
ছবিঃ সংগৃহীত
লেবু পানি আমাদের কাছে স্বাস্থ্যকর একটি পানীয় হিসেবে পরিচিত। সকালবেলা এক গ্লাস উষ্ণ পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করার অভ্যাস অনেকের। এতে শরীর হাইড্রেট থাকে, হজম শক্তি বাড়ে, ভিটামিন সি পাওয়া যায় এবং দিন শুরু হয় সতেজভাবে। তবে, এই সাধারণ পানীয়টি সবার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে। কিছু মানুষের জন্য লেবু পানি নানা অস্বস্তি ও স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। চলুন জেনে নিন, কখন এই পানীয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
১. দাঁতের ক্ষয়
লেবুতে প্রচুর সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে। ঘন ঘন লেবু পানি পান করলে দাঁতের এনামেল ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে পারে, দাঁতে সংবেদনশীলতা ও ক্যাভিটির ঝুঁকি বাড়ে। দাঁতের ক্ষয় এড়াতে লেবু পানি স্ট্র দিয়ে পান করুন এবং তারপর মুখ পানি দিয়ে কুলি করুন। লেবু পানি খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করবেন না, এনামেল তখন নরম থাকে এবং সহজেই ক্ষয় হয়।
২. অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও হার্টবার্ন
লেবুর অ্যাসিড অনেকের হজমে সহায়ক হলেও, কারও কারও ক্ষেত্রে পেটে গ্যাস, বুকজ্বালা বা হার্টবার্ন তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের GERD বা আগেই অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আছে, তাদের জন্য লেবু পানি ঝুঁকিপূর্ণ। বুকজ্বালা, গলায় জ্বালা এসব অনুভব করলে লেবু পানি কমান বা বন্ধ করা উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৩. হজমে অস্বস্তি
লেবু পানি হজমে সহায়ক হলেও অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে। কারও কারও পেটে অস্বস্তি, গ্যাস, বমিভাব, বা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা হলে লেবু পানি আরও বেশি পাতলা করে খাওয়া অথবা খাবারের সাথে খাওয়া বেশি নিরাপদ।
৪. ত্বক ও নখের সমস্যা
লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বকের জন্য ভালো। তবে লেবুর রস সরাসরি ত্বকে দিলে অ্যালার্জি, লালচে ভাব, চুলকানি বা ফোড়া হতে পারে, বিশেষত রোদে গেলে। একে ফাইটোফোটোডার্মাটাইটিস বলা হয়। আবার নখে ও হাতে বেশি সময় লেবুর রস লাগলে নখ ভেঙে যাওয়া, হাতের চামড়া শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. অ্যালার্জি ও ওষুধের প্রতিক্রিয়া
অনেকের লেবু বা সিট্রাসজাতীয় ফলে অ্যালার্জি থাকে। কখনও কখনও লেবু পানির ফলে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি, বা শ্বাসকষ্টের মতো মারাত্মক সমস্যা দেখা যায়। এছাড়া, লেবুর রস এমন কিছু ওষুধের সঙ্গে বিক্রিয়া করতে পারে, বিশেষত যেগুলো লিভারের মাধ্যমে প্রসেস হয়—ফলে ওষুধের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেড়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিত কোনো ওষুধ খেলে, লেবু পানি পান করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বিশেষ পরামর্শ
আপনার শরীর কিভাবে প্রতিক্রিয়া করছে, সেই অনুযায়ী লেবু পানি পান করুন।
কোনো উপসর্গ দেখা দিলে, লেবু পানির পরিমাণ কমান বা বন্ধ করুন।
নোভা