ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

ব্যাংক একীভূত মানেই ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়

ব্যাংক একীভূত মানেই ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকগুলো থেকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। বর্তমানে ওই সকল ব্যাংক চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে। এই সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে ৫টি ইসলামী ব্যাংকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একীয়ভূতকরণের চেষ্টা চলছে। আমানতকারীদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জনকন্ঠকে জানান, দুর্বল ব্যাংকগুলোর সংস্কার বা একীয়ভূতকরণের বিষয়ে আতঙ্কিত  হওয়ার কোনো কারণ নেই। ব্যাংক মার্জার বা একীয়ভূতকরণ মানেই ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়। আগে একা চলতাম এখন অন্যজনকে সঙ্গে নিয়ে চলছি। তখন ওই ব্যাংকটি কিন্তু আরও দ্বিগুণ শক্তিশালী হবে।   তিনি বলেন, একজন গ্রাহক যে ব্যাংকে আমানত জমা রাখে সে কিন্তু ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিকে তা কিন্তু জানার চেষ্টার করে না। তাই গ্রাহকদের বলব, আপনাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আপনাদের সঙ্গে আছে। আপনাদের আমানত সুরক্ষিত থাকবে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, বেসরকারি খাতের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে খুব শীঘ্রই একীভূত করা হবে। সবগুলোকে মিলিয়ে একটি ব্যাংক করা হবে। তবে এই ব্যাংকগুলোর কর্মীদের আপাতত চাকরি হারানোর ভয় নেই। আমানতকারীদেরও কোনো ভয় বা শঙ্কা নেই। একীয়ভূতকরণ হলে ব্যাংকগুলো আরও শক্তিশালী হবে।  জানা যায়, চলতিবছরের শেষের দিকে এই নতুন ব্যাংকের উদ্বোধন করা হবে। ব্যাংকটির নাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। নতুন আইনে নতুন নিয়মে করা ব্যাংকটির ডিপোজিটরদের জন্য থাকছে ব্যাপক সুযোগ সুবিধা। সরকারের পক্ষ থেকে থাকছে ২০ হাজার  কোটি টাকা ক্যাপিটাল সুবিধা। তবে প্রথম ধাপে ১০ কোটি টাকা। পরের ধাপে বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে।     বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, আর্থিক সংকটে পড়া পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের সম্মিলিত আমানত ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা, অথচ বিনিয়োগ ছাড়িয়ে গেছে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি এর মধ্যে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা খেলাপি, যা মোট ঋণের ৭৬ শতাংশ। ইউনিয়ন ব্যাংকের খেলাপি ৯৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে ৯৭, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৯৫, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ৬২ এবং এক্সিম ব্যাংকে ৪৮.২০ শতাংশ। ৭৭৯টি শাখা, ৬৯৮ উপশাখা, ৫১১টি এজেন্ট আউটলেট, ৯৭৫ এটিএম বুথ এবং ১৫ হাজারের বেশি জনবল নিয়ে এই পাঁচ ব্যাংক এখন বিশাল এক দায় ও ঝুঁকির পাহাড়ে দাঁড়িয়ে। ব্যাংকগুলোর একীভূত করার বিষয়ে গভর্নর বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রয়োজনে শাখাগুলো স্থানান্তর করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহরে বেশি, সেসব ব্যাংককে গ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।  নির্বাচনের সঙ্গে ব্যাংক মার্জারের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করব পরবর্তী সরকার এসে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মার্জার করা হবে।  এছাড়া অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সংকটে পড়া আরো ১১ ব্যাংকের সম্পদের গুণগত মান যাচাইয়ে (অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ- একিউআর) উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বিদেশি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ধারা একিউআর করা হবে।  ব্যাংকগুলো হলো- এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স, আল আরাফাহ্, আইএফআইসি, ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা, ন্যাশনাল, এনআরবি, এনআরবিসি, প্রিমিয়ার ও ইউসিবি ব্যাংক। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে গত সরকারের আমলে ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ছিল বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের হাতে। এস আলম ইসলামী ব্যাংক থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছেন বলে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক তদন্তে উঠে এসেছে। গত মে মাসে দুর্বল ব্যাংক নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি হয়। এই অধ্যাদেশের আলোকে আগামী জুলাই থেকে শুরু করে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে একীভূতকরণের প্রথম ধাপের প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ সময় ব্যাংকগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঁচটি টিম।  এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জনকন্ঠকে বলেন, আরো কিছু ব্যাংকের সম্পদের গুণগত মান যাচাই করা হবে। সম্পদ মান যাচাই করা মানে একীভূত নয়। আসলে ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান কী অবস্থায় আছে তা দেখার জন্য একিউআর করা। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন  বলেন, আমরা শুনেছি এই ব্যাংকগুলো থেকে আমানতকারিরা টাকা তুলে নিচ্ছে, এটি উদ্বগের বিষয়। আপাতত দৃশ্যমান কিছু কাজ করে গ্রাহকদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

অর্থনীতি বিভাগের সব খবর

লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১ লাখ কোটি টাকার রেকর্ড রাজস্ব ঘাটতি

লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১ লাখ কোটি টাকার রেকর্ড রাজস্ব ঘাটতি

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এ অর্থবছরে ৪.৬৩ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। অর্থবছরের শুরুতে মূল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪.৮০ লাখ কোটি টাকা। এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে ধীরগতি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন কমে যাওয়া এবং অর্থবছর শেষে এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলন ও কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে এই ঘাটতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বড় অঙ্কের এই রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ হলো মাত্রাতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। তবে তারা এ-ও বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের কারণে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও তা এতটা কমে যাওয়ার কথা ছিল না। এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেন, তারা এখনো পূর্ণাঙ্গ হিসাব পাননি। আমরা আশা করছি, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ৩.৭০ লাখ কোটি টাকা হবে। কিন্তু ৩.৮০ লাখ কোটি টাকা আদায় হওয়ার কথা ছিল।  তবে ৩.৭০ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় ধরলেও প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি দাঁড়ায় প্রায় ১.১০ লাখ কোটি টাকা। আর কমিয়ে আনা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ ঘাটতি প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। অবশ্য রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমত্রার তুলনায় বড় ব্যবধান হলেও গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক চুক্তির সম্ভাবনা

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক চুক্তির সম্ভাবনা

দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চুক্তির খসড়াও তৈরি হয়েছে, যা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে আগামী ৩ ও ৪ জুলাই। চুক্তি হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের হার কিছুটা কমবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ওয়াশিংটন যাবেন। একই বিষয়ে ২৬ জুন যুক্তরাষ্ট্র সফররত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান ইউএসটিআরের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। ইউএসটিআরের সঙ্গে আগামী বৈঠকেও খলিলুর রহমান উপস্থিত থাকবেন। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি করার দ্বারপ্রান্তে আছি ঠিক, তবে এটা শর্ত সাপেক্ষে।

জুলাই অভ্যুত্থানের আবেগেই রেমিটেন্সে জোয়ার

জুলাই অভ্যুত্থানের আবেগেই রেমিটেন্সে জোয়ার

দেশ প্রেমিক প্রবাসীরা জুলাই অভ্যুত্থানকে সম্মান জানিয়ে তাদের স্মৃতি বুকে ধারণ করে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠায়। যে কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে। দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে শহীদ ও আহত ভাইদের উৎসর্গ করে প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ।  বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো একক অর্থবছরে এত বেশি রেমিটেন্স দেশে আসেনি। সেই সঙ্গে এই প্রথম বাংলাদেশ রেমিটেন্স তথা প্রবাসী আয়ে ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলন অতিক্রম করেছে। এই রেকর্ড রেমিটেন্সে দেশের রিজার্ভ একটি সুসংহত অবস্থার দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জনকণ্ঠকে বলেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের ধারা অনেকটাই ইতিবাচক। ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ৩০ হাজার ২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এসেছে ২৩ হাজার ৯১২ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।  তিনি বলেন, আপনারা জানেন যারা প্রবাসী তারা বেশিরভাগ বয়সে অনেক তরুণ। তারা দেখে যারা আমার চেয়ে কম বয়সী দেশের গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করেছে। এদের মধ্যে অনেকে পঙ্গু হয়েছে। অনেকে চোখ হারিয়েছেন তাদের আত্মত্যাগের কাছে আমরা কিছুই না। প্রবাসীরা অনেকেই কায়িক পরিশ্রমী। এর পরেও তারা এই ভেবে যে আমরা দেশে থাকলে হয়তো তাদের মতোই রাজপথে থেকে আন্দোলন করতাম। এই কাজ হয়তো আমাদের করতে হচ্ছে না। আমাদের তো আর গুলির ভয় নেই। জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ভাইদের উৎসর্গ করে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে সঠিক ওয়েতে রেমিটেন্স পাঠিয়ে কিছুটা হলেও দায়িত্ব পালন করছে বলে মনে করেন তিনি।    বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, শুধু চলতি জুন মাসের ১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত ২৮১৮ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় (২৫৩৯ মিলিয়ন ডলার) তা ১১ শতাংশ বেশি। গত ২৯ জুন একদিনেই দেশে এসেছে ১৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রবাসীদের আস্থার প্রতিফলন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকদের মতে, বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রেরণে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগ, হু-ি প্রতিরোধে কড়াকড়ি এবং প্রণোদনার বাস্তবায়ন রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিটেন্স প্রবাহ শুধু প্রবাসী পরিবারের আয় বাড়ায় না বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখে। এদিকে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে। ডিজিটাল চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজ হওয়ায় এখন অনেকেই হু-ি এড়িয়ে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল বেছে নিচ্ছেন। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিপুল রেমিটেন্স এলেও এখনো বড় অঙ্ক অবৈধ পথে চলে যাচ্ছে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে বৈদেশিক শ্রমবাজারে ৯ লাখ ৬ হাজার ৩৫৫ জন কর্মী যুক্ত হয়েছেন। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশে পাঠানো জনশক্তির অঙ্ক ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৭ জন। এই বিপুল জনশক্তির অর্জিত আয় বৈধপথে দেশ আনতে পারলে বাৎসরিক রেমিটেন্সের অঙ্ক ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেত। রেমিটেন্স আয়ের দিক থেকে ২০২৪ সালে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশে সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। শীর্ষে ছিল ভারত। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের একটি ব্লগের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। ভারত ২০২৪ সালে ১২৯ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে। যা যেকোনো দেশের এক বছরে পাওয়া সর্বোচ্চ রেমিটেন্স।  এ ছাড়া, গত বছর বৈশ্বিক রেমিটেন্সের মধ্যে ভারত একাই নিয়ে গেছে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এই অঙ্কও চলতি শতকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। গত বছর রেমিটেন্স অর্জনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল মেক্সিকো। প্রবাসীরা দেশটিতে ৬৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। তৃতীয় স্থানে থাকা চীনা প্রবাসীরা নিজ দেশে পাঠিয়েছেন ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। চতুর্থ স্থানে ফিলিপাইন। প্রবাসীরা দেশটিতে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। পঞ্চম স্থানে ফ্রান্স। দেশটির প্রবাসীরা গত বছর মোট ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। তালিকার ষষ্ঠ স্থানে আছে পাকিস্তান।