ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

বদলা নিতে মরিয়া বাংলাদেশ

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ২২:১৪, ১২ জুন ২০২৪

বদলা নিতে মরিয়া বাংলাদেশ

অধিনায়ক শান্তর নেতৃত্বে আজ বিশ্বকাপে ডাচ বধের প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ দল

বাংলাদেশের সব স্বপ্ন গত বছর ওয়ানডে বিশ^কাপে গুঁড়িয়ে দেয় নেদারল্যান্ডস। নিজেদের প্রায় ঘরের মাটি কলকাতায় বিখ্যাত ইডেন গার্ডেন্সে ডাচদের কাছে লো-স্কোরিং ম্যাচে ৮৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। তারপর আর দুই দলের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়নি। এবার ভিন্ন ফরম্যাটের আরেক বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ।

এবার কয়েক হাজার মাইল দূরের সেন্ট ভিনসেন্টের কিংস টাউনে আরনস ভেল গ্রাউন্ডে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া বাংলাদেশ দল। আজ রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ম্যাচটি মাঠে গড়াবে। দুদলের জন্যই মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটি। ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার সুপার এইট নিশ্চিত হয়েছে, ‘ডি’ গ্রুপ থেকে আরেকটি দল উঠবে। সেক্ষেত্রে সুযোগ বেশি বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসেরই।

এই ম্যাচের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে শ্রীলঙ্কা ও নেপালের ভাগ্য। কোনো কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি না হলে জয়-পরাজয় আসলেই শ্রীলঙ্কার বিদায় সুনিশ্চিত হয়ে যাবে। এ ছাড়া যে দল হারবে তারাও সংশয়ে পড়বে। সে কারণে এই ম্যাচটি মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অথচ ১১ বছর পর আবার কোনো স্বীকৃত টি২০ ম্যাচ হতে যাচ্ছে এই মাঠে। তাই উভয় দলের কাছেই অচেনা মাঠটি।
সেন্ট ভিনসেন্টের এই স্টেডিয়ামে আগে কখনো টি২০ খেলেনি বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান কয়েকবারই ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) টি২০ খেলেছেন, কিন্তু এই মাঠে টি২০ খেলা হয়নি। কারণ সিপিএল এর ইতিহাসে এই মাঠে কোনো টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি।

অবশ্য ২০০৯ সালে হওয়া টেস্টে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা প্রথম দিনই ইনজুরি নিয়ে বাইরে গেলে অধিনায়কত্ব করে জয় পান সাকিব এবং পরবর্তীতে তিনিই অধিনায়ক হন। আন্তর্জাতিক টি২০ই হয়েছে এই ভেন্যুতে মাত্র দুটি। সেটিও ১১ বছর আগে সফরকারী পাকিস্তান দল খেলেছে উইন্ডিজের বিপক্ষে। ম্যাচ দুটিতে খুব বেশি রান হয়নি।

তবে এই ভেন্যুতে বাংলাদেশ ২টি ওয়ানডে ২০০৪ সালে এবং ২০০৯ ও ২০১৪ সালে একটি করে টেস্ট খেলেছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১০ বছর আগের সেই টেস্টে বাংলাদেশের বর্তমান স্কোয়াডে থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদই শুধু খেলেছিলেন। তাই খুব বেশি চেনা মাঠ নয় এটি। আর যেহেতু টি২০ ম্যাচ খুব কম হয় সে কারণে এই ভেন্যু সম্পর্কে সব দলেরই তেমন জানা নেই।

এই ফরম্যাটে কতটা উপযুক্ত এই মাঠের উইকেট সেই পরীক্ষাটা হবে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস ম্যাচ দিয়েই। এবারের বিশ^কাপে এখানে ৫টি ম্যাচ রয়েছে। গ্রুপ পর্বের ৩টির মধ্যে বাংলাদেশই খেলবে দুটি। যদি সুপার এইটে উঠতে পারে তাহলে খেলবে আরেকটি। 
এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে খুব বেশি সময় পায়নি বাংলাদেশ দল অনুশীলন করার। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দারুণ চাপের ম্যাচ খেলে সেদিনই আবার সেন্ট ভিনসেন্টের উদ্দেশে রওনা হয়েছে দল। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই ভ্রমণ ক্লান্তি কাটিয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে নামতে হবে নাজমুল হোসেন শান্তদের।

সবার পরে বিশ^কাপ শুরু করার পর থেকেই দৌড়ের ওপর আছে বাংলাদেশ দল। শনিবার, সোমবার ম্যাচ খেলে আবার আরেক দেশে গিয়ে বৃহস্পতিবার ম্যাচে নামা। এবার বিশ^কাপে সবচেয়ে বেশি ৯ হাজার ৯২১ কিলোমিটার ভ্রমণ করতে হবে শান্তদের যা খেলার ওপর স্বাভাবিকভাবেই প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা থাকে। তবে এসবকে পাশ কাটিয়েই জেতার জন্য নামতে হবে বাংলাদেশ দলকে।

সেজন্য আগের ম্যাচ শেষে তানজিম হাসান সাকিব বলেছেন, ‘আমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী। আশা করি পরের দুই ম্যাচ আমরা অনেক ভালো করব। দুই ম্যাচেই জিতব এবং পরের পর্বে যাব। মানসিকভাবে চিন্তা করলে আমরা অনেক শক্ত আছি।’ ২০১২ সালে ডাচদের কাছে দ্য হেগে একটি টি২০ হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু তার আগে একবার ও পরে আরও দুইবার জিতেছে বাংলাদেশই।

এবারও লো-স্কোরিং এবং স্পিন সহায়ক উইকেট থাকার সম্ভাবনা। তাই একাদশে বাড়তি স্পিনার যোগ হতে পারে, সেক্ষেত্রে জাকের আলী অনিকের জায়গায় শেখ মেহেদি হাসান সুযোগ পেতে পারেন। যে দলই জিতবে তাদের সুপার এইটে ওঠার রাস্তা সুগম হবে।

×