ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাড়ি বিক্রি বেড়েছে, তবু আবাসন খাতে সংকটের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০২:১৬, ২৪ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাড়ি বিক্রি বেড়েছে, তবু আবাসন খাতে সংকটের আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত (রয়টার্স)

যুক্তরাষ্ট্রে গত এপ্রিল মাসে নতুন একক পরিবারিক বাড়ির বিক্রি তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নির্মাতারা বাড়ির দাম কমিয়ে আনার ফলে এ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বাড়তি সুদের হার ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আবাসন খাতকে চাপে ফেলছে।

শুক্রবার (২৩ মে) যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের প্রকাশিত তথ্যমতে, গত এপ্রিল মাসে নতুন বাড়ি বিক্রি আগের মাসের তুলনায় ১০.৯ শতাংশ বেড়ে বছরে ৭ লক্ষ ৪৩ হাজার ইউনিটে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। তবে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের পরিসংখ্যানে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে, যার ফলে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা স্তিমিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাড়ি বিক্রির হার মোট আবাসন বিক্রির প্রায় ১৫.৭ শতাংশ। যদিও এপ্রিল মাসের বিক্রি বেড়েছে, বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধারা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

দামে ছাড়, তবুও সুদের চাপে বাজার দুর্বল

অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ন্যান্সি ভ্যানডেন হাউটেন জানান, ‘বিল্ডারদের বিভিন্ন ছাড় ও প্রণোদনা বিক্রি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে, তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতি ও প্রায় ৭ শতাংশে পৌঁছে যাওয়া মর্টগেজ সুদের হার বাজারকে চাপে ফেলবে।’

গত মাসে নতুন বাড়ির গড় মূল্য ছিল ৪ লাখ ৭ হাজার ২০০ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম। বাড়ির দাম আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব হোমবিল্ডার্স। মে মাসে নির্মাতাদের মধ্যে যারা বাড়ির দাম কমিয়েছে, তাদের অনুপাত ছিল গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আঞ্চলিক চিত্র

এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাড়ি বিক্রি কমেছে ১৪.৮ শতাংশ। তবে মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে ৩৫.৫ শতাংশ, দক্ষিণে ১১.৭ শতাংশ এবং পশ্চিমাঞ্চলে ৩.৩ শতাংশ বাড়ি বিক্রি বেড়েছে।

ট্রাম্পের নীতিতে আর্থিক উদ্বেগ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে সম্ভাব্য ৫০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপের ঘোষণায় আর্থিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তিনি প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তৈরি আইফোনে ২৫ শতাংশ ট্যাক্স বসানো হতে পারে।

ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে, ডলারের দাম কমেছে এবং ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার হ্রাস পেয়েছে।

নতুন নির্মাণে অনীহা

নতুন বাড়ির মজুদ এপ্রিল মাসে সামান্য ০.৬ শতাংশ কমে ৫ লাখ ৪ হাজার ইউনিটে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি। এই হারে চলতে থাকলে, বাজারে থাকা মজুদ শেষ হতে প্রায় ৮.১ মাস লাগবে।

ন্যাশনওয়াইড-এর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বেন আয়ার্স বলেন, ‘নতুন আবাসন নির্মাণ ইতোমধ্যেই কমেছে, যার মানে ভবিষ্যতে নতুন বাড়ির সরবরাহ আরও হ্রাস পাবে। অন্যদিকে, পুরনো বাড়ির বাজারে সরবরাহ বাড়ছে, যা নতুন নির্মাণের চাহিদাকে আরও কমিয়ে দিতে পারে।’

 

সূত্র: রয়টার্স।

রাকিব

×