সাকিব আল হাসান
দশম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফাইনাল আজ। রাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশালের মধ্যে লড়াইয়ে শিরোপা নির্ধারণী হয়ে যাবে। এবার চ্যাম্পিয়ন দল ২ কোটি টাকা এবং রানার্সআপ ১ কোটি টাকা পাবে। এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত কিছু পুরস্কার থাকছে বরাবরের মতোই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ফাইনালের আগের দিন বৃহস্পতিবার এই প্রাইজমানি ঘোষণা করেছে।
ঘোষণা অনুসারে ফাইনালের ম্যান ম্যান অব দ্য ম্যাচ ৫ লাখ টাকা পাবেন। আর আসরের সেরা ফিল্ডার ৩ লাখ, সর্বাধিক উইকেটশিকারি ৫ লাখ, সর্বাধিক রান সংগ্রাহক ৫ লাখ টাকা পুরস্কার পাবেন। ২২ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে থাকা দুর্দান্ত ঢাকার বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামই সেরা বোলার হতে যাচ্ছেন নিঃসন্দেহে। কারণ ফাইনালে ওঠা দুই দলের কোনো বোলার তার ধারেকাছেও নেই। তবে সর্বাধিক রান সংগ্রহকারীর লড়াই হবে ফাইনালে।
বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল সর্বাধিক ৪৫৩ রান করে ওপরে থাকলেও তার ঘাড়ে নিঃশ^াস ফেলছেন কুমিল্লার তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। তার রান ৪৪৭। আর টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় পাবেন ১০ লাখ টাকা। সেই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সাকিব মোট ৬০৯.৯ ইমপ্যাক্ট নিয়ে অনেক এগিয়ে।
যাওয়া-আসার মধ্যে থেকেছেন এবার বিপিএলে বিদেশী তারকারা। অধিকাংশই ৪-৫ ম্যাচের বেশি খেলার সুযোগ পাননি অন্যান্য টি২০ আসর ও আন্তর্জাতিক ব্যস্ততার জন্য। তাই বিদেশী কেউ এবার ব্যাটিং-বোলিংয়ে সেরা হতে পারছেন না। ১৪ ইনিংসে ৩৪.৮৪ গড় ও ১২৫.৪৮ স্ট্রাইকরেটে ৩ ফিফটিতে ৪৫৩ রান করে সেরা বাঁহাতি ওপেনার তামিম। তার খুবই কাছে তাওহিদ ১৩ ইনিংসে ৪০.৬৩ গড় ও ১৪৯.৪৯ স্ট্রাইকরেটে ১ সেঞ্চুরি ও ২ হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৪৭ রান করে।
ফাইনালে তারা ব্যর্থ হলে এবং লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম বড় ইনিংস খেলতে পারলে তাদের পেছনে ফেলার সুযোগ পেতে পারেন। লিটন ১৩ ইনিংসে ২৮.৮৪ গড় ও ১৩০.৬৬ স্ট্রাইকরেটে ৩৭৫ এবং মুশফিক ১৪ ইনিংসে ৩৩.৩৬ গড় ও ১২৩.৫৬ স্ট্রাইকরেটে ৩৬৭ রান করেছেন। বোলিংয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ১২ ম্যাচে ২২, সাকিব ১৩ ম্যাচে ১৭, শেখ মেহেদি হাসান ১৪ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়ে শীর্ষ তিনে। তাই শরিফুল নিশ্চিতভাবেই এবারের আসরে সেরা বোলার হতে চলেছেন।
কিন্তু ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সেরা হওয়ার দৌড়ে আবারও সাকিব। ১৭ উইকেট নিয়ে এবং ১১ ইনিংসে ২৩.১৮ গড় ও ১৫৮.৩৮ স্ট্রাইকরেটে ২৫৫ রান করে তার পারফর্ম্যান্সের সার্বিক ইমপ্যাক্ট ৬০৯.৯। সিলেটের ইংলিশ অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েল ২২৯ রান ও ১০ উইকেট শিকার করে ৫৩৮.২৪ ইমপ্যাক্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে তাওহিদ ৫৩১.১৫ ইমপ্যাক্ট নিয়ে।
সাকিব এর আগে ২০১২, ২০১৩, ২০১৮ ও ২০২২ সালের বিপিএলে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। আর কোনো খেলোয়াড় একাধিকবার আসরের সেরা হতে পারেননি। সেখানে ৪ বার টুর্নামেন্ট সেরা হওয়া সাকিব এবার সেই রেকর্ডটাকে পাঁচে নিয়ে যেতে চলেছেন। তাকে সার্বিক ইমপ্যাক্টে পেছনে ফেলতে পারলেই শুধু অন্য কারো টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার সুযোগ রয়েছে এবার। সেক্ষেত্রে একমাত্র সুযোগ তাওহিদের। কিন্তু সেজন্য তাকে অনেক বড় ইনিংস খেলতে হবে। তাছাড়া টুর্নামেন্ট সেরার বিবেচনা মূলত ফাইনালের আগে পর্যন্ত পারফর্ম্যান্স অনুসারেই করা হয়ে থাকে।