ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ওষুধ নয়, প্রাকৃতিক এই এক উপায়েই গ্যাস্ট্রিক থেকে মিলবে তাৎক্ষণিক আরাম!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২ জুলাই ২০২৫

ওষুধ নয়, প্রাকৃতিক এই এক উপায়েই গ্যাস্ট্রিক থেকে মিলবে তাৎক্ষণিক আরাম!

ছবি: সংগৃহীত

বুক জ্বালা, পেটে অস্বস্তি, খাবার খাওয়ার পর অম্বলের যন্ত্রণায় ভোগেননি এমন মানুষ খুব কমই আছে। অফিস, বাসা বা রাস্তায়—গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা যেন এখন নিত্যসঙ্গী। অথচ প্রতিদিনের একটি সহজ অভ্যাস এই সমস্যা থেকে দিতে পারে প্রাকৃতিক ও কার্যকর সমাধান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করলেই এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে। এটি হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় করে, পাকস্থলীতে জমে থাকা অতিরিক্ত অ্যাসিডকে পাতলা করে দেয় এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

একজন পুষ্টিবিদ লাবণী আক্তার বলেন, “খালি পেটে গরম পানি পান করা শুধু গ্যাস্ট্রিকই নয়, কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমের সমস্যা এবং মেদ বাড়ার প্রবণতাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এটি অত্যন্ত কার্যকর একটি ঘরোয়া অভ্যাস।”


কেন উপকারী কুসুম গরম পানি?

গরম পানি পাকস্থলীতে থাকা অ্যাসিডকে স্বাভাবিক মাত্রায় আনতে সাহায্য করে। এটি হজমে সহায়তা করে, গ্যাস কমায় এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে। অনেক সময় রাতে ভারী খাবার খাওয়ার পর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। সকালে গরম পানি খেলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়, পাকস্থলীর ভার হালকা হয় এবং সারাদিন হজম ভালো থাকে।

গরম পানি নার্ভ সিস্টেমকে শিথিল করে। মানসিক চাপ থেকেও অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক হয়। এক্ষেত্রে গরম পানি মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়, ফলে পাকস্থলীর কার্যকারিতাও ঠিক থাকে।


বাড়তি উপকারিতাও মিলবে

এই পানীয় শুধু গ্যাস্ট্রিক কমায় না, বরং শরীরের আরও অনেক উপকার করে। যেমন—
1. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
2. ত্বক উজ্জ্বল করে
3. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
4. ঠান্ডা-কাশির উপশম ঘটায়
5. রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
6. মেদ কমাতে সাহায্য করে


কিভাবে খাবেন?

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। পানি যেন খুব গরম না হয়, ঠোঁটে লাগিয়ে সহনযোগ্য উষ্ণতাই যথেষ্ট। চাইলে এতে এক চামচ মধু বা এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে, যা গ্যাস্ট্রিক কমানোর পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়ক।


চিকিৎসকের পরামর্শ

পুষ্টিবিদ ও গ্যাস্ট্রিক বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন—ওষুধের আগে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাই গ্যাস্ট্রিকের স্থায়ী সমাধান। এক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি সবচেয়ে নিরাপদ ও প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে।

তবে যদি আপনার আলসার বা দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে, তাহলে গরম পানি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।


এখনকার দিনে গ্যাস্ট্রিক একটি সাধারণ কিন্তু বিরক্তিকর সমস্যা। চিকিৎসা ছাড়াও শুধু দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন করে এসিডিটি ও অম্বলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি খাওয়ার এই ছোট অভ্যাস আপনার হজম, ত্বক, ওজন এবং সার্বিক স্বাস্থ্যে এনে দিতে পারে চমকপ্রদ পরিবর্তন।

ওষুধ নয়—এই এক গ্লাস পানি দিয়েই শুরু হোক এসিডিটির বিরুদ্ধে আপনার প্রতিদিনের যুদ্ধ!

Mily

×