
ছবি : সংগৃহীত
ইয়েমেন থেকে ছোড়া হুতি বিদ্রোহীদের একটি শক্তিশালী হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের তেল আবিবে বেন গুরিয়ান বিমানবন্দরের কাছাকাছি বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে বিমানবন্দরের একাংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সৃষ্টি হয় প্রায় ২৫ মিটার গভীর গর্ত। টাইমস অফ ইসরাইল জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রটি বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল থেকে মাত্র ৭৫ মিটার দূরে আঘাত হানে, যা ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় ধাক্কা।
এই হামলার পর বিমানে ওঠার অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত চারজন আহত হন এবং আরও দুজন বাংকারে আশ্রয় নেওয়ার সময় আহত হন। হামলার পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইনস ইসরাইলগামী ফ্লাইট বাতিল বা স্থগিত করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষার চার স্তর, আয়রন ডোম, ডেভিড’স স্লিং, এরো এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিনির্ভর থার্ড, সবকিছু থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন সংবেদনশীল এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) স্বীকার করেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ঠেকাতে তারা একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
স্থানীয় ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলার পর তেল আবিবের আকাশে কালো ধোঁয়া উড়ছে এবং আতঙ্কিত মানুষজন রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন। সাইরেন বাজতেই লক্ষ লক্ষ মানুষ তড়িঘড়ি করে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান। ইসরাইলের বেশিরভাগ শহরে এবং অনেক বাসার মধ্যেই বোমা আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলো সাধারণত বন্ধ থাকে কিন্তু সাইরেন শুনলেই খুলে দেওয়া হয়।
এর আগেও হুতি বিদ্রোহীরা তেল আবিবে হামলা চালিয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তারা শহরটিতে প্রথম প্রাণঘাতী ড্রোন হামলা চালায় এবং গত ডিসেম্বরেও একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ডজনখানেক মানুষ আহত হয়।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুতি দমনে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ ইতোমধ্যেই মাত্র তিন সপ্তাহে এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, তবুও তাদের এই ধরনের হামলা প্রতিহত করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অপেক্ষাকৃত দুর্বল একটি গোষ্ঠীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র যদি ইসরাইলের মতো সামরিকভাবে শক্তিশালী একটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে, তাহলে তা শুধুই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নয়, বরং গোটা আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলে। ফলে এই হামলাকে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে মনে করছেন।
আঁখি