ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

জ্বালাও-পোড়াও-হত্যা- ফল কি

নূরুর রহমান খান

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

জ্বালাও-পোড়াও-হত্যা- ফল কি

নূরুর রহমান খান

বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের অনুগামী ছাপোষা কয়েকটি দলের অবরোধ-হরতালের নামে জ্বালাও-পোড়াও-হত্যা কর্মসূচি চলমান। ইতোমধ্যে নেতাদের নির্দেশে দলীয় কর্মী তথা দুর্বৃত্তদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুই শতাধিক যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বাসে নিদ্রিত একজন হেলপারকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। একজন কর্তব্যরত পুলিশকে প্রকাশ্য দিবালোকে পৈশাচিক উল্লাসে পিটিয়ে খুন করেছে। ২০/২৫ জন সাংবাদিক লাঞ্ছিত হয়েছেন। অনেকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়েছে এবং ভাঙচুর করেছে। সপ্তম দফায় একযোগে অবরোধ ও হরতাল দিয়েছে।
অবরোধকারীরা ফরমান জারি করেছে, যতদিন পর্যন্ত বর্তমান সরকারকে টেনে-হিঁচড়ে ক্ষমতাচ্যুত করতে না পারবে, ততদিন তাদের এই জিহাদ অব্যাহত থাকবে। অন্যতম নেতা ড. মঈন খান বলেছেন, ‘মানুষ আন্দোলনে নেমেছে, গণতন্ত্র অর্জন করবই।’ দেশের জনসাধারণের কাছে সব পানির মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে। ঢাকা শহর জনাকীর্ণ। কোনো কোনো স্থানে যানবাহনে রাস্তায় আগের মতোই যানজট দেখা যাচ্ছে। আরেক নেতা হুঙ্কার ছেড়েছেন, ‘বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এ অবরোধ চলবে।’ তার অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য গোটা জাতি নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়েছে।’ এ সকল বক্তব্য বিশ্লেষণের আগে এদের ‘ব্লাড গ্রুপের’ সন্ধান নেওয়া প্রয়োজন।

ড. মঈন খান এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তার পিতা মোমেন খান বঙ্গবন্ধুর আমলে ছিলেন খাদ্যসচিব। জাতির জনকের হত্যার পর ঘাতকদের হেফাজতকারী জিয়ার শাসনকালে তিনি হলেন খাদ্যমন্ত্রী। তার পুত্রধন তো নেমকহারাম হতে পারেন না। তাই জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দলের তাঁবেদারি করে সেবা দিচ্ছেন। বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন- সন্দেহ নেই। পাকিস্তানি চিন্তা-চেতনার ধারক ও বাহক জিয়া কি স্বেচ্ছায় মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন? চট্টগ্রামে ব্রিগেডিয়ার জানযুয়ার বাড়িতে তাকে প্রায় গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তখন চট্টগ্রামে জিয়া ছিলেন সর্বজ্যেষ্ঠ বাঙালি সেনাকর্মকর্তা। তারপরেই ছিলেন মেজর (পরবর্তীকালে লে. জেনারেল) মীর শওকত আলী।

অসহযোগ আন্দোলনের সময় মেজর শওকত তাকে বারবার সতর্ক করেছেন, বিপদ ঘনিয়ে আসছে, একটা কিছু করতে হবে। দ্বিধান্বিত জিয়ার একই উত্তর, ‘অপেক্ষা কর’। ২৫ মার্চ রাতে যখন ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে পাকিস্তানি আর্মি সর্বস্তরের বাঙালি আর্মি, ইপিআর, পুলিশ সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল (বর্তমান জহুরুল হক হল) ও জগন্নাথ হলে নিধনযজ্ঞ শুরু করে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা শুনে চট্টগ্রামের হালিশহরে তৎকালীন ইপিআরের কমান্ডিং অফিসার ক্যাপটেন (পরবর্তীকালে মেজর) রফিকুল ইসলাম ক্যাপটেন (পরবর্তী সময়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) খালেকুজ্জামান চৌধুরীকে মেজর জিয়াকে খবর দেওয়ার জন্য পাঠান।

পথে শুনতে পেলেন জিয়া পোর্টে যাচ্ছেন ‘এমডি সোয়াত’ থেকে অস্ত্র খালাস করতে। ক্যাপটেন চৌধুরী পোর্টের দিকে ছুটলেন এবং আগ্রাবাদে গিয়ে দেখলেন জিয়ার নির্দেশে সিপাইরা পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য সংগ্রামী জনতার দেওয়া রাস্তার ব্যারিকেড সরাচ্ছে। সেখানে সব ছিল পাঞ্জাবি সিপাই। খবর শুনে জিয়া বুঝলেন তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই পোর্টে পাঠানো হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে জিয়া তার পরিকল্পনা জানিয়ে খালেকুজ্জামানকে ৬নং আর্মি ব্যারাকে পাঠিয়ে দিলেন এবং পাঞ্জাবি সিপাইদের বললেন, ব্রিগেডিয়ার সাহেব হুকুম দিয়েছেন পোর্টে না গিয়ে ৬নং ব্যারাকে হাজির হতে। ৬নং ছিল বাঙালি সিপাইদের ব্যারাক।

পাঞ্জাবি সিপাইরা সেখানে উপস্থিত হওয়া মাত্র তাদের গ্রেপ্তার করে জানযুয়ার কোয়ার্টারে গিয়ে কলিং বেল চাপতেই নৈশ পোশাকে উদ্বিগ্ন জানযুয়া নিজেই দরজা খুলে বাইরে আসেন এবং সঙ্গে সঙ্গে জিয়ার নির্দেশে তাকে বন্দি করে পরবর্তী করণীয় স্থির করেন। এ ঘটনাটি মেজর জিয়া স্বয়ং ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমিতে ‘প্রতিরক্ষা বাহিনী দিবস’ উপলক্ষে জেনারেল ওসমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বর্ণনা করেছেন। তখন মঞ্চে মেজর শওকত, নেভির ক্যাপ্টেন নুরুল হক, বিমানবাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল বাশার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মোদ্দাকথা, জিয়াউর রহমান প্রাণের টানে কিংবা দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেননি, এসেছেন প্রাণের দায়ে পরিস্থিতির কারণে। তার শিক্ষাজীবন, কৈশোর, যৌবনের প্রথমার্ধ কেটেছে পাকিস্তানে।

অবাঙালি পরিবেশে তার মন-মানসিকতা গঠিত। স্বাধীনতার পরে ক্ষমতার মোহে তা আরও প্রবল হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি বাঙালিকে বানিয়ে দিলেন ‘বাংলাদেশী’। ‘বাংলাদেশ বেতার’ হলো ‘রেডিও বাংলাদেশ’। সংবিধান থেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা মুছে ফেলার প্রাথমিক কাজটি তিনিই করেছিলেন। এসব থেকেই তার মানসিক প্রবণতা সহজেই উপলব্ধ।
সেনা কর্মকর্তা হিসেবে জিয়া এবং এরশাদ (প্রয়াত) প্রসঙ্গে এয়ার কমোডর শামসুল ইসলামের মূল্যায়ন প্রণিধানযোগ্য। তার মতে, জিয়া নেকড়ের চেয়েও হিংস্র ও ক্ষিপ্র এবং এরশাদ সাপের চেয়েও বিষাক্ত ও শৃগালের মতো ধূর্ত। বিশিষ্ট সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকার্নহাস ‘বাংলাদেশ : লিগ্যাসি অব ব্লাক’ গ্রন্থে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে বিভিন্ন সময়ে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র, ক্যু ও রক্তপাতের রোমহর্ষক বিবরণ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে সামরিক বাহিনীতে বহুবার ক্যু-পাল্টা ক্যু হয়েছে। বিচারের প্রহসন করে অসংখ্য অফিসার ও সৈনিককে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়- যাদের অধিকাংশই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা অথবা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

সত্যের খাতিরে স্বীকার করতেই হবে, স্বাধীনতা-উত্তর প্রায় দশ পনেরো বছর সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ ঘটনাবলি বাংলাদেশের ইতিহাসে কালো অধ্যায়। এর নায়ক জিয়াউর রহমান এবং তার উত্তরসূরি পাকিস্তান প্রত্যাগত এরশাদ। বঙ্গবন্ধু হত্যার আত্মস্বীকৃত খুনিদের শীর্ষনেতা কর্নেল ফারুকের ফাঁসি হয়েছে, কর্নেল রশিদ পলাতক। খুনি ফারুক-রশিদ-ডালিম-নূরদের সঙ্গে প্রথমাবধি জিয়ার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। খন্দকার মোশতাকের পরামর্শ ও সহযোগিতায় জিয়া তাদের রক্ষা এবং বিদেশের দূতাবাসগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে বিলাসী জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দেন।

বঙ্গবন্ধুর খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে জিয়ার প্রত্যক্ষ যোগাযোগের বহু প্রমাণ রয়েছে। অ্যান্থনি ম্যাসকার্নহাস জিয়ার নৃশংসতার যে বিবরণ দিয়েছেন, তা অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তব। জিয়া পাঁচ বছরের শাসনামলে ‘২০টি বিদ্রোহ ও অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সম্মুখীন হন। ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর জিয়ার বিরুদ্ধে পরিচালিত অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলে জিয়া যেভাবে নিজের সৈন্যদের ওপর বেপরোয়া হত্যাকা- চালান- তা এই উপমহাদেশের ইতিহাসে কোনো জেনারেল করেছেন বলে নজির নেই। এ প্রসঙ্গে অ্যান্থনি জিয়ার নৃশংসতা সম্বন্ধে উল্লেখ করেন যে, জিয়ার খুব ঘনিষ্ঠ একজনকে জিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বলেন, ‘জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি এক হাতে হত্যা করে অন্য হাতে আহার করতে পারতেন।’ ’৭৬-এর জুলাই মাসে জিয়ার সুহৃদ ফারুক-রশিদ তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ ঘটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ফারুক-রশিদ-ডালিমসহ অন্যান্য সহযোগী, যারা বঙ্গবন্ধু ও জেল হত্যাকা-ের আত্মস্বীকৃত খুনি, তাদের দেশত্যাগের সুবন্দোবস্ত করে দেয়। অথচ তাদের অনুগত বহু সৈনিককে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
’৭৭-এর এয়ারফোর্স কিলিংকে পুঁজি করে বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত বিমানবাহিনীকে প্রায় নিষ্ক্রিয় করার উদ্দেশ্যে অফিসার ও বিমানসেনাদের নির্বিচারে কিংবা বিচারের প্রহসন করেÑ ম্যাসকার্নহাসের বয়ানে, ‘সরকারের হিসেব মতে তিনি (জিয়া) ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১১৪৩ (এগারো শত তেতাল্লিশ) জন সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে লটকিয়ে হত্যা করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় পৈশাচিক সাজার আর কোনো নজির নেই। বেসামরিক বন্দিরা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে জেলখানার রাতগুলো সৈনিকদের আর্তচিৎকারে বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল।’

বাংলাদেশের রাজনীতির রহস্যময় পুরুষ সিরাজুল আলম খান স্মৃতিচারণে উল্লেখ করেছেন যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ‘জিয়াউর রহমান তৎকালীন সামরিক বাহিনীর মধ্যস্থলে গড়ে ওঠা ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করে তার শক্ত ভিতকে সুদৃঢ় করেন। এই ক্ষমতা সংহত করার ক্ষেত্রে যাকে যাকে তার বাধা মনে হয়েছে, তাদেরকে তিনি নির্মূল করেন।’ জিয়া কর্নেল তাহেরকেও রেয়াত করেননি।
বিচারপতি সায়েমকে সরিয়ে জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক, সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং সেনাবাহিনীর স্টাফ প্রধানসহ সকল ক্ষমতা কব্জা করেন। দম্ভভরে বলতেন, রাজনীতিবিদদের রাজনীতি হারাম করে দেবেন। অতঃপর জনগণের খেদমতে রাজনীতি করার নিয়তে আড়ালে থেকে বিচারপতি সাত্তার সাহেবকে আহ্বায়ক করে ‘জাগদল’-এর পত্তন করেন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও সেনাপ্রধানের পদটি অক্ষুণœ রেখে উর্দি পরিহার করে সাফারি পরিধান করে বেসামরিক রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে নিয়োগ করেন। এটিকে জায়েজ করার মানসে এবং জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য ১৯৭৮ সালে এক নির্বাচন- তামাশার এন্তেজাম করেন।

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল ওসমানীর বিরুদ্ধে সর্ববিধ কারচুপির পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করেন। অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ম্যাসকার্নহাস জেনারেল খলিলুর রহমানের বরাত দিয়ে লিখেছেন, ‘একজন সিনিয়র জেনারেল ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে এক ভাষণে নির্দেশ প্রদান করেন যে, ‘যে কোনো উপায়ে হোক’ নির্বাচনে জেনারেল জিয়ার বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। তবে শতকরা ৭০ ভাগের বেশি ভোট যেন জিয়ার পক্ষে দেখানো না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
ক্যান্টনমেন্টপ্রসূত জিয়াউর রহমানের জাগদল রূপান্তরিত হলো ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা ‘বিএনপি’তে। এখন তার কর্ণধার খালেদা জিয়া বেনামে তারেক রহমান। জিয়ার হিংস্রতা এবং খালেদার কুটিলতাÑ সকল বৈশিষ্ট্যই রয়েছে তারেকের চরিত্রে। শেখ হাসিনাকে সপার্ষদ হত্যা করার উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার অনুমোদনক্রমে তারেকের পরিকল্পিত নীলনক্সা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছিল ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা। এই মামলার দ-প্রাপ্ত আসামি তারেক লন্ডনে বসে আসন্ন নির্বাচন ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

মনে পড়ে, আলো ঝলমলে শহরে নবাগত অজপাড়াগাঁয়ের বৃদ্ধের উক্তি- ‘আল্লার কি কুদরত! এক তলায় বইয়া বোতাম টিপে আর দশ তলায় বাত্তি জ্বলে!!’ তারেক লন্ডনে বসে পেট্রোল ঢালে আর বাংলাদেশে যানবাহন জ্বলে, মানুষ দগ্ধ হয়, তার দলীয় লোকের পিটুনিতে পুলিশ মরে, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স জ্বলে, স্কুল দগ্ধীভূত হয়Ñ এমনকি প্রধান বিচারপতির বাড়িও তাদের আক্রোশ থেকে রেহাই পায়নি। এ যেন ইসরাইলি বর্বরতার নবতর সংস্করণ! এসব গণবিরোধী, সমাজবিরোধী ধ্বংসযজ্ঞে কি নির্বাচন বানচাল করা যাবে? এতে নির্বাচনবিরোধীদেরই কপাল পুড়বে। 
সাধারণ মানুষ নির্বাচনমুখী। তারা চায় সর্বতোভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনে সরকারের কোনোরকম অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা কাম্য নয়। তেমনি প্রয়োজন সকল দলের আন্তরিক সহযোগিতা। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকে নিরপেক্ষভাবে সততার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে ফল যাই হোক না কেনÑ সকল দলকে তা প্রসন্নচিত্তে মেনে নিতে হবে। এতে ভোটার তথা সাধারণ মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং গণতন্ত্রের বিজয় হবে সুনিশ্চিত।
সাধারণ মানুষ দলের কর্মসূচি ও সাফল্য দেখেই ভোট দেবে এবং জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে। অরাজক-হিংসাত্মক পথ পরিহার করে যে দল এগিয়ে আসবে, সে দলের প্রতিই মানুষ আস্থা রাখবে এবং তাদের হাতেই থাকবে রাষ্ট্র পরিচালনার অধিকার।

লেখক : প্রাক্তন অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

×