ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

’বিচার চাই!’ কুড়িগ্রামে জুলাই বিপ্লবের হতাহতদের বাবা-মায়ের আকুতি

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ৩১ জুলাই ২০২৫

’বিচার চাই!’ কুড়িগ্রামে জুলাই বিপ্লবের হতাহতদের বাবা-মায়ের আকুতি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন কুড়িগ্রামের ৯ জন। আহত হয় অর্র্ধ শতাধিক। এসব শহীদ জুলাই যোদ্ধাদের পরিবার চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তারা সরকারী ও বেসরকারী ভাবে সামান্য অনুদান পেলেও আজও পায়নি তাদের সন্তানদের বিচার।  তারা চায় সঠিক বিচার হোক এসব হত্যাকান্ডের।  তা হলেই তাদের আত্মা শান্তি ফিরে পাবে।  


কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের পশ্চিম খামার এলাকার নবম শ্রেণির ছাত্র গোলাম রব্বানী। দরিদ্র পরিবারের সন্তান রাব্বানি লেখাপড়ার পাশাপাশি  ঢাকায় যেত কাজ করতে। সেবারও গেছে সংসারের অভাব মেটাতে উপার্জন করতে। গিয়ে শুরু করে রাজমিস্ত্রির কাজ। ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় আফতাবনগরে কাজ শেষে খাবারের দোকান যাওয়ার পথে গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় গোলাম রব্বানী।  পরে ঢাকা থেকে মরদেহ এনে কবরস্থ করা হয় নিজ গ্রামে। দেশের জন্য জীবন দেয়া ছেলেকে নিয়ে পরিবারের গর্ব থাকলেও ভেস্তে গেছে অনেক স্বপ্ন।
এখনও ছেলের ছবি দেখলেই কেঁদে মুর্ছা যান জুলাই শহীদ গোলাম রব্বানীর মা আমেনা বেগম। ছেলে হারানোর শোক কাটেনি তার বাবার। অসুস্থ হয়ে সময় কাটে তার।  জেলার শহীদ পরিবারগুলো সরকারি বেসরকারি সাহায্য সহায়তা পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু স্বজন হারানোর শোক ভুলতে পারেননি তারা। তাই বিচার ত্বরান্বিত করার আবেদন পরিবার ও এলাকাবাসীদের। 
গোলাম রব্বানীর ভাই,নানি. ও চাচা জানায় জুলাই অভ্যূথানে আমাদের এই গোলাম রব্বানী শহীদ হয়েছেন তিনি খুব মেধাবী একজন মানুষ ছিলেন। সে না থাকায় পুরোগ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  যারা তাকে নিস্বংস্ব ভাবে হত্যা করলো তাদের বিচারের দাবী করছি।  


নানী-ঢাকায় কাজ করতে যেয়ে আমার নাতীকে হাসিনা সরকার গুলি করে মেরে ফেললো্ আমরা কোন কিছু চাই না শুধু তার হত্যার বিচার চাই। সাইদুর রহমান, গোলাম রব্বানীর বাবা জানায় আমার ছেলে গোলাম রব্বানী। যখন সে বেঁচেছিল তখন সংসারটা ভাল চলছিল। সে কাজের পাশাপাশি লেখা পড়া করতো।  সে মারা যাবার পর সরকার কিছু সাহায্য করেছে।  আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার পাইনি। আমার ছেলের বিচার যতদিন হবে না ততদিন তার আত্মা শান্তি পাবে না। আহত জুলাই যোদ্ধারা বলেন ২০২৪ এর গনঅভ্যুথানে ৪ আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে সাড়া দিয়ে আন্দোলন করেছি।  পুলিশের এলোপাথারি গুলিতে আমার শরীরে ৬০টির মত স্প্রিন্টার এখনও আছে। রংপুরে অপারেশন করেছি কিনতু সাকসেস হয়েনি। শরীরে স্প্রিন্টার থাকায় আমি এখনও কোন কাজ করতে পারি না। শফিকুল ইসলাম বেবু যুগ্ম আহবায়ক ১ বিএনপি তিনি বলেন জুলাই আন্দোলনে কুড়িগ্রামে ৯জন নিহত ও ১৫০জন আহত হয়েছে। আমরা চাইবো আগামী বাংলাদেশ তথা কুড়িগ্রাম যেন ফেসিষ্ট মুক্ত থাকে।  এজন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমরা সক্রিয় ছিলাম এবং আছি।


হাসিবুর রহমান হাসিব যুগ্ম আহবায়ক ২ বিএনপি নেতা জানায় জুলাই আগষ্টে কুড়িগ্রামে যে গণঅভ্যুথান হয়েছিল তাতে এ জেলার অনেক নিহত ও আহত হয়েছিল। ইতিমধ্যে ১শ৫জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসক।  এটি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। আমরা যদি জুলাই যোদ্ধাদের সম্মান করতে না পারি তাহলে আমাদের গনতন্ত্র স্থায়ী রুপ নিতে পারবে না। 
জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানায় আমাদের জুলাই গণঅভ্যুথঅনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জন্য সরকারী ভাবে যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিয়ে এসেছি তা পুনবাসনের মাধ্যমে দিয়ে যাচ্ছি। আমরা ভবিষ্য্ৎ ও সুযোগ সুবিধা গুলো দিয়ে যাবো। 

আঁখি

×