
ছবিঃ সংগৃহীত
“কাবিননামা” (মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট) ছাড়া কি ডিভোর্স (তালাক) সম্ভব?—এই প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায় অনেকের মনেই। বাস্তবতা হলো, কাবিননামা না থাকলেও তালাক দেয়া যায়, তবে আইনি ও প্রমাণগত দিক থেকে প্রক্রিয়াটি কিছুটা জটিল হতে পারে।
ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে
ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বিবাহ ও তালাক—দু'টিই মৌখিকভাবেও বৈধ। অর্থাৎ:
-
স্বামী স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তালাক দিতে পারেন, এমনকি লিখিত কাবিননামা না থাকলেও।
-
তবে তালাকের ক্ষেত্রে শরিয়তের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হয়—যেমন: পরিষ্কার ও নির্দিষ্টভাবে তালাক বলা, ইদ্দত পালনের সময় গণনা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের আইনি কাঠামোতে
বাংলাদেশের বিদ্যমান মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী:
-
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন (কাবিননামা) বাধ্যতামূলক। তবে যদি তা না থাকে, সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস থেকে কাবিননামার কপি বা তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
-
তালাক কার্যকর করতে হলে স্বামীকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে তালাকনামা দাখিল করতে হয়।
-
তালাকনামা দাখিলের পর ৯০ দিন মেয়াদ শেষ হলে তালাক কার্যকর হয়।
-
কাবিননামা থাকলে পুরো প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ হয়। না থাকলে বিবাহ প্রমাণে অতিরিক্ত কাগজপত্র বা সাক্ষীর প্রয়োজন পড়ে।
সংক্ষেপে বলা যায়
-
কাবিননামা না থাকলেও তালাক দেওয়া সম্ভব। তবে আইনি স্বীকৃতির জন্য বিয়ের বৈধতা প্রমাণে প্রয়োজন হতে পারে বাড়তি নথি ও সাক্ষ্য।
-
তালাক কার্যকর করতে অবশ্যই আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা না হলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে—বিশেষ করে তালাক বা সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধে। তাই আইনজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বিয়ের সময় কাবিননামা সঠিকভাবে রেজিস্ট্রি ও সংরক্ষণ করাই উত্তম।
ইমরান