ফ্রান্স ও মিসরের মধ্যে ছেলেদের ফুটবলের সেমিফাইনাল ম্যাচের একটি দৃশ্য
১৬টি দল শুরু করেছিল প্যারিস অলিম্পিক ছেলেদের ফুটবলের মিশন। বহু নাটকীয়তা এবং ইতিহাস রচনার পর অবশেষে দুই দল পেল ফাইনালের টিকিট। সোমবার সেমিফাইনালে ২০২৪ অলিম্পিকের আয়োজক দেশ ফ্রান্স ৩-১ গোলে মিসরকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে। শেষ চারের আরেক ম্যাচে ইউরোজয়ী স্পেন নাটকীয়ভাবে ২-১ ব্যবধানে মরক্কোকে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়ে জায়গা করে নেয় অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালে। আগামী শুক্রবার স্বর্ণের লড়াইয়ে একে অপরের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স-স্পেন। এর আগে বৃহস্পতিবার ব্রোঞ্জপদকের জন্য তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মাঠে নামবে মিসর-মরক্কো।
এবারের অলিম্পিক ফুটবলের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলে মিসর। ধারাবাহিক পারফর্ম করে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার অলিম্পিকের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। শেষ চারের লড়াইটাও জমিয়ে তুলেছিল মিসর। আগে গোলও পেয়েছিল দলটি। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে একটি লালকার্ডই কাল হলো তাদের। অবশেষে ১০ জনের মিসরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্যারিস অলিম্পিকের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেইসঙ্গে ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার অলিম্পিকের ফাইনালে জায়গা করে নেয় এমবাপে-জিদানের উত্তরসূরিরা।
ফ্রান্সের লিঁওতে এদিন মাহমুদ সাবেরের গোলে ৬২ মিনিটেই লিড নেয় মিসর। কিন্তু ৮৩ মিনিটেই ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান জিয়ান ফিলিপে মাতেতা। এরপর ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে আরও দুই গোল করলে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক শিবির। ম্যাচের বয়স যখন ৯২ মিনিট তখনই দ্বিতীয়বারের মতো হলুদকার্ডের সৌজন্যে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মিসরের ওমর ফায়েদ লালকার্ড।
ম্যাচের ৯৯ মিনিটে দুর্দান্ত হেডে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন সেই মাতেতা। ম্যাচের ১০৮ মিনিটে মাইকেল অলিসের গোলে ৩-১ ব্যবধানের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স। ১২০ মিনিটের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানই ধরে রাখে থিয়েরি হেনরির শিষ্যরা।
অলিম্পিকের আরেক সেমিফাইনালে মার্শেইতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে স্পেন প্রথমে পিছিয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে মরক্কোকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। সেইসঙ্গে টানা দ্বিতীয়বার অলিম্পিক ফাইনালে উঠল লা রোজারা। সর্বশেষ টোকিও অলিম্পিকে ব্রাজিলের কাছে ফাইনালে হেরে রৌপজ্য জিতেই আসর শেষ করেছিল তারা।
এবার প্যারিসেও নিজেদের ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্সের দাপট ধরে রেখে ফাইনালে উঠে স্পেন। সেমিফাইনালে আফ্রিকার দেশ মরক্কো অবশ্য শুরুতেই স্পেনকে চমকে দিয়েছিল। পাবলো বারিওস বক্সের মধ্যে আমির রিচার্ডসনকে ফাউল করলে মরক্কোকে পেনাল্টি দেয় ম্যাচ রেফারি। আর ৩৬ মিনিটে সেই পেনাল্টি থেকে সুফিয়ান রাহিম গোল করে এগিয়ে দেন মরক্কোকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৬৬ মিনিটেই স্পেনকে সমতায় ফেরান ফারমিন লোপেজ। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে সেই লোপেজের এসিস্ট থেকেই গোল করে স্পেনের জয় নিশ্চিত করেন জুয়ানলো সানচেজ।
এর ফলে আগামী শুক্রবার প্যারিসের পার্ক ডি প্রিন্সেসে ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে মাঠে নামবে ফ্রান্স। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ব্রোঞ্জপদকের জন্য তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মরক্কোর মুখোমুখি হবে মিসর।