
আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠোর পরিশ্রমী একটি অঙ্গ হল লিভার। এটি রক্ত থেকে টক্সিন ছেঁকে ফেলা, পিত্তরস (বাইল) তৈরি, বিপাক নিয়ন্ত্রণসহ আরও বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, এই পরিশ্রমী অঙ্গটিই বর্তমানে নানা কারণে আক্রান্ত হচ্ছে নানা ধরনের রোগে যার বেশিরভাগই অজ্ঞাতে এগিয়ে গিয়ে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অলস জীবনযাপন, অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ ও কিছু ভাইরাল সংক্রমণ এসবই লিভারের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তবে সুখবর হল, প্রাথমিক অবস্থাতেই যদি লক্ষণগুলো শনাক্ত করা যায়, তাহলে মারাত্মক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। নিচে তুলে ধরা হলো লিভার ডিজিজের সাতটি প্রথমদিকের লক্ষণ, যা কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়—
১. জন্ডিস (চোখ-মুখ হলুদ হওয়া)
লিভারের সমস্যায় সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া। এটি মূলত বিলিরুবিন নামক পদার্থের অতিরিক্ত জমার কারণে হয়।
২. সবসময় ক্লান্তি লাগা
বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই শরীরে দুর্বলতা বা অস্বাভাবিক রকমের ক্লান্তি অনুভব করা লিভার বিকলের প্রথম লক্ষণ হতে পারে।
৩. ঘন ঘন বমি বা বমি ভাব
লিভার যদি শরীরের টক্সিনগুলো ঠিকভাবে ছেঁকে ফেলতে না পারে, তাহলে বমি কিংবা বমি বোধ তৈরি হয় বারবার।
৪. ক্ষুধামান্দ্য ও ওজন কমে যাওয়া
লিভার হজমপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। সে কাজ ঠিকমতো না হলে ক্ষুধা কমে যায়, ওজনও কমতে থাকে।
৫. গা গা বা গা গা ধরনের গা চুলকানো
লিভার বিকলে শরীরে পিত্ত লবণ জমে যায়, যা ত্বকে চুলকানি তৈরি করে।
৬. মূত্রের রং ঘন হলুদ বা বাদামি হওয়া
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে বিলিরুবিন প্রস্রাবে জমে গিয়ে রঙ অস্বাভাবিক গাঢ় হয়ে যায়।
৭. পেট বা পায়ে পানি জমা (সোয়েলিং)
লিভার ড্যামেজে রক্তনালিতে চাপ বেড়ে গিয়ে পেটে (অ্যাসাইটিস) বা পায়ে (এডিমা) ফ্লুইড জমে ফুলে ওঠে।
লিভার রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে অনেক সময় অন্য সাধারণ অসুস্থতা বলে মনে করা হয়। এতে মূল রোগটি অবহেলায় বেড়ে গিয়ে পরবর্তীতে সিরোসিস বা লিভার ফেইলিওরের মতো মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে।
মিমিয়া