
ছবি: সংগৃহীত
ইসরাইলের ১৩ জুনের হামলার পরপরই হরমুজ প্রণালী বন্ধের পরিকল্পনা করেছিল ইরান। পারস্য উপসাগরে মাইনভর্তি জাহাজ পাঠিয়েছিল দেশটির সামরিক বাহিনী। যদিও শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে, ফলে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, দুই মার্কিন কর্মকর্তার গোপন সূত্রের বরাতে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইলের প্রথম দফা হামলার পরই ইরানের সামরিক বাহিনী ব্যাপক কৌশলগত প্রস্তুতি নেয় হরমুজ প্রণালী বন্ধের জন্য। এর অংশ হিসেবে পারস্য উপসাগরে মাইনভর্তি নৌযান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় তেহরান। সেই জাহাজগুলো প্রণালীর খুব কাছাকাছি পৌঁছেও যায়।
যদিও মাইন মোতায়ন করা হয়নি, কিন্তু গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ইরান এ সিদ্ধান্তকে খুব গুরুত্বের সাথেই বিবেচনা করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রকে কৌশলগত বার্তা দিতে চেয়েছিল ইরান, এমনটাই মনে করছে ওয়াশিংটন।
মাইনবাহী জাহাজ পাঠানোর খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বৈশ্বিক বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো এবং সংঘাতের মাত্রা আরো বেড়ে যেত।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারত। কারণ, এই প্রণালী দিয়েই প্রতিদিন প্রায় *২১ মিলিয়ন ব্যারেল জ্বালানি তেল* পরিবহন হয়। যা বিশ্বের মোট জ্বালানি সরবরাহের প্রায় *২০ শতাংশ*। এতে সামান্য বিঘ্ন ঘটলেও বিশ্ববাজারে হুহু করে বেড়ে যেতে পারে তেলের দাম।
রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা ‘সুপ্রিম কাউন্সিল’ সেই পথে না হেঁটে সংযম দেখায়। অতীতে ইরান একাধিকবার হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল, তবে এবার পরিস্থিতি ছিল আরও ঘোরালো।
তিনটি মহাদেশের সংযোগস্থলে অবস্থিত হরমুজ প্রণালীকে ধরা হয় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম ও কৌশলগত নৌপথ হিসেবে। সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত, কাতার, ওমান এবং ইরান থেকে রপ্তানি হওয়া জ্বালানি তেলের বড় অংশই এই পথ দিয়ে যায়। ফলে এই প্রণালীর নিরাপত্তা প্রশ্নে সামান্য ঝুঁকিও বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা তৈরি করে।
ছামিয়া