
বস্ত্র ও পোশাক খাতের জন্য স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় চায়
বস্ত্র ও পোশাক খাতের জন্য স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় চায় তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। পোশাক শিল্পকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে না রেখে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা হলে প্রয়োজনীয় সেবা আরও সহজ হবে বলে মনে করছেন তারা। পাশাপাশি রপ্তানি আয় আরও বাড়বে বলে মত দেন সংগঠনের নেতারা। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বিজিএমইএর তরফে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে ।
সম্প্রতি বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের বৈঠকে এসব কথা উঠে আসে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান দেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অসামান্য অবদানের প্রশংসা করেন। পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব জোরদার করার পাশাপাশি বিডা সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন তিনি।
ওই বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, উচ্চ ব্যাংক সুদ এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘন ঘন মূল্য বৃদ্ধি পোশাক শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিল্পকে এগিয়ে নিতে বিডার সহযোগিতা প্রয়োজন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিজিএমইএ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান ও পরিচালক সামিহা আজিম। বিডা ও বেজার কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী সদস্য মো. মোখলেসুর রহমান এবং বেজার নির্বাহী সদস্য সালেহ আহমেদ। আলোচনায় বিজিএমইএ সভাপতি চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাক কারখানাগুলোকে টিকিয়ে রাখতে বন্দর নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা কারখানাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে সমন্বিত পোশাক শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন।
তিনি চট্টগ্রামে বিজিএমইএর অনুকূলে প্রতীকী দামে একখন্ড জমি বরাদ্দের জন্য বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। নির্বাহী চেয়ারম্যান বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বিজিএমইএ ও বিডা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের কথা জানান। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে একটি কর্ম-পরিকল্পনা পেশ করবে।
এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও রিসাইক্লিং শিল্পে বিনিয়োগ বিষয়ে সাসটেইনেবিলিটি ও সার্কুলারিটি বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন বিজিএমইএ নেতারা। তারা জানান, পোশাক শিল্পে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার অপরিহার্য। পোশাক কারখানায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে জ্বালানি রূপান্তর উৎসাহিত করতে এ ব্যাপারে পথনক্সা প্রণয়ন এবং কারখানাগুলোকে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। পোশাক শিল্পে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
এ খাতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে হলে যথাযথ নীতি প্রণয়ন, খাতকে করমুক্ত করা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের তদারকির আওতায় আনা জরুরি। অলোচনায় অন্য প্রসঙ্গের মধ্যে ঋণ শ্রেণিকরণ নীতিমালায় বর্তমান ৩ মাসের রেয়াত কালকে ৬ মাসে উন্নীত করার অনুরোধ জানান তারা।