ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

লবণ বেশি খাচ্ছেন নাকি বুঝতে পারছেন না? শরীরের এই ৫ লক্ষণেই মিলবে উত্তর!

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ১৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৫:১৬, ১৬ জুলাই ২০২৫

লবণ বেশি খাচ্ছেন নাকি বুঝতে পারছেন না? শরীরের এই ৫ লক্ষণেই মিলবে উত্তর!

ছবি: সংগৃহীত

মানবদেহে তরলের ভারসাম্য রক্ষা এবং স্নায়ুতন্ত্র সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য পরিমাণমতো লবণ প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ শরীরে নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং অতিরিক্ত প্রস্রাবের পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যা সৃষ্টি করে। বেশিরভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না যে, তারা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লবণ খাচ্ছেন, কারণ সময়ের সাথে সাথে তাদের স্বাদের অনুভূতি মানিয়ে নেয়। তবে শরীর কিছু সংকেত দেয়, যা জানালে বোঝা যায় আপনি অতিরিক্ত লবণ খাচ্ছেন কি না। নিচে এমনই ৫টি সতর্কতামূলক লক্ষণ তুলে ধরা হলো:

১. শরীরে ফোলাভাব ও পানি জমা হওয়া

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার একটি সাধারণ কিন্তু অনেক সময় উপেক্ষিত লক্ষণ হলো শরীরে ফোলাভাব বা ফুলে যাওয়া। লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে, যাকে বলা হয় ওয়াটার রিটেনশন। এর ফলে হাত, পা, গোড়ালি বা মুখে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। আঙুলে আংটি আঁটসাঁট লাগে, জুতা অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
এই ফোলাভাবের চিকিৎসা পরিভাষা হলো পিটিং ইডিমা, যেখানে ফোলা জায়গায় চাপ দিলে সেখানে দাগ বা গর্ত পড়ে থাকে — যা বোঝায় শরীর অতিরিক্ত পানি ধরে রেখেছে।

২. অতিরিক্ত পিপাসা

লবণ শরীরের কোষ থেকে পানি টেনে নেয়, ফলে ডিহাইড্রেশনের অনুভূতি হয় এবং আপনার পিপাসা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। মুখ শুকিয়ে যায়, ঠোঁট ফেটে যায় এবং পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটে না।
শরীর তখন বেশি তরল গ্রহণের সংকেত দেয় যাতে অতিরিক্ত সোডিয়ামের প্রভাব কমানো যায়। অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীর এইভাবে সতর্ক সংকেত পাঠায়।

৩. উচ্চ বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্তচাপ

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হলো উচ্চ রক্তচাপ। লবণ খেলে রক্তপ্রবাহে তরলের পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে রক্তনালির উপর চাপও বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হৃদ্‌যন্ত্রের গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় লক্ষণহীন থাকে, তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা উচিত। যদি সকালে রক্তচাপ ১৪০/৯০ mmHg বা তার বেশি হয়, তবে ধরে নেওয়া যায় আপনি অতিরিক্ত লবণ খাচ্ছেন।

৪. ওজন বেড়ে যাওয়া

যদি আপনি খাদ্যাভ্যাস বা ব্যায়ামের রুটিন না বদলিয়েও একদিনে ১-২ কেজি বা এক সপ্তাহে ২ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়তে দেখেন, তবে এর পেছনে অতিরিক্ত লবণ দায়ী হতে পারে। অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে, ফলে আকস্মিক ওজন বৃদ্ধি ঘটে।
শরীর তখন অতিরিক্ত তরল জমিয়ে সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা সাময়িকভাবে ওজন বাড়িয়ে দেয়। এটি প্রমাণ করে যে, আপনার দেহে তরল ও লবণের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে।

৫. পেটে অস্বস্তি ও গ্যাস-ব্লোটিংয়ের সমস্যা

অতিরিক্ত লবণের প্রভাব শুধু রক্ত বা তরল সিস্টেমেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং হজম প্রক্রিয়াতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি পেট ও অন্ত্র ফোলায় এবং খাওয়ার পরে অস্বস্তি, গ্যাস ও পেটে ব্যথা সৃষ্টি করে। লবণ হজমের গতি কমিয়ে দেয় এবং পাকস্থলির আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত করে।
যদি আপনি লবণাক্ত খাবার খাওয়ার পরই পেটে ফাঁপা ভাব বা হজমের সমস্যা অনুভব করেন, তবে বুঝবেন আপনার লবণ গ্রহণ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

আবির

×