ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১

রূপকথার রাজপুত্র অ্যান্ড্রু ল্যাং

মোস্তাফিজুল হক

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

রূপকথার রাজপুত্র অ্যান্ড্রু ল্যাং

১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দের ৩১ মার্চ স্কটল্যান্ডের সীমান্ত শহর সেলকার্কশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন এক রূপকথার রাজপুত্র। সেই রূপকথার রাজপুত্রের নাম অ্যান্ড্রু ল্যাং। যাঁরা ছোটদের নিয়ে গল্প লিখে পৃথিবীর বুকে নিজেদের একটা স্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছেন, তিনি তাঁদেরই একজন। তিনি খ্যাতিমান স্কটিশ ছড়াকার কবি, ঔপন্যাসিক, সাহিত্য সমালোচক, নৃতাত্ত্বিক, মনোবিদ ও ইতিহাসবেত্তা। অ্যান্ড্রু ল্যাং মূলত লোকসাহিত্য ও রূপকথার সংগ্রাহক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিতি।
শৈশবে তিনি সেলকার্ক গ্রামার স্কুল এবং লরেটো স্কুলে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি এডিনবার্গ একাডেমি, সেন্ট অ্যান্ড্রুজ, বলিওল কলেজ এবং অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করেছেন। কৃতী ছাত্র হিসেবে তিনি ১৮৬৮ সালে চূড়ান্ত শাস্ত্রীয় বিদ্যায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে সম্মানিত হন। মার্টন কলেজের সহকর্মীদের প্রেরণায় তিনি দ্রুতই একজন কবি সাংবাদিক, সাহিত্যসমালোচক ও ইতিহাসবেত্তা হিসেবে সময়ের অন্যতম সক্ষম ও বহুমুখী লেখকের খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি নিও-জ্যাকবাইট সমাজের ‘অর্ডার অব দ্য হোয়াইট রোজ’-এর সদস্য ছিলেনÑ যা উনিশ শতকের শেষ দিকের অনেক লেখক ও শিল্পীকে আকৃষ্ট করে। অ্যান্ড্রু ল্যাং ১৯০৬ সালে এফবিএ সদস্যও নির্বাচিত হন। তাঁর নামে স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতামালাও চালু আছে।
অ্যান্ড্রু ল্যাং মূলত লোককাহিনী, পৌরাণিক কাহিনী ও ধর্মবিষয়ক প্রকাশনার জন্য সমধিক পরিচিত। শৈশব থেকেই তাঁর লোককাহিনীর প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। তিনি অক্সফোর্ডে পড়তে আসার আগেই জন ফার্গুসন ম্যাকলেন পড়েছিলেন। অক্সফোর্ডে ভর্তি হওয়ার পর তিনি ইবিবি টাইল-এর সাহিত্যকর্ম দ্বারা প্রভাবিত হন।
তাঁর প্রথম দিকের প্রকাশনাগুলো হলো ‘কাস্টম অ্যান্ড মিথ’ (১৮৮৪)। ল্যাং ‘পৌরাণিক কাহিনী’, ‘আচার ও ধর্ম’ বা ‘গুঃয, জরঃঁধষ ধহফ জবষরমরড়হ’ (১৮৮৭) কে অযৌক্তিক পুরনো উপাদান থেকে বের করে আরও প্রাণবন্ত করে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর প্রবন্ধে আঠারো শতকের ধর্মতত্ত্বে ‘আভিজাত্য ও বর্বরতা’র ধারণা প্রচণ্ড প্রভাব ফেলেছিল। এতে তিনি ইংল্যান্ডের ঐশ্বরিক ঘটনা তথা ‘বর্বর’ দৌরাত্ম্যের সমসাময়িক আগ্রহের বিষয়কে সমান্তরালভাবে তুলে ধরেন। তিনি তাঁর লেখায় উচ্চ আধ্যাত্মিক ধারণার অস্তিত্বও বজায় রেখেছিলেন। তাঁর ‘ব্লু ফেয়ারি বুক’ (১৮৮৯) এর সুন্দরতম উপস্থাপন ও চিত্রিত সংস্করণ রূপকথাকে উঁচু স্থানে পৌঁছে দেয়। পরে তিনি আরও অনেক রূপকথার সংগ্রহ উপহার দেন। এগুলো অ্যান্ড্রু ল্যাং-এর ‘রূপকথা সমগ্র’ হিসেবে পরিচিত। এসব বইয়ের বেশিরভাগ গল্পের সংগ্রহ, অনুবাদ ও অনুলিখনের জন্য তিনি তাঁর স্ত্রীকেও অনেকাংশেই কৃতিত্ব দেন।
জনাব ল্যাং ‘মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা’রও অন্যতম স্রষ্টা ছিলেন। নৃবিজ্ঞান বিষয়ক তাঁর বইগুলোর মধ্যে ‘দ্য বুক অব ড্রিমস অ্যান্ড প্রেতস’ (১৮৯৭), ‘ম্যাজিক অ্যান্ড রিলিজিয়ন’ (১৯০১) ও ‘দ্য সিক্রেট অব দ্য টোটেম’ (১৯০৫) অন্যতম। অ্যান্ড্রু ল্যাং ১৯১১ সালে মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অ্যান্ড্রু ল্যাং ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় আধ্যাত্মবাদ সম্পর্কে তাঁর শিক্ষক টাইলরের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যাপকভাবে উৎসাহী হন। তিনি বস্তুবাদের নৃতাত্ত্বিক সমালোচনার প্রয়াসে টাইলরের কাজ ও তাঁর নিজের মনস্তাত্ত্বিক গবেষণাকে ব্যবহার করেন। তিনি তাঁর ফোকলোর সোসাইটির সহকর্মী এডওয়ার্ড ক্লডের সঙ্গে ‘সাইকো-ফোকলোর’ ধারাশৃঙ্খল নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর এ বিতর্কের পেছনের উদ্দেশ্য ছিল রূপকথা ও লোককাহিনীকে মনস্তাত্ত্বিক গবেষণার অন্তর্ভুক্ত করা।
এস এইচ বাচারকে সঙ্গে নিয়ে অ্যান্ড্রু ল্যাং হোমারের ‘ওডিসি’র গদ্যানুবাদ (১৮৭৯) করেন। তিনিই মায়ার্স ও ওয়াল্টার লিফের সঙ্গে ‘ইলিয়াড’-এর গদ্য সংস্করণ (১৮৮৩) তৈরির কাজেও সহযোগিতা করেন। জনাব ল্যাং ছিলেন রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গির হোমারিক ভাবাদর্শের পণ্ডিত। তাঁর হোমার ও গ্রিক পাঠবিষয়ক অন্যান্য রচনার মধ্যে রয়েছে ‘এসেইজ অন লিটল’ (১৮৯১), ‘হোমার অ্যান্ড এপিক’ (১৮৯৩)। অ্যান্ড্রু ল্যাং-এর সাহিত্য ও পৌরাণিক প্রবন্ধ ‘দ্য হোমিক হিমনস’ (১৮৯৯) একটি গদ্যানুবাদÑ যেখানে তিনি গ্রিক মিথ ও অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনীর সমান্তরাল চিত্র এঁকেছেন। তাঁর এ ধরনের বইগুলোর মধ্যে ‘হোমার অ্যান্ড হিজ এজ’ (১৯০৬), ‘হোমার অ্যান্ড অ্যানথ্রোফলজি’ (১৯০৮) উল্লেখযোগ্য।
অ্যান্ড্রু ল্যাং শিশুতোষ ছড়া বা নার্সারি রাইমস লিখেও যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। দ্য ডেইলি নিউজ পত্রিকায় সাহিত্য সমালোচনা বিষয়ে প্রকাশিত নিবন্ধের সূত্রে তিনি দ্রুত পরিচিত হয়ে ওঠেন। ‘ব্যালাডস অ্যান্ড লিরিকস অব ওল্ড ফ্রান্স’ (১৮৭২), ‘হেলেন অব ট্রয়’ (১৮৮২) এবং ‘গ্রাস অব পারনাসুস’ (১৮৮৮) কাব্যগ্রন্থ লিখে কবি হিসেবে খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। ‘দ্য মার্ক অব কেইন’ (১৮৮৬) এবং ‘দ্য ডিসেনটেংলারস’ (১৯০২) লিখে ঔপন্যাসিক হিসেবেও খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। তিনি স্যার ওয়াল্টার স্কট-এর জীবনীগ্রন্থও লিখেছেন। বলতে গেলে সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখাতেই তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। শিশুদের জন্য তাঁর লেখা ও সংকলিত উল্লেখযোগ্য রূপকথার বইগুলো হলো :  
‘দ্য ব্লু ফেয়ারি বুক’ (১৮৮৯) : ‘দ্য ব্লু ফেয়ারি বুক’ প্রথম সিরিজ ভলিউম। বইটিতে বেশ কয়েকটি পরিচিত শ্রেষ্ঠ গল্পের সমাবেশ ঘটেছে। যার উৎসমূলে রয়েছে জনপ্রিয় গল্পকার ‘গ্রিম ব্রাদার্স’, ‘চার্লস পেরাল্ট’ এবং ‘ম্যাডাম ডি’আউলনয়ের’, ‘অ্যারাবিয়ান নাইটস’সহ রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার। ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট’, ‘হ্যানসেল অ্যান্ড গ্রেটেল’, ‘পুস ইন বুটস’, ‘ট্রাস্টি জন’, ‘জ্যাক অ্যান্ড দ্য জায়ান্টকিলার’, ‘গোল্ডিলক্স’সহ আরও অনেক পছন্দনীয় গল্পে সাজানো বইটি চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক। সব মিলিয়ে সংকলনটিতে ৩৭টি গল্প রয়েছে।
‘দ্য রেড ফেয়ারি বুক’ (১৮৯০) : অ্যান্ড্রু ল্যাং-এর দ্বিতীয় সিরিজ বই এটি। এ বইটিও ৩৭টি গল্পে সাজানো। এসব গল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গল্প হলো : ‘দ্য টুয়েলভ্ ড্যান্সিং প্রিন্সেস’, ‘দ্য প্রিন্সেস মেব্লসম’, ‘সোরিয়ামরিয়া ক্যাসল’, ‘দ্য মাস্টার থিফ’, ‘ব্রাদার অ্যান্ড সিস্টার’, ‘প্রিন্সেস রোসেট’, ‘রাপুনজেল’, ‘দ্য গোল্ডেন গৌজ’, ‘দ্য মার্র্র্র্র্র্র্র্ভেলাস মিউজিশিয়ান’ ইত্যাদি। এই সংস্করণে অ্যান্ড্রু ল্যাং কিছু কিছু গল্পকে নিজের মতো সংক্ষিপ্ত করেছেন এবং কোনো কোনোটি আরও আকর্ষণীয় করতে কিছুটা পরিবর্তনও এনেছেন।
‘দ্য ব্লু পোয়েট্রি বুক’ (১৮৯১) : শিশুকিশোরদের জন্য ছড়া, কবিতা, গীতিকবিতায় সাজানো এ বইটিও একটি সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ। বইটির শুরুতেই বেনামী তথা প্রচলিত ১১টি ছড়া-কবিতা যুক্ত হয়েছে। তারপর বার্নফিল্ড রিচার্ড (১৫৭৪-১৬২৭), ব্লেক উইলিয়াম (১৭৫৭-১৮২৮), ব্রাউনিং এলিজাবেথ ব্যারেট (১৮০৯-১৮৬১), ব্রায়ান্ট উইলিয়াম কুলেন (১৭৯৪-১৮৭৮), বুনিয়ান জন (১৬২৮-১৬৮৮), বার্ন মিনেেস্ট্রল (?) এর গীতি কবিতা যুক্ত করেছেন। ল্যাং তখন সময়ের মৃতকবিদের সাহিত্যকর্ম দিয়েই বইটি সাজিয়েছেন। তাঁর এই নির্বাচনকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এ বইটিতে অন্যান্য যাঁদের কবিতা যুক্ত হয়েছে, তাঁরা হলেন :
বার্নস রবার্ট (১৭৫৯-১৭৯৬), বায়রন লর্ড (১৭৮৮-১৮২৪), ক্যাম্পবেল থমাস (১৭৭৭-১৮৪৪), কোলরিজ স্যামুয়েল টেলর (১৭৭২-১৮৩৪), কলিন্স উইলিয়াম (১৭২১-১৭৫৬), কোপার উইলিয়াম (১৭৩১-১৮০০), ডিবিডিন চার্লস (১৭৪৫-১৮১৪), ড্রেটন মাইকেল (১৫৬৩-১৬৩১), ড্রাইডেন জন (১৬৩১-১৭০১), এলিয়ট জেন (১৭২৭-১৮০৫), গোল্ডস্মিথ অলিভার (১৭২৮-১৭৭৪), গ্রে থমাস (১৭১৬-১৭৭১), হেরিক রবার্ট (১৫৯১-১৬৭৪), হেউড থমাস- ডি. (১৬৪০-) হগ জেমস (১৭৭২-১৮৩৫), হুড থমাস (১৭৯৮-১৮৪৫), জনসন বেন (১৫৭৪-১৬৩৭), কিটস জন ১৭৯৬-১৮২১), ল্যাম্ব চার্লস (১৭৭৫-১৮৩৪), ল্যাম্ব মেরি (১৭৬৫-১৮৪৭), ল্যান্ডর ওয়াল্টার সেভেজ (১৭৭৫-১৮৬৪), লংফেলো হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ (১৮০৭-১৮৮২), লাভেলেস রিচার্ড (১৬১৮-১৬৫৮), ম্যাকলে লর্ড (১৮০০-১৮৫৯), মার্লো ক্রিস্টোফার (১৫৬৪-১৫৯৩), এম উইলিয়াম জুলিয়াস (১৭৩৪-১৭৮৮), মিলটন জন (১৬০৮-১৬৭৪), মিনস্ট্রেল বার্ন (?), মুর থমাস (১৭৭৯-১৮৫২), নায়ারনে লেডি (১৭৬৬-১৮৪৫), ন্যাশে থমাস (১৫৬৭-১৬০০), পিকক থমাস লাভ (১৭৮৫-১৮৬৬), পো এডগার অ্যালান (১৮০৯-১৮৪৯), প্রেড উইনথ্রপ ম্যাকওয়ার্থ (১৮০২-১৮৩৯), স্কট স্যার ওয়াল্টার (১৭৭১-১৮৩২), শেলি পার্সি বিশি (১৭৯২-১৮২২), শার্লি জেমস (১৫৯৪-১৬৬৬), সিডনি স্যার ফিলিপ (১৫৫৪-১৫৮৬), সারটিজ রবার্ট (১৭৭৯-১৮৩৪), উলফ চার্লস (১৭৯১-১৮২৩), ওয়ার্ডসওয়ার্থ উইলিয়াম (১৭৭০-১৮৫০), ওয়াটন স্যার হেনরি (১৫৬৮-১৬৩৯)। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এই বইয়ের প্রতিটি কবিতাই বর্তমান সময়ের কিশোর মনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করবে।
‘দ্য গ্রিন ফেয়ারি বুক’ (১৮৯২) : এটি ৩৪টি গল্পে সাজানো বই। বইয়ের প্রথম গল্পটি হলো ‘দ্য ব্লু বার্ড’; ‘ফেয়ারি গিফট্স’, ‘হার্ট অব আইস’, ‘দ্য স্টাফ বক্স’,  ‘দ্য গোল্ডেন বার্ড’, ‘দ্য লিটল সোলজার’, ‘দ্য ক্রিস্টাল কফিন’, ‘দ্য গোল্ডেন মারমেইড’, ‘দ্য ওয়ার অব দ্য ওলফ অ্যান্ড দ্য ফক্স’, ‘দ্য থ্রি মিউজিশিয়ান’ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানকালের শিশুকিশোর রূপকথার গল্পে অনভ্যস্ত। অভিভাবকগণও তাদের রূপকথার বই তুলে দিতে নারাজ। তবে অ্যান্ড্রু ল্যাং-এর এ বইটি হাতে নিলে যে কেউ পড়ে শেষ করে উঠতে চাইবে।
অ্যান্ড্রু ল্যাং-এর গ্রন্থালোচনা ক্ষুদ্র পরিসরে আলোচনার বিষয় নয়। তাঁর আরও কিছু বইয়ের তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো :
‘দ্য ট্রু স্টোরি বুক’ (১৮৯৩), ‘দ্য ইয়েলো ফেয়ারি বুক’ (১৮৯৪), ‘দ্য রেড ট্রু স্টোরি বুক’ (১৮৯৫), ‘মাই ওঅন ফেয়ারি বুক’ (১৮৯৫), ‘দ্য অ্যানিমেল স্টোরি বুক’ (১৮৯৬), ‘দ্য নার্সারি রাইম বুক’ (১৮৯৭), ‘দ্য পিংক ফেয়ারি বুক’ (১৮৯৭), ‘এ বুক অব ড্রিমস অ্যান্ড ঘোস্টস্’ (১৮৯৭), ‘দ্য অ্যারাবিয়ন নাইটস এন্টারটেইনমেন্ট’ (অনুবাদ গ্রন্থ : ১৮৯৮), ‘দ্য রেড বুক অব অ্যানিমেল স্টোরিজ’ (১৮৯৯), ‘দ্য গ্রে ফেয়ারি বুক’, ‘প্রিন্স চার্লস এডওয়ার্ড’ (১৯০০), ‘দ্য ভায়োলেট ফেয়ারি বুক’ (১৯০১), ‘দ্য ক্রিমসন ফেয়ারি বুক’, ‘দ্য স্টোরি অব দ্য গোল্ডেন ফ্লিস’ (১৯০৩), ‘দ্য ব্রাউন ফেয়ারি বুক’ (১৯০৪), ‘নিউ কালেক্টেড রাইমস্’ (১৯০৫), ‘দ্য অরেঞ্জ ফেয়ারি বুক’, ‘দ্য স্টোরি অব জোয়ান আর্ক’ (১৯০৬), ‘টেলস অব অ্যা ফেয়ারি কোর্ট’, ‘দ্য অলিভ ফেয়ারি বুক’ (১৯০৭), ‘দ্য বুক অব প্রিন্সেস অ্যান্ড প্রিন্সেজেস’ (১৯০৮), ‘দ্য রেড বুক অব হিরোজ’ (১৯০৯), ‘দ্য লিলাক ফেয়ারি বুক’ (১৯১০), ‘দ্য অল সর্টস অব স্টোরিজ বুক’ (১৯১১), ‘দ্য বুক অব সেইন্ট অ্যান্ড হিরোজ’ (১৯১২), ‘দ্য স্ট্র্যাঞ্জ স্টোরি বুক’ (১৯১৩), ‘উইথ মিসেস ল্যাং’।
অ্যান্ড্রু ল্যাং-এর সবগুলো গল্পগ্রন্থই ঝরঝরে প্রাঞ্জল ইংরেজি গদ্যে সাজানো। এজন্য ল্যাংকে সাধারণ গল্পের সেরা ইংরেজি রূপান্তরকারীও বলা হয়। তাঁর সংগ্রহমালা অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং বিস্তৃত পরিসরের। ইংল্যান্ড তথা ইংরেজি ভাষার অন্যতম প্রধান লোকসাহিত্যিক হিসেবে তাঁর অবস্থান অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। অ্যান্ড্রু ল্যাং মার্টন কলেজের ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এরপর ১৯০৬ সালে স্কটল্যান্ডের এফবিএ সদস্যও নির্বাচিত হন। সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নামে বক্তৃতামালাও চালু আছে। এই কৃতী লেখক ২০ জুলাই, ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। 

×