
ছবি: প্রতীকী
বিশ্বের কোনো ওষুধই বয়স বাড়া পুরোপুরি থামাতে পারে না, তবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক খাবারের মাধ্যমে বয়সের প্রভাব অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। নিয়মিত পানি পান, সানস্ক্রিন ব্যবহার, অতিরিক্ত মেকআপ এড়িয়ে চলা ও ত্বক ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজ করার মতো সাধারণ পরামর্শ আমরা সবাই জানি। কিন্তু জানেন কি, কিছু নির্দিষ্ট সাপ্লিমেন্টও ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী হতে পারে?
তবে প্রত্যেকের শরীর ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, এবং কিছু সাপ্লিমেন্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। তাই নতুন কিছু গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
১. এনএমএন (নিকোটিনামাইড মনোনিউক্লিওটাইড)
বর্তমানে অ্যান্টি-এজিং দুনিয়ায় সবচেয়ে আলোচিত সাপ্লিমেন্টগুলোর একটি হলো NMN। এটি NAD+ নামে পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ অণুর পূর্বধাপ, যা শরীরের কোষে শক্তি তৈরি এবং ডিএনএ মেরামতে ভূমিকা রাখে। বয়স বাড়ার সঙ্গে NAD+ এর পরিমাণ কমে যায়, যার ফলে ক্লান্তি, ধীর বিপাকক্রিয়া ও নানা বয়সজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
কীভাবে কাজ করে:
NMN সাপ্লিমেন্ট NAD+ এর মাত্রা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে, যার ফলে কোষে শক্তির উৎপাদন বাড়ে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়তে পারে এবং কোষীয়ভাবে বয়সের গতি কমানো সম্ভব হতে পারে।
ব্যবহারবিধি:
সাধারণত এটি ক্যাপসুল বা গুঁড়ার আকারে গ্রহণ করা হয়। দৈনিক ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ডোজ জনপ্রিয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।
২. কোলাজেন পেপটাইডস
কোলাজেন হলো আমাদের শরীরের সবচেয়ে প্রচুর প্রোটিন, যা ত্বক, চুল, নখ ও অস্থিসন্ধিকে গঠন করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে কোলাজেন উৎপাদন কমে যায়, ফলে দেখা দেয় বলিরেখা, ত্বক ঝুলে যাওয়া।
কীভাবে কাজ করে:
কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে, সূক্ষ্ম বলিরেখা কমাতে সহায়তা করে। চুল ও নখ মজবুত করতেও এটি কার্যকর।
ব্যবহারবিধি:
গরম বা ঠান্ডা পানীয়তে মিশিয়ে খাওয়া যায়, এটি প্রায় স্বাদহীন। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ গ্রাম গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
৩. অ্যাস্ট্যাক্স্যান্থিন
অ্যাস্ট্যাক্স্যান্থিন এক ধরনের প্রাকৃতিক কেরোটিনয়েড, যা মাইক্রোআলগি, স্যামন মাছ ও চিংড়িতে পাওয়া যায়। এটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত, যা কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে, যা বার্ধক্যের অন্যতম কারণ।
কীভাবে কাজ করে:
ভিটামিন সি এর তুলনায় এটি ৬,০০০ গুণ বেশি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং বয়সজনিত দাগ হ্রাসে সহায়ক। চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা, সহনশক্তি বাড়ানো এবং মানসিক দক্ষতা ধরে রাখতেও এটি সহায়তা করতে পারে।
ব্যবহারবিধি:
সাধারণত সফটজেল বা ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়। প্রতিদিন ৪ থেকে ১২ মিলিগ্রাম গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও কী করবেন?
এই সাপ্লিমেন্টগুলো ছাড়াও ত্বকের যত্নে আরও কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন:
পানি পান করুন: ত্বক আর্দ্র ও কোমল রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান: ফাস্ট ফুড, চিনি ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন।
ত্বক ময়েশ্চারাইজ করুন: শুষ্ক ত্বক দ্রুত বয়সের ছাপ ফেলে, তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেকআপে সংযম: কম মেকআপই ভালো। আর কখনওই মেকআপ নিয়ে ঘুমাবেন না।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
রাকিব