
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান সময়ে মানুষ প্রচণ্ড মানসিক অস্থিরতা ও হতাশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ঘরে ঘরে অশান্তি, তরুণদের আত্মহত্যার প্রবণতা, সামাজিক মূল্যহীনতা, সম্পর্কের ভাঙন— সবকিছু মিলিয়ে আমাদের সমাজ এক গভীর সংকটে আছে। এই বাস্তবতায় শায়খ আহমাদুল্লাহ হতাশাগ্রস্ত ও মানসিক অশান্তিতে থাকা মানুষের উদ্দেশ্যে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ।
তিনি বলেন, “এই দুনিয়ায় আপনার সবচেয়ে বড় আপন হলেন আপনার রব, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। মানুষ আংশিকভাবে আপন হতে পারে, কিন্তু আল্লাহ ছাড়া কেউ পুরোপুরি আপনার আপন হতে পারে না।” হতাশা ও অস্থিরতা থেকে মুক্তির জন্য তিনি আল্লাহর দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “অনেকেই নামাজ পড়ে না, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখে না, কিন্তু যখন বিপদ আসে, আত্মহত্যার চিন্তা আসে তখন বোঝা যায় অন্তরে কতটা শূন্যতা বিরাজ করে।” তিনি উল্লেখ করেন, “একজন মানুষ অফিসে এসে বললো, সে আত্মহত্যা করতে চায়। এমন আরও অনেক ঘটনা ঘটছে, কারণ মানুষ জীবনের মূল উদ্দেশ্য ভুলে গিয়েছে।”
তিনি বলেন, “যদি অন্তরে আল্লাহর ভালোবাসা থাকতো, তাহলে মানুষ দুনিয়ার ক্ষতি বা কারো চলে যাওয়ায় এতটা ভেঙে পড়তো না। টাকা, সম্পর্ক, সমাজের মূল্যায়ন – এসব কিছুই সাময়িক। কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টিই আমাদের জীবনের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, “যদি আপনি আল্লাহকে ভালোবাসেন, তাঁর আদেশ মেনে চলেন, তাহলেই আপনি মানসিক শান্তি পাবেন। তখন সমাজ আপনাকে সম্মান না করলেও সমস্যা নেই। কারণ আল্লাহর কাছে আপনার মর্যাদা অনেক বেশি হবে।”
তিনি সতর্ক করেন, “সামাজিক মর্যাদার মোহ, বাহ্যিক ভাব ধরে রাখার চেষ্টা মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। মানুষ আজকাল শুধু ‘ভাব’ ধরে রাখার জন্য পয়সা উপার্জন করে। কিন্তু এই বাহ্যিক ভাব মানুষকে স্থায়ী শান্তি দিতে পারে না।”
মানসিক প্রশান্তির জন্য তিনি আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলার উপদেশ দেন। তাহাজ্জুদের রাতে উঠে আল্লাহর কাছে কান্না করে দোয়া করা, নামাজে মনোযোগ দেওয়া এবং হারাম কাজ এড়িয়ে চলার গুরুত্বও তিনি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে হারাম দৃষ্টিকে সংযত করে, আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী জীবন চালায়, তার অন্তরে এমন এক প্রশান্তি জন্মে, যা কোটিপতিও পায় না।”
শায়খ আহমাদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, “আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, যে নারী বা পুরুষ ঈমান আনবে এবং নেক আমল করবে, তাকে দুনিয়াতে নিশ্চয়ই সুখী জীবন দিব। এটাই আল্লাহর ওয়াদা। এর জন্য দরকার তাকওয়া ও ঈমানের চর্চা।”
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/0O9ykiGrp28?si=BsIcPnwTRfSMWlwP
এম.কে.