ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

অতিরিক্ত রাত জাগলে যেসব ক্ষতি হয়

প্রকাশিত: ০০:২৩, ৬ মে ২০২৫

অতিরিক্ত রাত জাগলে যেসব ক্ষতি হয়

ছবি: প্রতীকী

বর্তমান ব্যস্ত জীবনে অনেকেই পড়াশোনা, কাজ বা বিনোদনের জন্য গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন। কেউ কেউ একে "নাইট আউল" জীবনধারা বলে অভিহিত করলেও, নিয়মিত ও অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে শরীর ও মনের উপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তা মোটেও উপেক্ষার বিষয় নয়। গবেষণা বলছে, দীর্ঘমেয়াদে রাতে না ঘুমিয়ে জেগে থাকা নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে।

১. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়ে
রাতের ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত করে। কিন্তু ঘুমের ঘাটতি হলে কর্টিসল (চাপ-সম্পর্কিত হরমোন) বৃদ্ধি পায়, যা দুশ্চিন্তা, মানসিক অস্থিরতা এবং বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ায়।

২. স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগের ঘাটতি হয়
ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক দিনের তথ্যগুলো প্রক্রিয়া করে। কম ঘুম মানে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, শেখার ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং সহজেই মনোযোগ হারানো।

৩. ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়
নিয়মিত রাত জাগলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে সহজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৪. হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়
ঘুমের সময় শরীরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হরমোন নিঃসরণ হয়। রাত জাগলে এই প্রক্রিয়াগুলো ব্যাহত হয়, যার ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায়, ওজন বাড়ে এবং ডায়াবেটিস ও হরমোনজনিত অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।

৫. চোখ ও ত্বকের ক্ষতি হয়
রাত জাগার ফলে চোখ লাল হয়ে যায়, ফোলা ভাব আসে এবং দৃষ্টিশক্তি ক্ষয় হতে পারে। একইসঙ্গে ত্বক শুষ্ক ও মলিন হয়ে পড়ে, চোখের নিচে কালি পড়ে।

৬. হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে
ঘুম কম হলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হৃদপিণ্ডকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। দীর্ঘদিন নিয়মিত রাত জাগা হৃদরোগের একটি বড় ঝুঁকি।

৭. দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে
ঘুম কম হওয়ায় সতর্কতা ও রিফ্লেক্স কমে যায়, যার ফলে রাস্তা বা কাজে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়, বিশেষ করে যারা গাড়ি চালান বা মেশিনে কাজ করেন।

রাত জাগা মাঝে মাঝে হতে পারে, কিন্তু তা যেন অভ্যাসে পরিণত না হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। সুস্থ জীবনযাপন ও ভালো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ঘুম অপরিহার্য।

এম.কে.

×