ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

adbilive
adbilive
যুক্তরাষ্ট্রে পর্দা উঠছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের

যুক্তরাষ্ট্রে পর্দা উঠছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের

ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল ৬টায় শুরু হবে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচ। তাতে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামির মুখোমুখি হবে মিসরের আল আহলি। এবারই প্রথমবারের মতো ৩২টি দল নিয়ে বিশাল পরিসরে আয়োজিত হচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ। যার নতুন ফরম্যাট ইতোমধ্যেই বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে। ফিফার নতুন ফরম্যাট অনুযায়ী, এবার অংশ নিচ্ছে ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকার সেরা ক্লাবগুলো। দলগুলোকে ৮টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপে রয়েছে ৪টি করে দল। গ্রুপ পর্ব শেষে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠবে নকআউট পর্বে, যেখানে শুরু হবে হাইভোল্টেজ লড়াই। যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো। টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৩ জুলাই, নিউ জার্সির বিখ্যাত মেটলাইফ স্টেডিয়ামে। বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোকে এক মঞ্চে দেখতে ফুটবল অনুরাগীদের মাঝে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন লিগজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি, আফ্রিকার আল আহলি, এশিয়ার আল হিলালসহ বহু পরিচিত নাম দেখা যাবে এই আসরে। ৩২টি ক্লাব নিয়ে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে সব মহাদেশের প্রতিনিধিত্ব থাকছে। শুরুর আগে এই আসর নিয়ে আলোচনার সঙ্গে সমালোচনাও জুটেছে। তবে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনোর মতে, এই বিশ্বকাপ একটি ‘ঐতিহাসিক নতুন যুগের’ সূচনা করছে। যা ১৯৩০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপের মতোই এক মাইলফলক। সাক্ষাৎকারে ইনফান্টিনো সমালোচকদেরও জবাব দিয়েছেন। যারা এই টুর্নামেন্টের প্রয়োজনীয়তা ও টিকিটিং পলিসি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি আশাবাদী, ম্যাচ শুরু হলেই সন্দেহবাদীরা উপলব্ধি করবেন এই আয়োজনের গুরুত্ব। ইনফান্টিনো বলেন, এটা ক্লাব ফুটবলের এক নতুন যুগের শুরু। অনেকটা যেমন ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল। আজ সবাই সেই প্রথম বিশ্বকাপের কথা বলে। এই ক্লাব বিশ্বকাপও তাই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ১৯৩০ সালের বিশ্বকাপে কেবল ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার দল অংশ নিয়েছিল। ফিফা প্রধান মনে করেন, এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে ফুটবলের প্রচলিত সীমার বাইরের ক্লাবগুলোকেও বিশ্বমঞ্চে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ইনফান্টিনো বলেন, আমরা সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। সুযোগ দিতে চাই বিশ্বজুড়ে থাকা ক্লাবগুলোকে। ফুটবলকে সত্যিকার অর্থেই বৈশ্বিক করতে চাই। কারণ আমরা বলি এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। কিন্তু বাস্তবে এলিট ফুটবল খুবই সীমিত কিছু ক্লাব ও দেশের মধ্যে কেন্দ্রীভূত। ২০১৬ সালে ফিফা সভাপতি হওয়ার আগে ইনফান্টিনো ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থা উয়েফার মহাসচিব ছিলেন। এই নতুন টুর্নামেন্টে ৮০টির বেশি দেশের খেলোয়াড় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক দেশ আছে যারা কখনোই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় না, তারা এবার অন্তত তাদের ক্লাব ও খেলোয়াড়দের মাধ্যমে এই আসরের অংশ হচ্ছে। এটা শুধু ক্লাবের জন্য নয়, দেশের জন্যও গর্বের বিষয়। টুর্নামেন্টের ব্যস্ত সূচি নিয়ে কিছু ক্লাব ও সমর্থক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইনফান্টিনো বলেন, আমি নিশ্চিত খেলা শুরু হলে সবাই বুঝতে পারবে এখানে  বিশেষ কিছু ঘটছে। টিকিট বিক্রি নিয়ে কিছুটা সমালোচনা উঠেছে। বিশেষ করে ‘ডাইন্যামিক প্রাইসিং’ পদ্ধতির কারণে দামের ওঠা-নামা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ বিষয়। অনেক টিকিটের দাম বেশি হওয়ায় স্টেডিয়াম ফাঁকা থাকার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। তবে ইনফান্টিনো বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। বলেন, মানুষ বলে দাম বেশি-তারা সমালোচনা করে। আবার আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য ছাড় দিলে তখনো সমালোচনা করে। আমি তো ছাত্রাবস্থায় এমন সুযোগ পেলে খুব খুশি হতাম। আমরা খালি গ্যালারি দেখতে চাই না। আমার বিশ্বাস, স্টেডিয়াম ভরেই খেলা হবে।

মানসম্মত সিনেমার অভাবে বন্ধ হচ্ছে হল

মানসম্মত সিনেমার অভাবে বন্ধ হচ্ছে হল

ঈদ কেন্দ্রিক হয়ে গেছে দেশের চলচ্চিত্র। সারা বছর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও ঈদের সময় চলচ্চিত্র মুক্তির প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তখন সিনেমা হল মালিকরাও নড়েচড়ে বসেন। ঘষে মেজে হলের সংস্কারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে কি একটা দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব? শুধুমাত্র সিনেপ্লেক্স দিয়ে কি একটি দেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেওয়া যায়? পৃথিবীর অন্য দেশ যখন চলচ্চিত্র শিল্পকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমাদের চলচ্চিত্র দিনকে দিন ধ্বংসের মুখে ধাবিত হচ্ছে। দেশের চলচ্চিত্র শিল্প সংকটকাল অতিক্রম করছে এটাই বাস্তবতা। দর্শক শূন্যতা ও ব্যবসায়িক লোকসানের মুখে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে সিনেমা হল। ঢাকার সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ৪৪টি। এর মধ্যে বড় সিনেমা হলগুলোর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি চালু আছে। ২০১৯ সালে ফিল্মপাড়া’খ্যাত কাকরাইলের রাজমণি সিনেমা হলের বাতি নিভে যায়। বর্তমানে সেখানে ২২ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মিত হচ্ছে। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজধানীর হাজার আসনের সিনেমা হল অভিসারও বন্ধ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়েছে গুলিস্তান, বিউটি, রূপমহল, নাজ, শাবিস্তান, মল্লিকা, পূরবী, স্টার, সুরমা, লায়ন, যমুনা, আগমন, ডায়না, জোনাকি, চিত্রামহল, অতিথি, মানসী, পূর্ণিমা, পদ্মা, মুন’সহ অনেক সিনেমা হল। দেশে চৌদ্দশ হলের এখন বাকি আছে দেড়শ’র মতো। বাকি হল মালিকদের মুখেও বিদায়ের সুর। কোন কোন জেলা শহরে সিনেমা হলই বিলুপ্ত। লোকশানের বোঝা বইতে না পেরে প্রযোজকরা সিনেমায় টাকা লগ্নি করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। চলচ্চিত্রের এই করুণ পরিণতির জন্য প্রযোজক-পরিচালক দায়ী করছে হল মালিকদের। অন্যদিকে হল মালিকরা অভিযোগ তুলছে মানহীন ছবিতে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আবার চলচ্চিত্র শিল্পীরা ছবি প্রদর্শনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে। চলচ্চিত্রশংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছে, এর দায় সরকারের। সিনেমা হল মালিকরা মনে করছেন, দেশে ভালো সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। যার জন্য দর্শক হলমুখী হচ্ছে না। দেশের সিনেমা হলগুলো কেন বন্ধ হচ্ছে এম প্রশ্নে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল মুধুমিতার কর্ণধার ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ জনকণ্ঠকে বলেন, মধুমিতা সিনেমা হল ঐতিহ্যের প্রতীক। কষ্ট হলেও এ ঐতিহ্যকে এখনো ধরে রেখেছি। আপাতত রবিবার থেকে আমার হলে ছবি দেখানো বন্ধ করেছি। গত ঈদে ‘বরবাদ’ দেখিয়েছিলাম। বেশ কিছুদিন দেখানোর পর এখন আর দর্শক নেই সে কারণে আপাতত বন্ধ। এই ঈদে আবার চলছে। এবার ‘তা-ব’ সিনেমা দেখাচ্ছি। সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, ভালো ছবির অভাব। ভালো কোনো কণ্টেন্ট নেই। মাত্র দুই ঈদে ছবি আসে, অন্য সময় নেই, এভাবে তো আর চলচ্চিত্র টিকে রাখা সম্ভব না। তিনি বলেন, ঈদের পরে দুই একটা ছবি এলেও খুবই নি¤œ মানের। এগুলো দর্শক দেখে না। আগে তো আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে এমন অবস্থা ছিল না। আমি মনে করি আমাদের দেশে অনেক মেধা আছে, ছবি তৈরির সামর্থ্যও আছে কিন্তু প্রডিউসাররা এখন টাকা খরচ করতে চায় না। যার ফলে হলের সংখ্যা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। পয়সা লগ্নি করলে তা আর উঠে আসে না। এখন হল টিকিয়ে রাখতে হলে সুপার-ডুপার ছবি বানাতে হবে, নচেৎ ভবিষ্যতে আরও সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাবে। সারা বাংলাদেশে সকল হল মালিকদের কষ্ট হচ্ছে। পকেটের টাকা খরচ করে হল টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে তাই অনেক সময় মাথা গরম হয়ে যায় তাই হয়তো বলে ফেলি হল রাখব না। তার মানে এই না সত্যি সেটা করছি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্ট সুদীপ্ত কুমার দাশ জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের দেশে কেন সিনেমা হল বন্ধ হচ্ছে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে কিছুটা পেছনে ফিরে যেতে হবে। আমাদের দেশে সিনেমার সোনালি দিনে হলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১২৩৫টার মতো। সর্বশেষ ১৯৯২-৯৮ অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের সিহাব অনুযায়ী হল মালিকরা রেগুলার ট্যাক্স পে করত। পরবর্তীতে এর সঙ্গে ভ্যাট যোগ করা হলো। শুল্ক ও ভ্যাট মিলে একশ তেরো শতাংশ করা হয়। যে কারণে সিনেমা হলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি আকাশ উন্মুক্ত করে দিল অর্থাৎ কোনো রকম কোনো নিয়ম নীতিমালা অনুসরণ না করেই ডিস এন্টোর মাধ্যমে টেলিভিশনে ছবি দেখার সুযোগ করে দেওয়া হলো। ১৯৯৪/৯৫ সালের দিকে এসে এটা যখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেল, সিনেমার দর্শক যারা পরিবার নিয়ে অথবা একসঙ্গে দশ পনেরো জন মিলে হলে গিয়ে নিয়মিত সিনেমা দেখত, সেই দর্শক হলে আসা বন্ধ করে দিল। কারণ, ঘরে বসে ভারতীয় অনেক জনপ্রিয় ছবি দেখার সুযোগ পেল দর্শক। ভারতীয় ছবির অনুকরণে আমাদের দেশের ছবি দেখার তেমন আগ্রহ দর্শকের ছিল না। তবে মাঝে মধ্যে হলে দর্শক আসত, যখন যে ছবিগুলো ছিল একেবারে মৌলিক ও সোশ্যাল সেন্টিমেন্টের সেগুলো ফ্যামিলি দর্শক দেখত। কিন্তু সেটার পরিমাণ একেবারেই কম। যে কারণে সিনেমা হলের ইনকাম কমতে থাকে। পাশাপাশি সরকারি ট্যাক্স আদায়ও কমতে থাকে। আমাদের কাছে যে হিসাব আছে তাতে দেখা যায়, ১৯৯৬-৯৭ সালে ট্যাক্স আদায় কমতে থাকে। ২০০০ সালে এসে একেবারে ২০ পর্সেন্টে নেমে যায়। এই অবস্থায় ২০০২ সাল থেকে সিনেমা হল বন্ধ হওযা শুরু হয়। যখন হল বন্ধ হওয়া শুরু হলো তখন আমাদের ছবিগুলোর জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিল। কারণ ডিস এন্টেনা দিয়ে যে ছবি দেখে, সেই ছবিরই রিমেক দেখে হলগুলোতে। সেই কারণে দর্শকের আকর্ষণ হলের প্রতি অনেক কমে গেল। যার ফলে এক শ্রেণির প্রযোজক ও পরিচালক এই দুর্বলতার সুযোগে নোংরা যাকে বলে অশ্লিল ছবি তৈরি শুরু করে। এতে প্রথমে কিছু ভালোগার দৃশ্য থাকত, যে অংশ সেন্সরবোর্ড কেটে দিত, সেই দুশ্যগুলো চুপচাপ প্রিন্টের সঙ্গে জুড়ে দিত। এভাবেই শুরু হলো অশ্লিল নোংরা ছবির রাজত্ব। একপর্যায়ে সরাসরি স্যুট করত অশ্লিল দৃশ্য। এগুলো ছবির সঙ্গে লাগিয়ে দিত। এই ছবিগুলো যখন সিনেমা হলে চালানো শুরু হলো, তখন ফ্যামিলি দর্শক টোটাল হল বিমুখ হয়ে গেল। এটা আমাদের চলচ্চিত্রটাকে ধস নামিয়েছে। এটাই হচ্ছে, প্রধান কারণ। এর পওে তো পাইরেসিসহ আরও কিছু কিছু বিষয় আছে। দুদিন পরেই টিভিতে দেখা যেত পাইরেটেড ছবি। লোকাল ছবিগুলো দারুণভাবে লোকসানের মুখে পড়ে যায়। এ কারণেই আমাদের এই ব্যবসাটা মুখ থুবড়ে পড়ে। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল জনকণ্ঠকে বলেন, চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরে আসছে আমরা মনে করছি। তার কারণ কিছু কিছু ছবি এখন বেশ ভালো হচ্ছে, যা দর্শককে হলমুখী করছে। তবে এটা দুই ঈদ কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি এবার ঈদে ভালো ভালো ছবি আসবে। যদি আসে তাহলে নতুন করে হলগুলো খুলবে। এ রকম যদি সারা বছর চলে তাহলে হলগুলোকে ধরে রাখা সম্ভব হবে। শুধুমাত্র ঈদের জন্য ছবি দিল প্রযোজকরা কিন্তু ঈদের পরে আর ভালো কোনো ছবি না থাকে তাহলে তো হল ধরে রাখা যাবে না। আমরা প্রযোজকদের কাছে ও পরিচালকদের কাছে অনুরোধ করব দর্শক যাতে হলে গিয়ে ছবি দেখতে পারে তারা যেন সারা বছর এ রকম ভালো ভালো ছবি তৈরি করে। আমরা হল থেকে সার্বিক সহযোগিতা করব। পাশাপাশি বলব শুধু ঈদের ছবি দিলে হবে না, সারা বছর ছবি দিতে হবে।

ভোজ্যতেল শাক-সবজির দাম কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজ-মাছের

ভোজ্যতেল শাক-সবজির দাম কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজ-মাছের

রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে এখনো ছুটির আমেজ বিরাজ করছে। সে কারণে পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় কিছু পণ্যের দাম যেমন বেড়েছে আবার চাহিদা না থাকায় কিছু পণ্যের দামও কমেছে। দাম কমার তালিকায় আছে সয়াবিন তেল, শাক-সবজি, রসুন ও মসলাপাতির দাম। আবার চাহিদা থাকায় বেড়েছে  মাছ ও পেঁয়াজের দাম। দাম বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চাল, ডাল, আটা ও চিনির মতো নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আজ শনিবার থেকে কোরবানি ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। কাল থেকে পুরোদমে সরকারি- বেসরকারি অফিসে কাজকর্ম শুরু হবে। এ কারণে যারা নাড়ির টানে গ্রামে গিয়েছিলেন ঈদ করতে, তারা আবার ফিরে এসেছেন ব্যস্ত এই নগরীতে। ফলে আজ থেকে ঢাকায় নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়বে বলে আশা করছেন সবজি ও মুদিপণ্যের ব্যবসায়ীরা। টানা দশ দিনের ছুটিতে বেশিরভাগ দোকানপাট বিশেষ করে সবজি ও মাছ-মাংসের দোকানগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ ছিল। দু-একটি যাও বা খোলা ছিল সেখানেও ক্রেতা ছিল হাতেগোনার মতো। পণ্যের সরবরাহও কম ছিল। ফলে ঢিলেঢালা ভাবে চলেছে বেচাকেনা। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতা কম থাকায় গত কয়েক দিন খুবই ঢিলেঢালাভাবে বিক্রি হয়েছে। তবে আজ শনিবার থেকে বেচাকেনা ভালোভাবে শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফার্মগেট কাঁচা বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও মিরপুর সিটি করপোরেশনের কাঁচা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। কোরবানির ঈদের আগে হঠাৎ বাজারে শসা, কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। মূলত ওই সময় এসব পণ্যের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছিল। তবে ঈদের পরে সেই দাম কমেছে। শুক্রবার প্রতি কেজি শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে শসার কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কোথাও এর চেয়ে বেশি দামেও শসা বিক্রি হয়েছিল। বাজারে  প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়, যা ঈদের আগে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা ছিল। সালাদ পণ্যের মধ্যে টমেটোর দাম এখনো বেশি রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়, যা ঈদের আগেও একই ছিল। বাজারে অন্যান্য সবজির দামও স্থিতিশীল রয়েছে। অধিকাংশ সবজিই ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যেমন- লাউ, পেঁপে, পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল প্রভৃতি সবজি ৪০-৫০ টাকায় এবং বরবটি, ঢেড়স, কাকরোল, করোলা, বেগুন প্রভৃতি সবজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০-২২ টাকা ও পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কোরবানি ঈদের পর পর বাজারে গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম। এ কারণে মাংসের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও কম দেখা গেছে। ঈদের আগে মুরগির দাম বেড়েছিল, সেটি কমেছে। তবে গরু ও খাসির দাম আগের মতোই রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে এই দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি ছিল। আর ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের মতোই ডজন ১৩০ টাকা রয়েছে। মাছের বাজারেও কমসংখ্যক বিক্রেতা দেখা গেছে। মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, পুরোদমে দোকানপাট খুললেও মাছের সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম আবার কমে আসবে। প্রতি কেজি ইলিশ মাছ কিনতে ১৮শ’ থেকে দুই হাজার গুনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। জাত ও মানভেদে চিংড়ি ৮০০-১৫০০ টাকা  বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি। এ ছাড়া পুঁটি, টেংড়া ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ ও অন্যান্য মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।