.
প্যারিসের সুইমিং পুলে আবারও দ্যুতি ছড়ালেন সামার ম্যাকিনটশ। অলিম্পিকে রেকর্ড গড়ে ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলে স্বর্ণ জিতলেন কানাডিয়ান কিশোরী। লা দিফঁস অ্যারেনায় মেয়েদের এই ইভেন্টে সময় নিলেন ২ মিনিট ৬. ৫৬ সেকেন্ড। যুক্তরাষ্ট্রের কেট ডগলাস (২ মিনিট ৬.৯২ সেকেন্ড) রৌপ্য ও অস্ট্রেলিয়ার কাইলি ম্যাককিওন (২ মিনিট ৮.০৮ সেকেন্ড) ব্রোঞ্জ জিতেছেন।
টোকিও অলিম্পিকে একটুর জন্য পদক পাননি, তবে ১৪ বছর বয়সেই বিস্ময় ছড়িয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জানান দিয়েছিলেন ম্যাকিনটোশ। পরের সময়টায় বয়সের সঙ্গে পুলে আরও গতিময় হয়ে উঠেছেন, হয়েছেন পরিণত, গড়েছেন বিশ্বরেকর্ডও। প্যারিসে প্রথম দিনে কেটি লিডেকিকে পেছনে ফেলে ফ্রি স্টাইলে রৌপ্য জয়ের পর আবারও আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন। এরপর তো টানা তিনটি স্বর্ণ জিতলেন কানাডার ১৭ বছর বয়সী এ সাঁতারু। ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলে শুরু তার স্বর্ণের হাসি। এরপর ২০০ মিটার বাটারফ্লাই। আর এবার ২০০ মিটারে মিডলে জিতে পূর্ণ করলেন এর ডাবল।
‘কেমন যেন পরাবাস্তব একটা অনুভূতি। স্বর্ণ জিতে এই পোডিয়ামের চূড়ায় দাঁড়ানো ছিল আমার স্বপ্ন। প্যারিসে সপ্তাহের ব্যবধানে তিনবার সেটি পূরণ হওয়ায় খুবই খুশি।
ছেলেবেলায় যে স্বপ্নগুলো দেখেছি, সেই পথ ধরেই ছুটে চলার চেষ্টা করছি আমি এবং যতদিন সম্ভব চাই এই খেলায় থাকতে। আমার মনে পড়ে, বেড়ে ওঠার দিনগুলোতে প্রতিদিন ক্লাস শুরুর আগে জাতীয় সংগীত গাইতাম। এখন অলিম্পিকসে এসে এখানে গলা মেলাতে পারাটা দারুণ।’ আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলছিলেন ম্যাকিনটোশ। ম্যাকিনটোশের সেরা হওয়ার পথে যাত্রা শুরু করোনা মহামারির কারণে বিলম্বিত ২০২০ টোকিও অলিম্পিক থেকে। তখন ১৪ বছর বয়সে টোকিওতে ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে চতুর্থ হয়েছিলেন। তিন বছরের ব্যবধানে সেই ম্যাকিনটোশ এখন অভিজ্ঞ সাঁতারুদের একজন। জানিয়েছেন, বড় মঞ্চে ভালো করার ব্যাপারে তিন বছর আগের অভিজ্ঞতা তার কাজে লেগেছে, ‘যতবারই বিশ্বমঞ্চে খেলি, কিভাবে পরিস্থিতি সামলাতে হবে, সেটা সম্পর্কে আরও বেশি করে শিখি। সেটা মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে ও আবেগের জায়গা থেকে। খুব বেশি উত্তেজিত হই না, ভেঙেও পড়ি না। নিজের ফলের ওপর নির্ভর করি।’ রৌপ্যজয়ী ডগলাসও ম্যাকিনটোশকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘তার মান দুর্দান্ত। সে ধারাবাহিকভাবে দারুণ পারফর্ম করছে।’
এদিকে ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে সাফল্যের মধ্য দিয়ে অলিম্পিক ক্যারিয়ারে ৯টি স্বর্ণপদক জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন কেটি লিডেকি। একই দিনে ১০০ মিটার মিক্সড মিডেল রিলেতে বিশ্বরেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র, আর পুরুষদের ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে বাজিমাত করেছেন হাঙ্গেরির ক্রিস্টফ মিলাক। মেয়েদের ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে অবিসংবাদিত সেরা লিডেকি। সেটিই দেখল প্যারিস। অস্ট্রেলিয়ার আরিয়ার্নে টিটমাসকে পেছনে ফেলে জিতে নিলেন অলিম্পিকে নিজের ৯ নম্বর স্বর্ণপদক। তাতে অলিম্পিক ইতিহাসে নারী প্রতিযোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণজয়ী লাতিনিনার পাশে বসলেন তিনি।
সাবেক সেভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করা এ জিমন্যাস্ট ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত ৯টি স্বর্ণ জিতেছিলেন। নবম স্বর্ণ জয়ের পথে লিডেকি সময় নিয়েছেন ৮ মিনিট ১১.০৪ সেকেন্ড। ১.২৫ সেকেন্ডে রৌপ্য টিটমাসের। ব্রোঞ্জ লিডেকির স্বদেশী পেইজ ম্যাডেনের। ওদিকে একই দিনে ১০০ মিটার মিক্সড মিডেল রিলেতে বিশ্বরেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনিরা সময় নিয়েছে ৩ মিনিট ৩৭.৪৩ সেকেন্ড। নতুন এশিয়ান রেকর্ড গড়ে রুপা পেয়েছে চীন (৩ মিনিট ৩৭.৫৫ সেকেন্ড)। ২০২১ সালে গ্রেট ব্রিটেনের (৩ মিনিট ৩৭.৫৮ সেকেন্ড) গড়া আগের বিশ্বরেকর্ডের চেয়ে কম সময়ে সাঁতার শেষ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
আর পুরুষদের ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে বাজিমাত করেছেন হাঙ্গেরির ক্রিস্টফ মিলাক। সময় নিয়েছেন ৪৯.৯০ সেকেন্ড। মাত্র ০.০৯ সেকেন্ড পেছনে থেকে রৌপ্য জিতেছেন কানাডার জশ লিন্ডো। ব্রোঞ্জও পেয়েছেন এক কানাডিয়ান ইলিয়া খারুন।