
রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় সাড়ে আট শতাংশ বেড়ে ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে
সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় সাড়ে আট শতাংশ বেড়ে ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বুধবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে এই তথ্য জানা গেছে। তবে ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, জুনে মাসিক রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় সাড়ে সাত শতাংশ কমে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, জুনে ঈদুল আজহার কারণে কারখানাগুলোতে দীর্ঘ ছুটি ছিল। তা না হলে রপ্তানির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারত। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে রপ্তানি কমেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান আরও জানান, জুনের শেষ দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি ও আন্দোলনের কারণেও রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে।
এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসে কারখানাগুলোতে ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি এবং মাসের শেষে দুই দিন বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে রপ্তানি আয় ৬ শতাংশের বেশি কমেছে। তবে পুরো অর্থবছর মিলিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি আয় প্রায় ৯ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্র অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই ২০২৪ জুন ২০২৫) জুন মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় কমে গেছে। তবে পুরো অর্থবছরে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি করে প্রায় ৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ছিল ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে, এপ্রিলের খানিকটা ধীরগতির পর মে মাসে আবারও গতি ফিরেছিল দেশের পণ্য রপ্তানিতে। চলতি অর্থবছরের মে মাসে পণ্য রপ্তানিতে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছিল ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫২ শতাংশ, পোশাক খাতে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ, প্ল্যাস্টিক পণ্যে ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ, হোম টেক্সটাইলে ২ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রবদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে পাটজাত পণ্যে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, কাঁচজাত পণ্যে ৩৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কারখানাগুলোতে ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি এবং মাসের শেষে এনবিআরের শাটডাউনে দুইদিন বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে জুন মাসে রপ্তানি আয় সাড়ে ৭ শতাংশের বেশি কমেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। মে মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছিল ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। ইপিবি পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, গত জুনে রপ্তানি হয়েছে ৩৩৪ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি গতবছরের জুনের তুলনায় সাড়ে ৭ শতাংশ কম। গতবছরের জুনে রপ্তানি হয়েছিল ৩৬১ কোটি ডলারের পণ্য। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, গত জুনের প্রথম সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল আজহায় দীর্ঘ ছুটির কারণে পণ্য রপ্তানি হয়নি। আবার মাসের শেষ দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে ২৬ ও ২৭ জুন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। মূলত এই দুই কারণে জুনে পণ্য রপ্তানি কমেছে।