
ছবি:সংগৃহীত
প্রযুক্তি জগতের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি এলন মাস্ক এবার স্বীকার করেছেন—কনজারভেটিভ রাজনৈতিক সমাবেশে তাঁর চেনস হাতে স্টেজে ওঠার সেই ‘ড্রামাটিক’ স্টান্টটা আসলে অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল। তাঁর ভাষায়, “এতে সহানুভূতির অভাব ছিল।”
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে CPAC (কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্স)–এ মাস্ক মঞ্চে চেনস হাতে হাজির হন। পাশেই ছিলেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জ্যাভিয়ার মাইলেই। ওই চেনসটা ছিল মূলত প্রতীকী—মার্কিন সরকারের বাজেট কাঁটছাঁট করার বার্তা দেওয়ার জন্য। সে সময় মাস্ক ছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের ‘Department of Government Efficiency’ (সংক্ষেপে DOGE) প্রধান। বাজেট কাটছাঁটের পক্ষে তাঁর কণ্ঠ ছিল সবচেয়ে জোরালো।
"মাইলেই আমাকে দিয়েছিল… আমি একটু বেশি এগিয়ে গিয়েছিলাম"
সম্প্রতি এক্স–এ (আগের টুইটার) এক ব্যবহারকারী মাস্কের সেই স্টান্টকে "উন্মাদনা" বলে কটাক্ষ করলে মাস্ক নিজেই জবাব দেন:
“মাইলেই আমাকে ব্যাকস্টেজে চেনসটা দিয়েছিল। আমি সেটা নিয়ে মঞ্চে চলে গেলাম। কিন্তু এখন বুঝি, এতে সহানুভূতি ছিল না।”
তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, এখনকার দৃষ্টিতে দেখে সেটা হয়তো দায়িত্বশীল আচরণ ছিল না।
ট্রাম্প-মাস্ক: এক সময়ের বন্ধু, এখন প্রতিপক্ষ
মাস্ক ও ট্রাম্পের সম্পর্ক এখন খারাপের দিকেই। এক সময় তাঁরা খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন, কিন্তু মাস্ক যখন DOGE থেকে পদত্যাগ করেন এবং ট্রাম্পের নতুন অর্থনৈতিক বিলের সমালোচনা শুরু করেন—সবকিছু বদলে যায়। সেই বিলটিতে সামাজিক কল্যাণে বাজেট কাটছাঁটের প্রস্তাব রয়েছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ৩ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
গত মঙ্গলবার ট্রাম্প এক সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দেন—মাস্ককে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে এবং তাঁর কোম্পানিগুলোর ওপর সরকারি সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
মাস্কের প্রতিক্রিয়া?
“এটা বাড়িয়ে দেওয়ার খুব লোভ হচ্ছে… খুবই। তবে আপাতত আমি নিজেকে সংযত রাখছি।”
"নতুন রাজনৈতিক দল দরকার"
ট্রাম্পের সঙ্গে এই দ্বন্দ্বের পর, মাস্ক এখন স্পষ্ট করে বলেছেন—তিনি ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান দুই দলেই আস্থা হারিয়েছেন। এক্স–এ তিনি ঘোষণা দেন:
“এখন সময় এসেছে এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গড়ার, যারা সত্যিকার অর্থে জনগণের কথা ভাবে।”
তিনি আরও বলেন, যেসব রিপাবলিকান নেতারা ট্রাম্পের "এক বিশাল, সুন্দর বিল"–কে সমর্থন করছেন,
“তাদের আমি আগামী নির্বাচনে হারাতেই চাই—এটা যদি জীবনের শেষ কাজও হয়, তবু করব।”
এলন মাস্ক এখন বুঝছেন, রাজনীতির মঞ্চে ‘শো’ করার জন্য চেনস হাতে বেরিয়ে পড়াটা হয়তো একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল। নিজের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি এখন রাজনীতির আরও মানবিক এবং দায়বদ্ধ রূপ দেখতে চাইছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দূরত্বও বাড়ছে, আর মাস্ক ভাবছেন—সময় এসেছে আমেরিকান রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার।
মারিয়া