
ছবি: সংগৃহীত।
বিভিন্ন সময়ে এমন মুহূর্ত আসে, যখন মনে হয়-সবকিছু ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে। মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে, মনে হয় আর কিছু সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই “ফাইট অর ফ্লাইট” শব্দটি শুনেছেন হয়তো-যেটি মানসিক চাপে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। তবে প্রতিবার তো আর কেউ এসে হাত ধরে টেনে তোলার মতো অবস্থায় থাকেন না। তাই নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার কিছু কৌশল জেনে রাখা জরুরি।
নিচে দেওয়া হলো মাত্র পাঁচ মিনিটে মন ভালো করার ৫টি কার্যকর ব্রেইন হ্যাক, যা বিশেষজ্ঞদের মতে মানসিক চাপ কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে-
১. সুগন্ধির জাদু:
ঘ্রাণ আমাদের আবেগ ও স্মৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। পরিচিত কোনো সুগন্ধি (যেমন প্রিয় কারও পারফিউম বা শৈশবের কোনো গন্ধ) মস্তিষ্কে আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। কারণ, নাকে থাকা ওলফ্যাকটরি রিসেপ্টর গন্ধকে চিনে মস্তিষ্কে দ্রুত সঙ্কেত পাঠায়। এতে আবেগ পরিবর্তিত হয় এবং মন ভালো হয়ে ওঠে।
২. বরফের ঘুঁষি:
চিকিৎসক ও থেরাপিস্টরা বলেন, হাতে বরফের টুকরো নিলে মনোযোগ সরাসরি ঠান্ডার অনুভূতির দিকে চলে যায়। এই সংবেদনশীলতা বর্তমান মুহূর্তে মনকে ফিরিয়ে আনে এবং নেতিবাচক চিন্তার চক্র থেকে সাময়িক মুক্তি দেয়।
৩. পরিবেশ বদলান:
একই জায়গায় বা মানুষের সঙ্গে দীর্ঘসময় কাটালে অনেক সময় অবচেতনে বিরক্তি বা ক্লান্তি জন্ম নেয়। এই অনুভূতি থেকে মুক্তি পেতে আশপাশের পরিবেশ সামান্য বদলালেই মন হালকা হতে শুরু করে। এমনকি অন্য ঘরে চলে যাওয়া বা বাইরে গিয়ে খোলা আকাশ দেখা-সবই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সহায়তা করে।
৪. শ্বাস-প্রশ্বাস বদলের কৌশল:
‘গভীর নিঃশ্বাস নাও’-এই পরামর্শটি কেবল কথার কথা নয়। নিউরোসায়েন্স বলছে, এটি সত্যিই কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন কমাতে সহায়তা করে। একে বলা হয় “ফিজিওলজিক্যাল সাই”-যেখানে নাক দিয়ে দুটি দ্রুত শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়া হয়। মাত্র কয়েকবার করলেই শরীর ও মন শান্ত হয়।
৫. নিজের সঙ্গে তৃতীয় ব্যক্তিতে কথা বলা:
অন্যের সমস্যায় আমরা সহজেই উপদেশ দিতে পারি, কিন্তু নিজেকে সেই পরামর্শ দিতে পারি না। এর একটি সহজ সমাধান হলো-নিজেকে নিজের নাম ধরে বা 'সে/তিনি' হিসেবে সম্বোধন করে কথা বলা। এই পদ্ধতিকে বলা হয় “ডিস্ট্যান্সড সেলফ-টক” বা “ইলিজম”, যা মানসিক চাপ থেকে দূরত্ব তৈরি করে চিন্তা পরিষ্কার করে তোলে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
এই সহজ কিন্তু প্রভাবশালী ব্রেইন হ্যাকগুলো প্রয়োগ করে যেকোনো চাপ বা মন খারাপের মুহূর্তেও নিজেকে সামলে নেওয়া সম্ভব। পাঁচ মিনিটেই মেজাজ ফিরিয়ে আনতে এই কৌশলগুলো হতে পারে আপনার নিজের তৈরি ‘ম্যানুয়াল ফর রেসিলিয়েন্স’।
মিরাজ খান