
ছবি: সংগৃহীত
গ্রামবাংলার চেনা চিত্র বদলে গেছে কিশোরগঞ্জের এক নিভৃত জনপদে। বিলাসবহুল দালান-কোঠায় ঠাঁসা এই গ্রাম যেন এক অনন্য নজির। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেই বদলে গেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার খয়েরপুর-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রাম।
ব্যাংকিং খাতের তথ্যমতে, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে অবস্থিত আব্দুল্লাহপুর আউটলেট শাখা বিভিন্ন সময়ে রেমিট্যান্স অর্জনে সারাদেশের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে।
এই গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে অন্তত একজন করে প্রবাসী রয়েছেন। এমনকি এমন পরিবারও আছে, যাদের সকল পুরুষ সদস্যই বিদেশে কর্মরত।
চারটি ওয়ার্ডে বিভক্ত এই গ্রামে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি পুরুষ ভোটারই বর্তমানে প্রবাসে রয়েছেন। গ্রামবাসীদের ভাষ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার ভোটার অবস্থান করছেন। শুধু ইতালিতেই রয়েছেন প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার প্রবাসী।
এ গ্রামের মানুষের মধ্যে প্রবাসে যাওয়ার প্রবণতা প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। কারও বাবা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন প্রবাসে, এখন ছেলেরা সেখানে গেছে, আবার অনেকে নাতি-নাতনীদেরও প্রবাসে পাঠানোর চেষ্টা করছেন।
তবে এ প্রবণতার কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। গ্রামটির একাধিক শিক্ষক জানান, ছেলেদের মধ্যে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার তুলনামূলকভাবে বেশি। কারণ পরিবারের সদস্যদের মতো তারাও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সাজায় বিদেশ যাওয়ার লক্ষ্যকে ঘিরে। ফলে মাধ্যমিক পর্যায়েই অনেক ছেলে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। তবে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার তুলনামূলক কম।
প্রবাসীদের অবদানে উন্নত হলেও, সরকারিভাবে এখনও ‘প্রবাসী অধ্যুষিত গ্রাম’ হিসেবে কোনো স্বীকৃতি পায়নি আব্দুল্লাহপুর। তাই গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা সরকারের কাছে স্বীকৃতি চেয়েছেন।
এ বিষয়ে খয়েরপুর-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘রাতদিন পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরানো এসব রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া দরকার। আব্দুল্লাহপুর এখন নিঃসন্দেহে একটি প্রবাসী অধ্যুষিত গ্রামে পরিণত হয়েছে।’
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=VHroj1HLs4I
রাকিব