
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ এখন সবচেয়ে সাধারণ এবং ক্রমবর্ধমান রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। পরিবেশগত কারণ, অনিয়মিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসকে এর জন্য দায়ী করা হয়। বিশেষত আজকের দিনে, রক্তে শর্করার মাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সুস্থ জীবনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই দুই অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সকালের শুরুতে খালি পেটে কিছু নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণ করলে দিনটি সুস্থভাবে শুরু করা যায় এবং এটি ডায়াবেটিস ও হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এখানে এমন ৬টি খাবার ও পানীয় সম্পর্কে বলা হলো, যা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে গ্রহণ করলে রক্তচাপ ও রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব:
১. আমলকি:
আমলা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর একটি ফল, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। খালি পেটে আমলা খাওয়া বিপাক ক্রিয়া বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার ওঠানামা কমায়।
২. দারুচিনি ও গোলমরিচ গুঁড়ো মিশ্রিত পানি:
দারুচিনি ইনসুলিনের প্রতি শরীরের সংবেদনশীলতা বাড়ায়, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে। গোলমরিচের পিপারিন উপাদান দারুচিনির উপকারিতা আরও বাড়ায়। খালি পেটে এই পানীয় খেলে রক্তচাপ ও রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. মেথি ভেজানো পানি:
মেথি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এতে থাকা দ্রবণীয় আঁশ রক্তে শর্করার শোষণ ধীর করে। এক চামচ মেথি রাতভর পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে এবং রক্তচাপও কমে।
৪. হলুদ ও লেবুর রস মিশ্রিত পানি:
হলুদের কারকিউমিন উপাদান ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। লেবু হজমশক্তি বাড়ায় ও যকৃত পরিষ্কার রাখে। খালি পেটে এই মিশ্রণ খেলে প্রদাহ কমে ও রক্তচাপ স্থিতিশীল থাকে।
৫. ফ্ল্যাক্সসিড (তিসি বীজ):
ফ্ল্যাক্সসিডে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতিদিন খালি পেটে ফ্ল্যাক্সসিডের গুঁড়ো পানিতে মিশিয়ে খেলে কার্বোহাইড্রেটের হজম ধীর হয় এবং রক্তে গ্লুকোজের ওঠানামা কমে।
৬. টমেটো ও বেদানার রস:
টমেটোর লাইকোপিন রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। বেদানার রস রক্তসঞ্চালন ভালো করে এবং দেহে প্রদাহ কমায়। সকালে খালি পেটে এই দুটি রস একত্রে খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
একটি সুষম, আঁশসমৃদ্ধ, কম লবণযুক্ত ও প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি সকালের খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। নিয়মিত সময়মতো খাওয়া, পানি পানে সচেতনতা এবং শারীরিক অনুশীলনের মাধ্যমে এসব রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
নোভা