সাকিব আল হাসান
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন সাকিব আল হাসান। পরদিন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসেন। বাংলাদেশ দলের চলমান অনুশীলন ক্যাম্প দেখেন, সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করেন এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। ইতোমধ্যেই আবার ইনজুরিতে ফেটে যাওয়া ডান হাতের তর্জনীর এক্সরে করিয়ে তেমন সমস্যা আর পাওয়া যায়নি সাকিবের। তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ফিটনেস অনুশীলন শুরু করেছেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, ইনজুরি পরিস্থিতি ভালো অবস্থানে আসলেও পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে সাকিবের। তবে এর মধ্যেই সাকিবের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলতে না পারলেও ঈদুল আজহার পরে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আবার ক্রিকেটে ফিরবেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব।
গত মাসে ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ক্যাচ ধরতে গিয়ে ডান হাতে তর্জনীতে আঘাত পান সাকিব। পরে স্ক্যান করিয়ে তর্জনীর গোড়ায় ধরা পড়ে চিড়। তখন চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, ৬ সপ্তাহ লাগবে সাকিবের সেরে উঠতে। ফলে সিরিজের শেষ ম্যাচে আঙুলের চোট থাকায় মাঠে নামতে পারেননি তারকা এই অলরাউন্ডার। তিনি সরাসরি স্ত্রী-সন্তানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তখনই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলা হবে না তার। সেটাই সত্য হয়ে যায় যখন ৪ দিন আগে লিটন কুমার দাসকে অধিনায়ক করে একমাত্র সেই টেস্টের দল ঘোষণা করা হয়।
টেস্ট দল গত ৪ জুন থেকে অনুশীন করছে। মঙ্গলবার মাঠে আসেন সাকিব। সবাার সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডা. দেবাশীষকেও দেখান আঙুল। এরপর এক্সরে করানোর পরামর্শ দেন দেবাশীষ। সেই এক্সরে করানোর পর সাকিবের তর্জনীর অবস্থা সন্তোষজনকই পাওয়া গেছে। দেবাশীষ এ বিষয়ে বলেছেন, ‘আমি এক্স-রে দেখেছি। রিপোর্ট ভালো, সন্তোষজনক বলা যায়। পুনর্বাসন শুরু করেছে, আজকে রানিং করল। মানে ফিটনেসের যে কাজ সেটা আজ থেকে শুরু করেছে। আঙুলের অগ্রগতি সন্তোষজনক। অবশ্যই আশাবাদী আমরা, সে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে মাঠে নামবে।’
বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুর স্টেডিয়ামে আসেন সাকিব। এদিন জাতীয় দলের অনুশীলন সূচি অনুসারে দেওয়া সময়েই তিনি মাঠে আসেন। তারপর বেশ কিছুক্ষণ জিমে কাটিয়ে প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের সঙ্গে আলোচনা সেরে রানিং শুরু করেন। এক্স-রে রিপোর্ট অনুযায়ী ইনজুরি অবস্থার উন্নতি হলেও তা সেরে ওঠেনি। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও সপ্তাহখানেক লাগবে তার। অবশ্য ৬ সপ্তাহের যে ডেটলাইন আছে সাকিবের সেরে ওঠার জন্য, সে অনুসারে আগামী ১৮ জুন তার পুরোপুরি সেরে ওঠার কথা। সেদিক থেকে কিছুটা আগেভাগেই তিনি নিজেকে ফিরে পেতে শুরু করেছেন। তবে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে আরও কিছুদিন সময় দিতে হবে তাকে। ব্যাটিং-বোলিংয়ের অনুশীলনও শুরু করতে কিছুটা সময় লাগবে।
জিম-রানিং শেষে জাতীয় দলের সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর একমাত্র টেস্টের উইকেট দেখে কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার সঙ্গে কথাও বলেন সাকিব। সাকিবের খেলায় ফেরার বিষয়ে দেবাশীষ বলেছেন, ‘আগে তো ফিটনেস ঠিক করতে হবে। সেটিই মূল চ্যালেঞ্জ। আর ভাঙা আঙুল নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে না। খুব সাধারণ ফ্র্যাকচার ছিল ওটা। দুয়েকদিনের মধ্যেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করে দেব।’ ১০ জুন আফগানরা বাংলাদেশে এসে ১৪ জুন নামবে একমাত্র টেস্টে। তারপর ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবার বাংলাদেশে এসে ৫ জুলাই শুরু করবে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। তখনই খেলায় ফেরার কথা সাকিবের। তাই ৩ সপ্তাহেরও বেশি সময় রয়েছে সাকিবের পুরোপুরি ছন্দে ফেরার জন্য।