ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বইমেলায় যাই অথচ বই কিনি না!

মাহমুদ নাঈম

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বইমেলায় যাই অথচ বই কিনি না!

আবেগাপ্লুত, চেতনা, শহীদদের স্মৃতিগাঁথা আর প্রীতির বন্ধনে আমাদের  অমর একুশে প্রাণের বইমেলা

আবেগাপ্লুত, চেতনা, শহীদদের স্মৃতিগাঁথা আর প্রীতির বন্ধনে আমাদের  অমর একুশে প্রাণের বইমেলা। বিশেষ করে বইমেলা আমাদের মাতৃভাষার প্রতি মর্যাদাকে প্রতিফলিত করে।  ভাষার মর্যাদা ও গুরুত্ব বুঝিয়ে দেয়। তার কারণ হলো আমাদের এই বাংলা ভাষা রক্তের বিনিময়ে কেনা। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে পরিবর্তিত হতে-হতে ১৯৮৪ সাল থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা নামে’ বইমেলা। সেই থেকে বাঙালির রক্ত-মাংসের সঙ্গে মিশে গেছে বইমেলার উৎসব। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, আমরা অনেকেই বইমেলায় যাই কিন্তু বই ক্রয় করতে অনীহা প্রকাশ করে থাকি।
অনেকেই আবার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। মেলায় যাব, ঘুরব ফিরব বইয়ের ঘ্রাণ  নেব, চলে আসব। বই কিনব কেন? কেনই বা  বই পড়ব! ধরুন, গ্রীষ্মের খরায়  কিংবা মরুভূমিতে এক তৃষ্ণার্ত মানব পানির পিপাসায় ভুগছে। জীবন বাঁচাতে তার শুধু চাই কয়েক ফোঁটা জল। তখন সে বুঝতে পারে, সত্যিই তো!  পানির অপর নাম জীবন। তেমনি  জীবনের অপর নাম বই। নিশ্চয় এটা শুনে একটু অবাক হতে পারেন। কিন্তু কেন!  বই এমন একটি অমূল্য সম্পদ যার কোনো ভাগ নেই স্বার্থ নেই। শৈশব থেকে কবর পর্যন্ত বই হলো স্বার্থহীন পরম বন্ধু। 
আপনার চারদিকে কোলাহল কিন্তু তবুও আপনার আপন কেউ নেই। খুব একাকিত্বে ভুগছেন। মানুষের জীবন নিয়ে গড়া এমন একটি গল্পে  কিংবা উপন্যাস বই নিয়ে পড়ুন এক খোলা জায়গায়।  নিশ্চয় আপনাকে প্রশান্তি দেবে।  অথবা আপনি যে কাজেই হাত দিচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন। আপনি  নীরবে বসে নবী অথবা সাহাবিদের জীবনী নিয়ে লেখা বই পড়ুন। দেখবেন  নিশ্চয় আপনি আলোর পথ খুঁজে পেয়েছেন। আপনাকে উজ্জীবিত করবে। মনোবল বাড়িয়ে দিবে।

আপনার মন খারাপ, বিষণœতা, যদি  রম্যবিষয়ক বই পড়েন নিশ্চয় আপনাকে হাসাতে বাধ্য করবে। ভ্রমণে ক্লান্তি কিংবা রাতে ঘুম আসছে না! হাতে থাকা মোবাইল ফোনটা  দূরে রেখে বুক সেল্ফ থেকে একটি বই নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। দেখবেন আপনার একদিকে ঘুম আসছে আর অন্যদকে দিনদিন জ্ঞান বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতএব এখানেই বুঝা যাচ্ছে যে, জীবনের অপর নাম বই। বই হলো আমাদের জীবনের আলো যত পড়ব ততই জ্ঞান-অর্জন লাভ করব। বইয়ের কোন বিকল্প নেই।

অনেকেই আছেন বই পড়তে আগ্রহী, কিন্তু বই পড়তে গেলেই আর ভালো লাগছে না। তার জন্য প্রয়োজন বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। বন্ধুত্ব হয়ে গেলে  বুঝতে পারবেন যে, কোন সময় কোন বই পড়া উপযোগী। কোন বইটা ভালো, কোন বইটা দেখাবে আলো। আসুন আধুনিকতার ইন্টারনেটে অসুস্থ  বিনোদন পরিহার করে, সুস্থতার বিনোদন গ্রহণ করি। নিজে বই পড়ি। বন্ধু-বান্ধব প্রিয়জনকে  বই উপহার দিই। 
বই হোক আমাদের পথচলার চাবিকাঠি।
খিলপাড়া, কিশোরগঞ্জ থেকে

×