ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪

ড. মো. আইনুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২২:২০, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩; আপডেট: ২২:২২, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪

.

অর্থনীতির বিশ্লেষণ-প্রক্ষেপণের আগে এ কথা বলে নেওয়া ভালো যে, ২০২৩ সালে যেসব খাত ও ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে ভুগেছে সেখানে রয়েছে মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট ও ডলারের বিপরীতে ক্রমহ্রাসমান টাকার মান, খেলাপি ঋণ, বিদেশে অর্থ পাচার, বৈদেশিক মুদ্রার কম রিজার্ভ এবং দেশ-বিদেশ থেকে সরকারের ক্রমবর্ধমান ঋণ গ্রহণ। এর মানে এই নয় যে, অর্থনীতির অন্য খাত ও ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভালো গেছে। সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতি বলতে যা বোঝানো হয় অর্থাৎ মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), মাথাপিছু জিডিপি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব খাত (রাজস্ব আহরণ, সরকারি ব্যয়, বাজেট ভারসাম্য ও অর্থায়ন), মুদ্রা ও আর্থিক খাত (মুদ্রানীতি ও মুদ্রা ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা পরিস্থিতি, অভ্যন্তরীণ ঋণ, সুদের হার, পুঁজিবাজার), বৈদেশিক খাতের রপ্তানি ও আমদানি, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিটেন্স, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য প্রভৃতি অনুষঙ্গের কোনোটিতেই ২০২৩ সালে ভালো ছিল না বাংলাদেশ। সামষ্টিক অর্থনীতির এসব বিষয় নিয়ে ধরে ধরে প্রথাগতভাবে মূল্যায়ন করা আসলে অনেকের কাছে নেহায়েত মূল্যহীন। কারণ, ভারি ভারি শব্দে গুরুগম্ভীর এই মূল্যায়নে কষ্টে দিন কাটানো বাংলাদেশের ৮০-৮৫ শতাংশ মানুষের দিন যাপনের প্রকৃত চিত্র পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বিগত ও নতুন বছরের বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল্যায়ন ও প্রক্ষেপণ অন্যভাবে করা প্রয়োজন।

২০২২ সালের শেষার্ধে বিশ্বের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদদের মাত্র তিনটি শব্দে ফেলে আসা বছরের অর্থনীতির মূল্যায়ন করতে বলা হলে তারা যুদ্ধ, মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি সংকটের ধাক্কার কথা উল্লেখ করেছিলেন। বিশ্বের অধিকাংশ দেশের নীতিনির্ধারক ও পরিকল্পক উল্লিখিত তিন সংকটের বিরুদ্ধে কার্যকর পদেক্ষপ নিয়ে তাদের নাগরিকদের ২০২৩ সালে কিছুটা স্বস্তি দিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন।

এই সময়ে বিশ্বে যুদ্ধ কমেনি। জ্বালানি সংকটও দূর হয়নি। তারপরও সেসব দেশে নাগরিকদের ওপর চেপে বসা অসহনীয় মূল্যস্ফীতির চাপ অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক-পরিকল্পকেরাও অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু ঘটেছে উল্টোটা। মূল্যস্ফীতির চাপ দূর হয়নি, বরং বেড়েছে। কারণ, আমাদের নেওয়া পদক্ষেপগুলো ছিল মোট জনসংখ্যার বড়জোর ২০ শতাংশের প্রতিনিধিত্বকারী ধনিক শ্রেণি তোষণ উপযোগী। এতে করে ধনিক শ্রেণির অর্থলিপ্সা আরও বেড়েছে। তারা আরও অধিক হারে ঘুষ-দুর্নীতি-কালো টাকা-অর্থ পাচার আর মুনাফায় লিপ্ত হয়েছে। তারপরও এরা ‘বুকভরা আক্ষেপ’ নিয়ে বছরটি শেষ করছে। আর সাধারণ মানুষ সুদিনের আশা নিয়ে শুধু ‘শুকরিয়া’ করে গেছে। এই দুয়ের মাঝে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ফাঁদে পড়া আমাদের নীতিনির্ধারকরা জনগণকে বছরজুড়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন এবং যা বাস্তবায়ন না হওয়ায় শেষে সান্ত¡না দিয়ে বলেছেন, আসলে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি অগভীর। ঢেউ বেশি ওঠে। তাই সামান্যতেই আমাদের অর্থনীতি কেঁপে ওঠে।’ মূল্যস্ফীতির বাইরে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখা, ডলার সংকট প্রশমন, ব্যাংকিং খাত ঠিক রাখা, রিজার্ভের ওপর চাপ কমানো এবং সামষ্টিক অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বলাবাহুল্য, অর্থনীতির উল্লিখিত চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় নীতিনির্ধারকরা সচেষ্ট থাকলেও নানা কারণে ব্যর্থ হয়েছেন। যেমন- আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ইকোনমিক আউটলুকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২২ সালে বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ ছিল ৭.১ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ৬ শতাংশ। ২০২২ সালে বৈশ্বিক জিডিপির পরিমাণ ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে  হয়েছে ৩ শতাংশ।

আইএমএফের মতে ২০২৪ সালে বৈশ্বিক জিডিপি আরও কমে ২.৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে, যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ হতে পারে। বিশ্ব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে উল্লিখিত তথ্যে তৃপ্তিবোধ করাই যায়। তবে মনে রাখতে হবে, প্রবৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান জনগণের কাছে আসলে মূল্যহীন মনে হয়েছে। কারণ, তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ব্যয় আরও অনেক বেড়েছে, নুন আনতে গিয়ে তাদের পান্তা ফুরিয়ে গেছে। তাই তারা বছরভর প্রবৃদ্ধির প্রশ্নে তীর্যক ভাষায় শুধু প্রশ্নই ছুঁড়েছেন, প্রবৃদ্ধি কি ধুয়ে খাওয়া যায়, নাকি প্রবৃদ্ধি মাথায় দেয়?  প্রবৃদ্ধি নিয়ে নেতিবাচক এই ধারণার কারণ খুঁজলে দেখা যায়, প্রবৃদ্ধির সীমানা নির্ধারিত হয় যেসব উৎস-উপাদানে অর্থাৎ শ্রমশক্তি, শ্রমশক্তির উৎপাদনশীলতা, বিনিয়োগের পরিমাণ ও গুণগতমান, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও বাজার অবস্থার মানে এসবে বাংলাদেশ ভালো করেনি ২০২৩ সালে।

২০২৩ সালটি যে শুধু বাংলাদেশীদের জন্য মন্দ ছিল তা নয়। অনেক দেশের ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য। প্যারিসভিত্তিক বাজার গবেষণা সংস্থা ইপসস অনেকদিন ধরেই প্রতিবছরই বিশ্বব্যাপী একটি জরিপ করে শেষ হতে যাওয়া বছরটি কেমন গেছে, তার আলোকে নতুন বছরটি কেমন হবে, তা জানতে। ২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৪টি দেশের ১৮ ঊর্ধŸ ২৫ হাজার ২৯২ জনকে নিয়ে করা এ সংক্রান্ত এক জরিপ শেষে ইপসস বলেছে, বিশ্বের ৩৪টি দেশের গড়ে ৭০ শতাংশ বলেছেন, ২০২৩ সাল খারাপ বছর ছিল। ৫৩ শতাংশের মতে তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য ২০২৩ সাল ছিল খুব খারাপ। ২০২২ সালে এই দুই হার ছিল যথাক্রমে ৭৩ ও ৫৬ শতাংশ। কোভিড-১৯ সংকটে বিপর্যস্ত ২০২০ সালের শেষার্ধে এই সংখ্যা ছিল ৯০ শতাংশ। অপরদিকে করোনার আগে ২০১৮ ও ১৯ সালে এই হার ছিল ৬২ ও ৬৫ শতাংশ।

গত অক্টোবরে বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশে ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনাল ও ইপসসের পরিচালিত অন্য এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি ১০ জনের ৪ জন (৩৭ শতাংশ) মা-বাবা ও অভিভাবক বলেছেন, তারা সন্তানদের দৈনিক প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিতে পারেননি এবং ২১ শতাংশ বলেছেন, তাদের সন্তান গত ৩০ দিন পেটে ক্ষুধা নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। অধিকন্তু, বিশ্বব্যাপী ৪৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক বলেছেন, তারা ৩০ দিনের খাদ্য কেনার অর্থ সংগ্রহে চিন্তিত ছিলেন, যা বাংলাদেশের মতো আয়ের দেশগুলোতে ৭৭ শতাংশ। ইপসসের এই পরিসংখ্যান মানুষের জীবনমানের হতাশাজনক এক চিত্রই তুলে ধরে। বিদেশী সংস্থার এসব জরিপের তথ্য বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিচালক ও পরিকল্পক এবং শহর-উপ-শহরের বিত্তশালী শ্রেণির মানুষের কাছে অতিরঞ্জিত-অমূলক মনে হলে বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান দেওয়া যায়, যেখানে সাধারণ মানুষের কষ্টে কাটানো দিনলিপির কিছুটা হলেও স্বীকৃতি মেলে। বিবিএসের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে গত অক্টোবরে নি¤œ ও অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, যে সময়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির তুলনায় ২ দশমিক ২৪ শতাংশ কম ছিল (বাংলাদেশের অর্থনীতির ৭০-৮০ শতাংশ অদক্ষ ও নি¤œ আয়ের অনানুষ্ঠানিক খাতনির্ভর)। মূল্যস্ফীতির হারের তুলনায় মজুরি বৃদ্ধির কম হারের এই ধারা অনেক বছর ধরেই বিদ্যমান। বিশ্লেষকেরা বলেন, মূল্যস্ফীতি ও মজুরি বৃদ্ধির হারের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান নি¤œ আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে বাধ্য করেছে।

তাদের বাড়তি মজুরির অর্ধেকের বেশি চলে যায় বেঁচে থাকার খাবার কিনতে। বাকিটা অন্য নিত্যপণ্যে। বিবিএসের মতে বাংলাদেশে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম কমায় নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ হয়েছে, যা অক্টোবরে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছিল। নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ হয়েছে, যা অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। নভেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ হয়েছে, যা অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। বিবিএসের পরিসংখ্যানে জানা যায়, দেশের চাল, শাক-সবজি, মাছ ও হাঁস-মুরগির বেশিরভাগ সরবরাহ আসে দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের বাস গ্রামাঞ্চল থেকে। তারপরও ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩৫ মাসের মধ্যে ৩১ মাস দেশের গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি শহর ও উপ-শহর অঞ্চলের চেয়ে বেশি ছিল। উপরন্তু গ্রামীণ অঞ্চলে উচ্চ মূল্যস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ ছিল উচ্চ খাদ্যমূল্য। নভেম্বরে গ্রামাঞ্চলে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা জাতীয় গড় ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশের চেয়ে বেশি। গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতির চিত্র এটাই প্রমাণ করে যে, শহর-উপ-শহরের অধিক অর্থের প্রবাহ দিয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষের খাদ্য বাড়তি মূল্য দিয়ে গ্রাস করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বছরের মাঝামাঝি সরকারি বাজেটে দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র দেড় শতাংশের সরকারি কর্মীবাহিনী বাড়তি বেতন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে পণ্যবাজারে গিয়ে আরও এক ধাপ গরিব করেছে।

উল্লিখিত তথ্য ও পরিসংখ্যানের আলোকে নতুন বছর ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রক্ষেপণ করা প্রায় অসম্ভব। কারণ, সামষ্টিক অর্থনীতির আমদানি-রপ্তানিনির্ভরতা, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার দেশের অর্থনীতির ওপর ইতোমধ্যেই যথেষ্ট ঋণাত্মক প্রভাব ফেলেছে। উপরন্তু স্বজনতোষী ‘ক্রনি ক্যাপিটালিজম’ চর্চাকারী বাংলাদেশের ওপর বৈশি^ক অর্থনীতির আসন্ন ও চলমান প্রভাব-অভিঘাত কেমন হবে তাও জানা কঠিন। এসব সত্ত্বেও বিশ্বের প্রভাবশালী ক্রেডিট রেটিং সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর (এসঅ্যান্ডপি)-এর গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের দৃষ্টিতে ২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ১০টি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হবে তা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ২০২৪ সালের অর্থনীতির রাশিফল নিয়ে কিছু বলাই যায়। এসঅ্যান্ডপির মতে ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি-মূল্যস্ফীতি কমবে, আমেরিকা ও ইউরোপে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে, চীনের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে, বছরের মাঝামাঝি উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোয় সুদের হার কমতে শুরু করবে, উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো তুলনামূলকভাবে ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে, মার্কিন ডলারের অবমূল্যায়ন হবে, ব্যাংকিং কার্যক্রমে সতর্কতামূলক নীতি অব্যাহত থাকবে, আবাসিক খাতে মূল্যপতন অব্যাহত থাকবে, নির্বাচনের কারণে নীতিগত অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি সহনীয় হওয়ায় এবং কয়েক দফায় ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার না বাড়ানোয় ২০২৪ সালের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক গত অক্টোবরে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট, নিউ ফ্রন্টিয়ার্স ইন পভার্টি রিডাকশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাস দিয়ে জানিয়েছে, ২০২৪ সালে দেশের জিডিপি আরেক দফা কমবে, যা ২০২৫ সালে গিয়ে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবে। বিশ্বব্যাংকের মতে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যেই থাকবে এবং ২০২৫ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়াবে। সে অবস্থায় সাধারণ মানুষের ‘যায় দিন ভালো’ দৃষ্টিতে দেখলে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি অতীতের চেয়ে আরও কঠিন হওয়াটাই স্বাভাবিক।

লেখক : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা; সাধারণ সম্পাদক ,বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি

×