ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এই ৪টি প্রশ্নেই ধরা পড়বে আপনার সম্পর্ক টিকবে কি না!

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ২০ মে ২০২৫

এই ৪টি প্রশ্নেই ধরা পড়বে আপনার সম্পর্ক টিকবে কি না!

একটি সম্পর্কে ভালোবাসা থাকলেই চলবে না,টিকে থাকার মতো ভিত শক্ত কিনা, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। আর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতেই যুক্তরাষ্ট্রের মনোচিকিৎসক জর্ডান ট্র্যাভার্স ও তাঁর স্বামী মনোবিজ্ঞানী মার্ক ট্র্যাভার্স তৈরি করেছেন চারটি সহজ কিন্তু গভীর প্রশ্ন।

এগুলো এমন প্রশ্ন, যা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রথম উত্তেজনায় আমরা অনেক সময় এড়িয়ে যাই। কিন্তু একজন সঙ্গী ঠিক কিনা বা এই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না,তা বোঝার জন্য এগুলো দারুণ কার্যকর বলে মনে করেন ট্র্যাভার্স দম্পতি।

নিচে সেই ৪টি প্রশ্ন তুলে ধরা হলো। নিজেকে একবার প্রশ্ন করে দেখুন, আর বোঝার চেষ্টা করুনআপনার সম্পর্ক কতটা দৃঢ়।
১. আপনারা যদি জুটি না হতেন, তবুও কি ভালো বন্ধু হতে পারতেন?
এই প্রশ্নটি মূলত সম্পর্কের গভীর বন্ধুত্বের ভিত্তি যাচাই করে। সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আগেই যদি আপনারা একে অপরকে বন্ধু হিসেবে চিনতেন, তবে সেটা অনেক বড় ইতিবাচক দিক।
কারণ, ট্র্যাভার্স বলেন, ‘‘একটি সুস্থ সম্পর্কে বন্ধুত্ব থাকা জরুরি। কারণ কোনো সম্পর্কই সবসময় মসৃণ হয় না। ওঠানামা থাকবেই। কিন্তু যদি আগে থেকেই বন্ধুত্ব থাকে, তাহলে সেই সম্পর্কের ভিত অনেক শক্ত হয়।’’
যদি ‘না’ হয় উত্তর?
তাহলে ভাবুন,আপনি কী কারণে এই মানুষটিকে বেছে নিয়েছেন? শুধুই আকর্ষণ? তাহলে সেটা প্রেম নয়, হতে পারে শুধু মোহ বা ‘ইনফ্যাচুয়েশন’।
আর যদি মনে হয়ে থাকে ‘ভালোবাসা প্রথম দেখাতেই’, তাহলে সেই কল্পনার সঙ্গে বাস্তব জীবন কতটা মিলবে—সেটাও ভাবা জরুরি।

 

২. সঙ্গীর সঙ্গে থাকলে কি আপনি নিজেকে আরও ভালোভাবে অনুভব করেন?
ভালোবাসা তখনই পরিপূর্ণ, যখন সেটা আপনাকে আরও ভালো মানুষ করে তোলে। ট্র্যাভার্সের ভাষায়, “সুস্থ সম্পর্ক আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস, ইতিবাচকতা, সহানুভূতি ও বাস্তবতা এনে দিতে পারে।”
এটা মনোবিজ্ঞানে ‘মাইকেলেঞ্জেলো ফেনোমেনন’ নামে পরিচিত,যেখানে সঙ্গীরা একে অপরকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সহায়তা করেন।
যদি ‘না’ হয় উত্তর?
তাহলে ভাবুন আপনার সঙ্গী কি আপনার উন্নতির পথে বাধা? তিনি কি আপনাকে ছোট করেন, নিরুৎসাহিত করেন, কিংবা সবকিছুতে নেতিবাচকতা দেখান?


৩. যদি জানতেন আপনার সঙ্গী কখনও বদলাবেন না, তবুও কি তাঁর সঙ্গে থাকতে চাইতেন?
অনেকেই বিশ্বাস করেন, ‘সময় গেলে আমি তাঁকে আমার মতো করে বদলে ফেলব।’ কিন্তু ট্র্যাভার্স বলেন, “এটা এক ধরনের ভুল ধারণা। আপনি কাউকে বদলে ফেলার ক্ষমতা রাখেন না।”
প্রকৃত ভালোবাসা তখনই হয়, যখন আপনি সঙ্গীকে ঠিক যেমন তিনি, সেই রূপেই গ্রহণ করেন।
যদি ‘না’ হয় উত্তর?
তাহলে সম্ভবত আপনি মনের অজান্তেই এমন একজনকে ভালোবাসার চেষ্টা করছেন, যিনি আপনার প্রত্যাশায় ফেল করছেন। এমন সম্পর্ক নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবাই ভালো।


৪. কোনো ভালো খবর পেলে প্রথমে কি সঙ্গীকেই বলতে মন চায়?
এটা একটি সম্পর্কের শক্ত ভিত বোঝার অন্যতম নিদর্শন। গবেষণা বলছে, এই অনুভূতি ‘ক্যাপিটালাইজেশন’ নামে পরিচিত, যা একে অপরের সঙ্গে সুখ ভাগাভাগির মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতা, আস্থা ও সম্পর্কের স্থায়িত্ব বাড়ায়।
যদি ‘না’ হয় উত্তর?
তাহলে ভাবুন আপনার মন প্রথমে কার কথা ভাবে? মা-বাবা? কোনো বন্ধুর? না কি অন্য কারও? যদি উত্তর অন্য কাউকে নির্দেশ করে, তাহলে সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চিন্তার জায়গা।


উত্তর কী বলছে?
যদি চারটি প্রশ্নের উত্তরই ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে আপনি একটি সুস্থ, টেকসই সম্পর্কের পথেই আছেন।
এক বা দুইটি প্রশ্নে ‘না’ থাকলে, সম্পর্কের গভীরে গিয়ে কিছু কথা খোলামেলা আলোচনা করা দরকার।
আর চারটি প্রশ্নেই যদি ‘না’ হয়, তাহলে সম্পর্ক নিয়ে আরেকবার ভাবার সময় এসেছে।
জর্ডান ট্র্যাভার্স বলেন, “আমি বলছি না সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই দেখায় যে আপনি হয়তো হুট করে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তখন খেয়াল করেননি।”

 


সূত্র:https://tinyurl.com/yandp999

আফরোজা

×