ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

জুয়ার মাধ্যমে টাকা পাচার

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ৫ মে ২০২৫

জুয়ার মাধ্যমে টাকা পাচার

বাংলাদেশে ক্যাসিনো সংস্কৃতি ২০১৯ সালে আলোচনায় আসে, যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানীর বেশ কয়েকটি অবৈধ ক্যাসিনোয় অভিযান চালায়। এরপর থেকেই নিষিদ্ধ অনলাইন ক্যাসিনোর দিকে ঝুঁকেছেন অনেকে। গত কয়েক বছরে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমগুলোতে ক্যাসিনোর বিজ্ঞাপন বেড়ে যাওয়ায় তরুণদের মধ্যে এটি আরও জনপ্রিয় হয়েছে। তরুণেরা ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের মানুষ আসক্ত হচ্ছেন এতে। যদিও বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ জুয়াখেলা, কিন্তু ডিজিটাল জুয়া অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি যে কিওয়ার্ড গুগলে সার্চ হয়ে থাকে, সেটি হচ্ছে জেটবাজ ডটকম। এই সাইটে প্রতিমাসে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ লাখ বারের মতো সার্চ করা হয়। জেটবাজ জুয়ার সাইট রয়েছে প্রথম স্থানে। এরপর দ্বিতীয় জুয়ার স্থানে অবস্থান করছে জয়া৯ ডটকম। এই সাইট বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে সার্চ হয় ৫৮ লাখের মতো। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্রিকেস ডটটিভি। এই সাইটের নামে ৩৬ লাখ বার সার্চ হয়ে থাকে।
আশার কথা হলো, দেশে অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার বন্ধে নতুন সাইবার সুরক্ষা আইন পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে এই ধরনের জুয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। সারা দেশে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে অন্তত ৫০ লাখ মানুষ জড়িত। বিটিআরসি ইতোমধ্যে ব্লক করেছে অবৈধ দুই হাজার ৬০০টি জুয়ার সাইট। অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে প্রতি বছর দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার কোটি টাকা। জুয়া খেলা ও প্রচারণার অভিযোগে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবস্থা নেওয়ার খবর সামনে এসেছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিন ইউটিউবারকে জুয়ার প্রচারণার অভিযোগে পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে জুয়ার প্রচারণার চালিয়েও দেশের শীর্ষ তারকারা সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন।
নামি-দামি সব মডেল ও অভিনয়শিল্পীরা নানা সময়ে নানা আসরে অনলাইন জুয়ার প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা সব ধরাছোঁয়ার বাইরে। একজন মডেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘বাবু ৮৮’ ও ‘ভাগ্য’ নামের দুটি অনলাইন জুয়ার প্রতিষ্ঠানের ১২টি প্রচারণা চালিয়েছেন। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসার জবাবে কিছু জানাতে অস্বীকার করেন ওই নারী মডেল। এটি থেকে বাস্তবতা অনুমান করা যায়। অচিরেই নতুন সাইবার সুরক্ষা আইনটি পাস হবে বলে আশা করা যায়। এ আইনে সাইবার স্পেসে জুয়া কিংবা অনলাইন জুয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন পাস হওয়ার পরে দ্রুততার সঙ্গে সরকার জুয়ায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া এবং বেটিং সাইটগুলো নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেবে, এমনটাই প্রত্যাশা।

প্যানেল

×