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা ইনকাম করা, কোন ব্যাপারই না ইনশাআল্লাহ। কিন্তু তিনি সারাদিন ঘুমায়,এবং সারারাত জেগে থাকে। রেস্টুরেন্টের কোনও খোঁজ খবর রাখেন না।যেহেতু তার মাথায় সংসারে কোন চাপ নেই। মন চাইলে সন্ধ্যার পর মাঝে মাঝে যায়, না হলে সারাদিন রাতে বাসায়। এই কথাটা কাছের দূরের মোটামুটি সবাই জানে।
চার নম্বরে লিখেছেন, আর অনেকেই বলে তার পরিবার তো অনেক ধনী তাহলে সে আমার কাছ থেকে কেন টাকা নিবে? বিয়ের পর যখন প্রায় এক বছর পর বাসা থেকে তাকে বের করে দেয়, তখন সে শূন্য হাতে এটা লাগে যে তার কাপড়চোপড় নিয়ে আসে। আমি তখন স্বামীর অসহায় দিনগুলোতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে এসেছি। কারণ আমি বিয়ের আগে থেকেই বিজনেস করি হয়তো জানেন। এবং আলহামদুলিল্লাহ সেই টাকায় যথেষ্ট ভালো ভাবে চলাফেরা করা যায়।
এই অভিনেত্রী পাঁচ নম্বর পয়েন্টে লিখেছেন, সে ওয়ারিশ সূত্রে কিছু সম্পত্তি পাওয়ার কারণে সেটা বিক্রি করে, গাড়িটারি কেনেন। এবং সে কোনদিন ইলেকট্রনিকস জিনিস বাদে বাসার একটি প্লেট পর্যন্ত কেনেননি। বাবার পরিচয় এবং গাড়ির ফুটানি দেখিয়ে বিভিন্ন মহিলাদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে । কিছুদিন পরপর বিয়ে করে, আর ভাল না লাগলে তালাক দিয়ে দেয়। কোন রেজিস্ট্রেশন করে না, যাতে প্রমাণ না থাকে। এখানে দুইজনকে তালহা বাধ্য করে বাচ্চা নষ্ট করতে। আর চার নাম্বার যে বিয়েটা করে সেখানে একটা মেয়ে হয়ে যায়, এই বাচ্চা নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করে। কিন্তু ওই বিয়েটাও যেহেতু তার পরিবার থেকে দিয়েছিল, মহিলা পালাতক অবস্থায় গর্ভাবস্থার শেষ পর্যন্ত পৌঁছায়। এবং তালহার পরিবার সেই মহিলাকে সকল সাপোর্ট দেয়।
একাধিক বিয়ে করা প্রসঙ্গে হ্যাপি লিখেছেন, এখন আসছি একাধিক বিবাহ প্রমোট করা নিয়ে। আমি নিজেই শুরুতে নিজের জন্য সতীন হিসেবে অন্য কাউকে মানতে নারাজ ছিলাম। কিন্তু এই বিধানকে কটাক্ষ বা অসম্মান বা খারাপ ভাবিনি। শুধু নিজের সাথে না হোক এটা চাইতাম। এরপর এক বোনের কথা শুনে জন্য বিয়ের কাজ শুরু করি। এবং ওখান থেকে আমি চিন্তা করি যে মাঝে মাঝে পরিচিতদের মধ্যে স্বচ্ছতার সাথে তাকওয়াবানদের সাথে যদি জুড়ি মেলানো যায় এ তো অবশ্যই ভালো। তবে আমি যেভাবে প্রচার করতাম এটা অতিরিক্ত প্রচার ছিল। এটা করতে আমাকে জোডর করা হতো। কেউ কোনও প্রয়োজনে একের অধিক ইনসাফের সাথে রাখতেই পারে। আমি সেটা সমর্থন করি। কিন্তু অনবরত বাধ্য করা হতো অনেক বেশি পোস্ট করার জন্য এই বিষয়ে।
এই পয়েন্টেই তিনি বলেন, তিনি সামনে বসে বলতেন আর আমার লিখতে হতো। সেটা ছিল আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। বলতো "তোমার facebook আইডিতে ফলোয়ার বেশি, বেশি মানুষের কাছে প্রচার হবে। আর আমি বলছি তাই তুমি করবা।স্বামী ভাল বুঝে কি করতে হবে না হবে "।
উল্লেখ্য, সাবেক এই মডেল ও অভিনেত্রী স্বামী তালহার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন। তার স্বামী এ পর্যন্ত ৯টি বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন হ্যাপী। গত ১২ মে স্বামী তালহার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন তিনি। মুফতি মোহাম্মদ তালহা ইসলাম নামক এক মাদরাসা শিক্ষককে বিয়ে করেন হ্যাপি।
ফুয়াদ