
শরীরের প্রতিটি অঙ্গই নিরলসভাবে কাজ করে যায় আমাদের সুস্থতার জন্য। কিন্তু কোনো একটি অঙ্গে সামান্য সমস্যা দেখা দিলেই তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেহে। এমনই একটি অঙ্গ কিডনি। কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীর ধীরে ধীরে নানা জটিলতায় পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেটের পাশ বা কোমরের নিচে হঠাৎ তীব্র ব্যথা অনুভব করলে সেটি কেবল গ্যাস বা পেশির টান নয়, বরং কিডনির সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীর থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত পানি ছেঁকে ফেলা। কোনো কারণে এই প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটলে যেমন পাথর জমা, সংক্রমণ বা প্রদাহ দেখা দিলে, তার প্রভাব পড়ে মূত্রনালি ও আশপাশের স্নায়ুতে। তখন কোমরের নিচ থেকে শুরু হয়ে পেটের পাশে, এমনকি নিম্নাংশ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে ব্যথা। অনেক সময় সেই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে স্বাভাবিক চলাফেরাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
বিশেষ করে কিডনিতে পাথর থাকলে ব্যথা সাধারণত হঠাৎ করেই শুরু হয় এবং তা খুব তীব্র হয়। পিঠ থেকে পেটের পাশ হয়ে নিচের দিকে গড়াতে পারে সেই যন্ত্রণা। একই সঙ্গে বমি ভাব, জ্বর, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কিংবা রক্ত দেখা যাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। সংক্রমণজনিত কিডনি সমস্যাতেও কোমরের ব্যথার পাশাপাশি জ্বর ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা যেতে পারে।
তবে পেট বা কোমরের যেকোনো ব্যথাই যে কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত, তা নয়। পেটের ব্যথা অনেক সময় হজমজনিত গোলমাল, গ্যাস, মেরুদণ্ডের ব্যথা কিংবা পেশির টানের কারণেও হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, ব্যথাটি যদি অল্প সময়ের মধ্যে সেরে যায় এবং প্রস্রাবে কোনো সমস্যা না দেখা দেয়, তবে তা কিডনি-সম্পর্কিত না-ও হতে পারে। কিন্তু যখন এই ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, বা এর সঙ্গে প্রস্রাবের অস্বাভাবিকতা যুক্ত হয়, তখন অবশ্যই তা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, শরীর যখন ব্যথার মাধ্যমে সংকেত দেয়, তখন সেটিকে অবহেলা করা উচিত নয়। কিডনির সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু উপসর্গ উপেক্ষা করলে তা ডায়ালাইসিস বা ট্রান্সপ্লান্টের মতো জটিল অবস্থায় পৌঁছাতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এই কিছু অভ্যাস মেনে চললেই কিডনিকে সুস্থ রাখা সম্ভব। তবে কোমরের নিচে ব্যথা যদি বারবার ফিরে আসে, তার সঙ্গে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, অস্বাভাবিক রঙ বা গন্ধ কিংবা অসহনীয় ক্লান্তি দেখা দেয় তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সূত্র:https://tinyurl.com/mrxcvvwh
আফরোজা