
ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি ব্যাখ্যায় উঠে এসেছে তিন ধরনের জমির দলিল রয়েছে, যা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যেতে পারে। এসব দলিল বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা এতটাই নিশ্চিত যে, আইনজ্ঞরা বলছেন – “এই দলিলগুলো টিকবে না, ১০০% বাতিল হবে।”
বিশ্লেষণে বলা হয়, প্রথম যে দলিলটি বাতিলের ঝুঁকিতে রয়েছে তা হলো হেবা দলিল বা গিফট দলিল। ইসলামী আইন অনুযায়ী, হেবা অর্থাৎ দান তখনই বৈধ হয় যখন তা সম্পত্তির প্রকৃত দখলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যদি কোনো ব্যক্তি কেবল দলিল করে হেবা করে থাকেন, কিন্তু দখল হস্তান্তর না করেন, তাহলে কোর্টে মামলার মাধ্যমে সেই দলিল সহজেই বাতিলযোগ্য হয়ে পড়ে।
দ্বিতীয়ত, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা দলিলের আওতায় কেউ যদি হেবা বা দানপত্র করে থাকেন, তবে সেটিও বাতিল হবে। আইন স্পষ্টভাবে বলছে, পাওয়ার গ্রহীতা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে – যেমন বিক্রয় বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ক্ষমতা পায়। তার পক্ষে দান বা হেবা করা বৈধ নয়। ২০১২ সালের ‘ব্যাটলি আইন’ অনুযায়ী, পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে করা হেবা বা দান দলিল সম্পূর্ণভাবে বাতিলযোগ্য।
তৃতীয় ও শেষ ধরনের দলিল হলো এমন কোনো হেবা বা দান দলিল, যা রক্তের সম্পর্কবিহীন ব্যক্তি বা থার্ড ডিগ্রির বাইরে কাউকে দেওয়া হয়। যেমন, যদি কেউ তার মামা, চাচাতো ভাই বা অন্য আত্মীয়কে হেবা দলিল করে দেন, তবে সেটি থার্ড ডিগ্রির বাইরে পড়ায় তা বাতিলযোগ্য হয়ে যায়। হেবা বা গিফট কেবলমাত্র সন্তান, পিতা-মাতা, স্ত্রী বা ভাইবোনদের মধ্যে করা বৈধ হয়।
আইনি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই তিন ধরনের দলিল যদি কেউ করে থাকেন, তবে তা কোর্টে সহজেই চ্যালেঞ্জ হতে পারে এবং বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। দলিল তৈরি বা সম্পত্তি হস্তান্তরের আগে সংশ্লিষ্ট আইন ভালোভাবে জানা এবং পরামর্শ গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে পরামর্শ দেন তারা।
শেষ কথা: হেবা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি এবং থার্ড ডিগ্রির বাইরে দানের ক্ষেত্রে যথাযথ দখল এবং আইনি নিয়ম না মানলে দলিল বাতিল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন না থাকলে ভবিষ্যতে গুরুতর আইনগত সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
নুসরাত