
বলা আছে- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল। ‘ছোট ছোট ভুল ও অবহেলা পরবর্তী সময়ে আমাদের অনেক মূল্য দিতে হয়। ভেসে যেতে হয় আফসোসের মহাসাগরে। ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন প্রতিটি ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার সামান্য ব্যতয়ে বড় ধরনের মাশুল গুণতে হয়। পদ পদবী ক্ষমতা অর্থ এসবের মোহে আমরা যখন ধরাকে সরা জ্ঞান করি, পরবর্তী সময়ে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে তা বিচার বিবেচনা করা থেকে বিরত থাকি আর তখনই এই সময় সেই সময় বড় ধরনের আঘাত হানে যাপিত জীবনে যা ছড়িয়ে পড়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে। শারীরিক মানসিক আধ্যাত্মিক প্রতিটি ক্ষেত্রে সময়ের সদ্ব্যবহার জীবনকে পরিশীলিত করে তোলে। যেমন- দৈনন্দিন কাজের চাপে সঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করার কথা মাথায় থাকে না অনেকেরই। এর ফলে পৌষ্টিকতন্ত্রের যেমন একাধিক সমস্যা দেখা যায় তেমনই দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলতে থাকলে শরীরে বাসা বাধে একাধিক দীর্ঘমেয়াদি রোগ। অথচ একটু সচেতন হয়ে সঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করার রয়েছে হাজার গুণ।
সকলেরই কাজের মধ্যে থেকে নিজেদের জন্য সময় বার করে নিতে হয়। সার্বিকভাবে ভালো থাকার ভিত্তিই হলো মানসিক সুস্বাস্থ্য। তার জন্য নিজের শখ-শৌখিনতা বজায় রাখা, নিজেকে সময় দেওয়া জরুরি। তবে নিজেকে সময় দেওয়ার মানে কিন্তু ঘরের দরজা বন্ধ করে সারা দিন, শুয়ে শুয়ে সমাজমাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো নয়। ব্যক্তিগত পরিসর এমন একটি সময়, যেখানে কোনো ব্যক্তি তাঁর নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারেন। যে কাজগুলো করতে চান, করতে পারেন। কিন্তু তা কারও জন্য নয়। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। কাজ কখনো আগামীর জন্য ফেলে রাখা যাবে না। এতে কাজের পরিমাণ শুধু বাড়তে থাকবে। তাই সময় মেনে কাজ করতে হবে। যদি সম্ভব হয় নির্ধারিত দিনের আগেই কাজ শেষ করে রাখি। এতে সময়ের সাশ্রয় হবে। এভাবে সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করার অনুশীলন জরুরি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কোনো বিষয়ে দক্ষ হতে চাইলে অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। অনুশীলন করে যখন কম সময়ে কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হব, তখন খুব সহজেই একই সময়ে একাধিক কাজ করতে পারঙ্গম হয়ে উঠব। তাই যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে অনুশীলন জরুরি। এতে দক্ষতাও বাড়ে এবং সময়ের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত হয়। যৌবনের সময় এমনভাবে কাজে লাগাতে হবে যাতে করে প্রৌঢ়ত্বে বিব্রতকর সময়ের সম্মুখীন হতে না হয়। জীবনে চলার পথে হিসেব করে চলা মানে সময়ের মূল্য দেওয়া। তাতে করে যাপিত জীবন সপারিপার্শ্বিক সুস্থ স্বস্থ হয়ে ওঠে। সময়ের মূল্য বুঝতে শিখি আনন্দময় জীবন উপভোগ করি।
বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম থেকে
প্যানেল/মো.